‘গোলাপ ও বিদ্রোহ’ গানের ভিডিয়োর একটি দৃশ্য।
সমাজের বেশির ভাগের কাছে এই প্রেম নিষিদ্ধ। তবু সেই চোখ রাঙানির সামনে দাঁড়িয়ে নিঃসঙ্কোচ প্রেম ২ মেয়ের। ঠোঁটে ঠোঁট। আর হাতে একটি ব্যানার। লেখা ‘মেয়েতে মেয়েতে প্রেম হয়েছে, পিতৃতন্ত্র উল্টে গেছে’। এ ভাবেই তৈরি হল ‘গোলাপ ও বিদ্রোহ’ গানের ভিডিয়ো।
এই গানের গীতিকার মণিদীপা সিংহর সঙ্গে কথা বলল আনন্দবাজার ডিজিটাল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। ‘প্রান্তিক যৌনতা’ ও বিদ্রোহের দীর্ঘ সম্পর্ক নিয়েই এই ভিডিয়োটি বানানো হয়েছে বলে দাবি মণিদীপার। সঙ্গীতকার মণিদীপার কথায়, ‘‘আমি নিজে এক জন প্রান্তিক যৌনতার মানুষ। একই সঙ্গে বামপন্থীও। আমার কাছে প্রেম ও বিদ্রোহ একে অপরের পরিপূরক। সমপ্রেম নিয়ে কোনও রাখঢাক রাখতে চাইনি। সপাটে প্রান্তিক যৌনতার মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলেছি।’’
১৯৪৫ সালে ফরাসি গায়িকা ও গীতিকার এডিথ পিয়াফ একটি গান বানিয়েছিলেন, ‘লা ভি অঁ হোজ’। যে গানের ভাবার্থ করলে দাঁড়ায়, ‘খুশির আমেজ ভরা জীবন’। সেই গান মাথায় রেখেই তৈরি ‘গোলাপ ও বিদ্রোহ’। মণিদীপার দাবি, নতুন গানটির ছত্রে ছত্রে রয়েছে আরও একটি গান। তার নাম ‘ব্রেড অ্যান্ড রোজেজ’। যে গানের বক্তব্য, শুধু গোলাপ বা শুধু রুটি না, চাই দুই-ই। প্রেম ও যৌনতার অধিকার একসঙ্গেই জরুরি। ভিডিয়োর পরতে পরতে রয়েছে রামধনুর রং। যা সব ধরনের প্রেম ও যৌনতাকে মু্ক্তি দেয়। এমনটাই বলছেন নির্মাতা। তবে শুধু দুই বিদেশি গানই নয়, এই গানের কথা লেখার সময় কবীর সুমনের ‘তোমাকে চাই’-এর প্রভাবও কাজ করেছে তাঁর উপর। সেটাও বললেন মণিদীপা।
মণিদীপা জানালেন, তিনি একা নন, এই গান ও ভিডিয়োর পিছনে আরও কয়েক জনের সমান অবদান রয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই একজোটে এই গানের রূপায়ন করেছেন। প্রণয় চক্রবর্তী ও সায়ন্তন চট্টোপাধ্যায় সুর মিশিয়েছেন। গেয়েছেন তৈশী নন্দী। উকুলেলেতে সায়ন সিংহ, গিটারে হীতেন মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন কবিপ্রিয়া দত্ত মজুমদার, সাত্যকি মজুমদার। গানের ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে প্রান্তিক যৌনতার মানুষকেই। কোয়েল ঘোষ, সাম্য দাস, রেশমি সেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।