এত তাড়াহুড়োর কী ছিল? অভিনেত্রী তবস্সুমের আচমকা মৃত্যুতে অনুযোগ শত্রুঘ্ন সিন্হার। ফাইল চিত্র
লোক জানাজানির প্রয়োজন নেই। শেষ সময় চুপিসারে চলে যাবেন— এমনটাই বলে রেখেছিলেন ছেলেকে। কিন্তু তাই বলে, এত তাড়াহুড়োর কী ছিল? অভিনেত্রী তবস্সুমের আচমকা মৃত্যুতে প্রশ্ন তুললেন শত্রুঘ্ন সিন্হা।
অনেক কালের বন্ধুত্ব, কর্মজীবনের স্মৃতি। শত্রুঘ্নর মনে পড়ে যায় ‘ফুল খিলে হ্যাঁয় গুলশন গুলশন’- এর মতো অনুষ্ঠানের কথা। বিপুল জনপ্রিয় এই টক শো-র মূল আকর্ষণ ছিলেন তবস্সুম। প্রথম টেলিভিশন টক শো, যার সঞ্চালিকা ছিলেন তিনি। শত্রুঘ্ন নিয়মিত দেখতেন সেই শো। জানালেন, সাংবাদিকতা ছিল তবস্সুমের রক্তে। অভিনয়ের পাশাপাশি সেই পেশাতেও সেরা ছিলেন তিনি।
১৯৭২ সাল থেকে ১৯৯৩— লম্বা সময় ধরে দূরদর্শনে চলেছিল ‘ফুল খিলে হ্যাঁয় গুলশন গুলশন’। দিলীপ কুমার,অমিতাভ বচ্চন, তনুজা,শর্মিলা ঠাকুর,শাম্মি কপূর— সব বলিউড তারকা তাঁর শোতে এসেছিলেন। আসতেন মহম্মদ রফি, লতা মঙ্গেশকরের মতো সঙ্গীত-তারকারাও। তবে শত্রুঘ্নর দাবি, তিনিই একমাত্র অভিনেতা যিনি সেই শোতে তিন বার এসেছেন। চোখে ভাসে তবস্সুম।
শত্রুঘ্ন বললেন, ‘‘আমি ওর বড় ভক্ত ছিলাম। আমিই একমাত্র অভিনেতা যে তিন বার ‘ফুল খিলে হ্যাঁয় গুলশন গুলশন’-এ গিয়েছি। প্রতিটি সাক্ষাৎ মনে থাকার মতো।’’ শত্রুঘ্ন বলে চলেন, ‘‘অতিথি আপ্যায়নেও ওর তুলনা ছিল না। সবাইকে খুব আপন করে নিত। যে হেতু আগে থেকেই সবার সঙ্গে চেনেজানা, ব্যাপারটা সহজ হত। সব তারকাই ওকে ছোট থেকে চিনত। কথা বলতেও ভালবাসত ওর সঙ্গে।’’ শিশুশিল্পী হিসেবে নাম করে পরবর্তী কালে অনেকেই হারিয়ে যান। কিন্তু তবস্সুম ব্যাতিক্রম। পঞ্চাশের দশক থেকে তাবড় তাবড় শিল্পীর সঙ্গে পর্দা ভাগ করেছিলেন তিনি। বড় হয়ে সঞ্চালিকা হিসাবেও খ্যাতি অর্জন করেন। কে না এসেছেন তাঁর সাক্ষাৎকার আসরে!
গত ১৮ নভেম্বর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তবস্সুমের। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী, শেষকৃত্য সমাপ্ত করে তবেই সংবাদমাধ্যমকে খবর দেন পুত্র। তার পরই শোকে ভেঙে পড়ে বলিউড। শত্রুঘ্ন তাঁর প্রতি অশেষ সম্মান রেখে বললেন, “মনে হত, ওর শো-তে গিয়ে জীবনের সব কথা উজাড় করে দিই। যে স্বাচ্ছন্দ্য, ভাল লাগা ও দিতে পারত সেই সম্পর্ক এ যুগে কোনও তারকা এবং সাংবাদিকের মধ্যে বেঁচে নেই।”