২০১৬ সালে ‘ডিয়ার জিন্দেগি’ ছবির সেটের একটি ঘটনার কথা বলেছিলেন আলিয়া ভট্ট। একটি দৃশ্যের মহড়া চলছিল। হঠাৎ গুড়গুড় শব্দ শুনে সকলে আশপাশে তাকাতে শুরু করেন। খানিক পরে কলাকুশলীরা বুঝতে পারেন, শাহরুখের পেটের ভিতর থেকে আওয়াজ আসছে। কারণ তিনি সারা দিন কিছু না খেয়ে কাজ করে চলেছেন।
মীর তাজ মহম্মদ খান এবং লতিফ ফতিমা খান (বাঁ দিকে); শাহরুখ খান (ডান দিকে)
মীর তাজ মহম্মদ খান এবং লতিফ ফতিমা খান। দিল্লিতে রেস্তরাঁ ছিল তাঁদের। দু’জনেই নাকি দুর্দান্ত রান্না করতেন। তাজ মহম্মদের দক্ষতা ছিল পাঠানি-পেশওয়ানি রান্নায়। ফতিমার হাতের হায়দরাবাদি বিরিয়ানির অনুরাগীর সংখ্যা নেহাতই কম ছিল না। নিজের হাতে রান্না করে ছেলেকে খাইয়ে দিতেন ফতিমা। ছেলে যতই বলিউডের ‘কিং খান’ ওরফে শাহরুখ খান হোন না কেন, তাঁর ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত মা-ই তাঁকে খাইয়ে দিতেন।
শাহরুখ যখন মাত্র ১৫ বছরের কিশোর, তাঁর বাবা প্রয়াত হন। তাঁর ২৬ বছর বয়সে ছেলেকে অনাথ করে চলে যান ফতিমা।
বছর কয়েক আগের একটি সাক্ষাৎকারে শাহরুখ বলেছিলেন, ‘‘মা চলে যাওয়ার পরে সব কিছু বদলে যায়। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ি আমি। মা নিজে হাতে খাইয়ে দিতেন আমায়। সেটাই অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত এই অভ্যাস তৈরি হয়েছিল। তার পর থেকে আর খেতে ভাল লাগে না আমার।’’ শাহরুখ জানালেন, তিনি বাকি সকলের রান্না খারাপ বলছেন না। কিন্তু তাঁর বাবা-মা চলে যাওয়ার পর খাবারের প্রতি অরুচি চলে আসে তাঁর।
তাঁকে এখন যা খেতে দেওয়া হয়, খেয়ে নেন। আলাদা করে কোনও খাবার দেখে জিভে জল আসে না আর।
২০১৬ সালে ‘ডিয়ার জিন্দেগি’ ছবির সেটের একটি ঘটনার কথা বলেছিলেন আলিয়া ভট্ট। একটি দৃশ্যের মহড়া চলছিল। হঠাৎ গুড়গুড় শব্দ শুনে সকলে আশপাশে তাকাতে শুরু করেন। সকলেরই প্রশ্ন, ‘কোথা থেকে আসছে আওয়াজটা?’ খানিক পরে কলাকুশলীরা বুঝতে পারেন, শাহরুখের পেটের ভিতর থেকে আওয়াজ আসছে। কারণ তিনি সারা দিন না খেয়ে কাজ করে চলেছেন। আলিয়া সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বিস্কুট খেতে দেন।
আলিয়ার কথায়, ‘‘শাহরুখের মতো মানুষ দেখিনি। এতই ভাল তিনি! কিন্তু একটি বিষয়েই আমার খারাপ লাগা আছে। তিনি সারা দিন না খেয়ে কাজ করেন। কেবল কফি খেয়ে পেট ভরান। আমিও কফি খাই। কিন্তু সঙ্গে খাবারও খাই। কিন্তু শাহরুখ সেটি করেন না। বারবার বলি, কফি ছাড়াও কিছু খাবার খাওয়া উচিত তাঁর সুস্বাস্থ্যের জন্য।’’