সুন্দর ফুটফুটে এক রাজকুমারী। সোনালী রঙের ঢেউ খেলানো এক মাথা চুল। নীল চোখের গভীরে লুকিয়ে থাকা অনেক স্বপ্ন, আশা, ব্যথা-বেদনার দোলাচল। তার সত্ মা সারাক্ষণই তাকে দিয়ে কাজ করায়। আর নিজে সেজেগুজে তাকিয়ে থাকে আয়নার দিকে। তার রূপের ছটাও বড় কম নয়। কিন্তু বিশ্বের সেরা সুন্দরী কে জানতে চাইলেই জাদু-আয়নায় ফুটে ওঠে রাজকুমারী তুষারমালার মুখ। ‘মিরর মিরর অন দ্য ওয়াল, হু ইস দ্য প্রিটি অফ অল!’— চির পরিচিত এ প্রশ্ন ‘স্নো হোইট অ্যন্ড সেভেন ডোয়ার্ফস’-এ হিংসুটে রানির বদলে এখন করি আমরা। আর আমাদের জাদু-আয়না ফেসবুক।
রাজা, রানি, পরি, আয়না— এ তো আমাদের ছেলেবেলার ধুলোখেলার সঙ্গী! আর চলতি হাওয়ায় জাদু আয়নার জায়গা দখল করেছে ফেসবুক! মনের ভাব প্রকাশের এ এক খোলা জানলা। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের জাসমিন ফারডৌলির সমীক্ষানুযায়ী বর্তমানে যুবতীরা তাদের সৌন্দর্য্যের চাবিকাঠির খোঁজ পায় ফেসবুক বা ফ্যাশন ম্যাগাজিন দেখে। কিন্তু ফেসবুকে তাদের বন্ধুদের বা অন্যান্য অপরিচিত কোনও ব্যক্তির রূপ-রং মানসিক ভাবে প্রবল ক্ষতি করছে জেন ওয়াইয়ের। কোনও কোনও সময় তারা নিজের ছবির সঙ্গেই চুলচেরা বিচার করে। আগে কেমন ছিলাম, এখন কেমন হলাম! বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন ‘সেল্ফ অবজেক্টিফিকেশন’। গবেষকদের মতে ১৭-২৫ বছর বয়সী মেয়েরা চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত দু’ ঘণ্টা ফেসবুক নিয়ে মেতে থাকে। আর নিজেই নিজের বিচারক হওয়ার বিষয়টিও বেশ ক্ষতিকারক। তাই গবেষকদের পরামর্শ, ফেসবুকে নিজের ছবি কম পোস্ট করুন। আপনজনের চোখের তারায় আয়না ধরে খুঁজে নিন ‘হু ইস দ্য প্রিটি’-র উত্তর।