শাহরুখের মেয়ে সুহানা এবং চাঙ্কি পাণ্ডের মেয়ে অনন্যা ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। মাঝে মাঝেই মুম্বইয়ে দু’জনকে দেখা যায় একসঙ্গে ঘুরে বেড়াতে। অবশ্য এই বন্ধুত্ব তাঁদের আগের প্রজন্মেও ছিল। শাহরুখ ও চাঙ্কি দু’জনেই অনেকদিনের ভাল বন্ধু।
এক বার শাহরুখকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে বার তাঁর জামিন পাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন অন্তরঙ্গ বন্ধু চাঙ্কি-ই।
১৯৯২ সালে কেরিয়ারের শুরুর দিকে শাহরুখ ‘মায়া মেমসাব’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। কেতন মেহতার পরিচালনায় এই ছবিতে শাহরুখের বিপরীতে ছিলেন দীপা শাহি।
গুস্তাভ ফ্ল্যবার-এর লেখা ‘মাদাম বোভারি’ অনুসরণে তৈরি এই ছবিতে শাহরুখ-দীপার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ একটি শয্যাদৃশ্য ছিল। সেই দৃশ্য নিয়ে সে সময় যথেষ্ট বিতর্ক ও আলোচনা হয়েছিল। পরে সেই দৃশ্যে সেন্সর বোর্ডের কাঁচিও পড়েছিল।
একটি ফিল্ম পত্রিকায় এই মর্মে লেখা হয় যে, বিতর্কিত সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার আগে কেতনের মনে হয়েছিল দু’জনের মধ্যে আড়ষ্টতা কেটে যাওয়া প্রয়োজন। তাই তিনি একটি হোটেলে একই ঘরে শাহরুখ-দীপার রাত্রিবাসের ব্যবস্থা করেন। পর দিন নাকি শুধু পরিচালক কেতন ও তাঁর ইউনিটের প্রধান ক্যামেরাম্যানের উপস্থিতিতে শুটিং করা হয়।
পত্রিকায় এই খবর পড়ে শাহরুখ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। তিনি ঠিক করেন, ওই পত্রিকার কোনও প্রতিনিধিকে সামনে পেলে তিনি ছেড়ে দেবেন না। এক দিন সেই সুযোগ এল তাঁর কাছে।
একটি ফিল্মি পার্টিতে ওই পত্রিকার এক সাংবাদিককে সামনে পেলেন শাহরুখ। সবার সামনে প্রকাশ্যেই তাঁর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন কিং খান। যদিও ওই খবর কোন সাংবাদিকের সূত্রে পাওয়া গিয়েছে, তা প্রকাশ করেনি পত্রিকাটি। কিন্তু কোনওভাবে শাহরুখের ধারণা হয়ে গিয়েছিল, পার্টিতে থাকা ওই সাংবাদিকেরই কাজ সেটা।
অভিযোগ, শাহরুখ এর পর বেশ কয়েক বার ফোনে হুমকি দেন সাংবাদিককে। সেখানেই শেষ নয়। এক বার নাকি ওই সাংবাদিকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা মায়ের সামনেই তাঁকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন শাহরুখ।
ঘটনার জেরে শাহরুখের নামে পুলিশে অভিযোগ জানান ওই সাংবাদিক। থানায় ডেকে শাহরুখের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এখানেই কিন্তু বিষয়টি থামল না।
অভিযোগ, শাহরুখ এর পরেও ওই সাংবাদিককে ফোনে কটূক্তি করে যাচ্ছিলেন। আতঙ্কিত সাংবাদিক পুলিশের কাছে আবার অভিযোগ জানান। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে বান্দ্রা থানার পুলিশ এ বার গ্রেফতার করে শাহরুখকে।
কিন্তু তাঁর সামাজিক পরিচয়ের কথা ভেবে শাহরুখকে লক আপে রাখা হয়নি। এমনকি, থানায় অনেক অফিসার তাঁর অটোগ্রাফও নেন। শেষ অবধি গভীর রাতে থানায় যান শাহরুখের বন্ধু চাঙ্কি পাণ্ডে। তিনি গিয়ে সুপারস্টারের জামিনের ব্যবস্থা করেন।
দু’বছর পরে শাহরুখ জানতে পারেন ওই সাংবাদিক আদৌ ওই ভুয়ো খবর প্রকাশ করেননি। অনুতপ্ত শাহরুখ এর পর তাঁর কাছে গিয়ে ক্ষমাও চান। পরে পত্রিকাটির জন্য ফোটোশুটও করেছিলেন কিং খান।