অভিনেতা ও প্রাক্তন রেডিয়ো জকি সায়ন ঘোষ
শো-টি বিতর্কিত ছিল বটে। নিজের ফোনে অন্যান্য রেডিয়ো স্টেশন টিউন করে স্টুডিয়োতে মাইকের সামনে তুলে ধরতেন অভিনেতা ও প্রাক্তন রেডিয়ো জকি সায়ন ঘোষ ও তাঁর বন্ধু সৌরভ। অন্যান্য রেডিয়ো স্টেশনে কী গান বাজানো হচ্ছে, কী কথাবার্তা হচ্ছে, সব শোনানো হত সেখানে। এ ছাড়া কখনও কখনও অন্য এফএম-এর আরজে-দের ফোন করে জ্বালানোও হত। কিন্তু সেই শো-টি নিয়ে এত কথা শুরু হয় যে, এক দিনের মাথায় সেটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। সেটি মেনে নিতে পারেননি প্রাক্তন রেডিও জকি সায়ন ঘোষ। ম্যানেজারকে জানিয়েছিলেন, ‘‘আজ লাস্ট শো-টা করতে দাও। কাল থেকে এটা আর করব না।’’ ম্যানেজার জানিয়েছিলেন, ‘‘এর অন্যথা হলে আমাকে বসের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’’ সায়নের উত্তর, ‘‘আর আমাকে হাজারো কলকাতাবাসীর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। আমি তাঁদের কথা দিয়েছি।’’ রাজি করাতে পারলেন না সায়ন। কিন্তু ‘টুম্পা’ খ্যাত সায়ন যে দমে যাওয়ার পাত্র নন, তা তাঁর ঘনিষ্ঠরা ভালই জানেন। সোজা স্টুডিয়োয় গিয়ে অন এয়ার হলেন সায়ন ও সায়নের বন্ধু সৌরভ। গোটা কলকাতাকে তাঁরা বসের নম্বর দিয়ে জানালেন, ‘‘আমাদের এই শো-টা বন্ধ করে দিতে চাইছেন। আপনারা সকলে এই নম্বরে ফোন করে বসকে জ্বালাতে পারেন।’’ ব্যস! এক রাতে বসের ফোন হ্যাং করে গেল। ফোন এবং এসএমএস-এ বিধ্বস্ত বসের কাছ থেকে পর দিন জোর ধমক খেলেন ‘সেহাদ কে লিয়ে হানিকারক’ দুই কর্মী। তবে না, চাকরি গেল না তাঁদের। প্রথম কয়েক দিন ছড়ির গোড়ায় রাখলেন বটে বস, তার পর আবার আদরে বাঁদর করার প্রক্রিয়া শুরু।
আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে কথা বললেন অভিনেতা সায়ন ঘোষ। আরজে জীবনের মজাদার কিছু ঘটনার কথা তুলে ধরলেন তিনি। এ তো গেল একটি মাত্র ঘটনা। সায়নের দুষ্টুমির আরও কিছু নিদর্শন রয়েছে। সেই রকম কিছু ঘটনার আঁচও মিলল।
অভিনেতা ও প্রাক্তন রেডিয়ো জকি সায়ন ঘোষ
সায়ন জানালেন, ‘‘হ্যাপি টু ডিস্টার্ব শো করার সময়ে এডিট করে কিছু অংশ বাদ দেওয়া হত। আমার বুলি শোনার পর ফোনের ও-পার থেকে গালিগালাজের স্রোত বইত বেশির ভাগ সময়ে। সেগুলোকে চিহ্নিত করে আলাদা রেখে বাকিটা বাজানো হত। এক বার আমি চিহ্নিতকরণের কাজটায় গোলমাল করে ফেলেছিলাম। অডিয়োটা চালিয়ে দিয়ে আমি কফি খেতে চলে গেছি। হঠাৎ মাইকে শুনতে পাই, সমস্ত গালিগালাজগুলো শোনা যাচ্ছে। গোটা কলকাতা শুনছে সব। তখন আর ছুটে গিয়ে অডিয়ো বন্ধ করেও কোনও লাভ হবে না। বুঝলাম, যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: আমি ক্লাস ১০ পাশ করিনি, অশিক্ষিত: স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
এ ছাড়া আরও একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করলেন সায়ন। যদিও সে রকম ঘটনা তাঁর সঙ্গে হয়নি। কিন্তু বেশির ভাগ রেডিও জকিই এই ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। বহু বছর ধরে একটি নির্দিষ্ট রেডিয়োর হয়ে কাজ করার সময়ে আরজে-দের একটা মুদ্রাদোষ তৈরি হয়ে যায়। ‘‘হ্যালো কলকাতা, আমি অমুক রেডিয়ো থেকে আরজে তমুক বলছি।’’ সেই আরজে যদি বহু বছর পর চাকরি বদলে অন্য কোনও এফএম স্টেশনে কাজ নেন, তখন শুরুর দিকে বার বার এই ‘অমুক’-টি নিয়ে গোলমাল বাধে। নতুন রেডিয়োর নাম নিতে গিয়ে নিয়ে ফেলেন পুরনো রেডিয়োর নাম। আর সেটা শহরবাসীর কানে গিয়ে পৌঁছয়।
আরও পড়ুন: বরুণ ধবনের বিয়ের পথে বাধা! পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে কি?