(বাঁ দিকে) তাপস রায়। সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে) । ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় ৭৭ দিনের লড়াই। পাখির চোখ এখন ৪ জুন। চব্বিশ ঘণ্টাও বাকি নেই। নামের পাশে বিধায়ক শব্দবন্ধনী বসে কি না সেই নিয়ে কি চিন্তিত, না কি উত্তেজিত কিংবা উৎকণ্ঠায় অধীর! ফলঘোষণার চব্বিশ ঘণ্টা আগে বরাহনগরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কী ভাবে কাটাচ্ছেন দিনটা, সায়ন্তিকা জানালেন আনন্দবাজার অনলাইনকে। অভিনেত্রী থেকে রাজনীতিতে অভিষেকটা হয়েছিল বছর তিনেক আগেই। বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রার্থী হন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও প্রথম বার ব্যর্থতা পেতে হয়েছে তাঁকে। তবে দমে যাননি। মাটি আঁকড়ে পড়েছিলেন বাঁকুড়াতেই। লোকসভা ভোটে টিকিট না পেয়ে অভিমানের সুর শোনা গিয়েছিল অভিনেত্রীর কণ্ঠে। সেই ক্ষোভ প্রশমিত করতে তাঁকে বরাহনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তার পর প্রায় নাওয়া-খাওয়া ভুলে পড়ে রয়েছেন বরাহনগরে।
গত তিন মাস ধরে বাড়িছাড়া সায়ন্তিকা। বরাহনগরেই বাড়িভাড়া করে রয়েছেন। রাজ্যে যখন ৪২ ডিগ্রি গরম, তাপপ্রবাহ চলছে, সেই সময় কখনও জিপ চালিয়ে, কখনও পায়ে হেঁটে মাইক্রোফোন হাতে বরাহনগরে পাড়া থেকে অলিগলি ঘুরেছেন তিনি। তৃণমূলের হয়ে দাঁড়ালেও লড়াইটা সোজা নয়। ২০১১ থেকে বরাহনগরে টানা তিন বারের বিধায়ক ছিলেন তৃণমূলের তাপস রায়। এলাকার সর্বস্তরের নেতা, কর্মী থেকে প্রভাবশালী, সকলেরই ‘হাঁড়ির খবর’ বা ‘দুর্বলতা’ কার্যত জানেন এখন পদ্মশিবিরের তাপস। ফলে, বরাহনগর-যুদ্ধের ‘নকশা’ তিনি সজল ঘোষের হাতে তুলে দিয়েছেন বলেও ধারণা রাজনৈতিক শিবিরের। সেই জায়গায় লড়াই করা। তাই সায়ন্তিকা বললেন, ‘‘আমি কোনও প্রতিপক্ষকে ছোট করে দেখছি না। আসলে বরাহনগর তো শক্ত ঘাঁটি তৃণমূল কংগ্রেসের। অতীতে আমাদের দলের এখানে রেকর্ড ছিল, সেটার থেকে ভাল করতে হবে।’’
১ তারিখ ছিল বরাহনগরে উপনির্বাচন। ভোট মিটতে না মিটতেই ফলঘোষণা। মাঝে দু’টি দিনের ব্যবধান। তাই কোনও রকমের বিশ্রাম নয়। সায়ন্তিকা জানালেন, কাজের মধ্যেই আছেন। আগামী কাল প্রায় তিন মাস বাদে বাড়ি ফিরবেন। জিতে ফিরবেন কি? অভিনেত্রী বলেন, ‘‘সব জগন্নাথের ভরসায়। তবে নেচিবাচক কোনও কথা আমি শুনতে রাজি নই, শুনব না। আমি মনে করি রাজনীতিতে আমি শিক্ষানবিশ। তবে কাজটা মনপ্রাণ দিয়ে করতে চাই। আর এটাই করতে চাই। তাই কোনও ক্লান্তি বিশেষ অনুভব করছি না। তবে এতটুকু জানি, কাল ফলঘোষণার পর ঘুমোব।’’
এত দিন ধরে রোদে পুড়েছেন, রাস্তায় রাস্তায় ঘোরা ‘ডিটক্স’ করবেন কী ভাবে? সায়ন্তিকার কথায়, ‘‘না, ডিটক্স করতেই চাই না। কারণ, আমি এই কাজটাই করতে চাই।’’