শো মিস করলে দলে রিপ্লেসড হয়ে যাব

‘নান্দীকার’ থেকে শুরু। এখন ছোট-বড় পর্দার পরিচিত মুখ সপ্তর্ষি মৌলিক। আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি তিনিরুদ্রপ্রসাদ, সোহিনী, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত কিংবা ‘নান্দীকার’ সম্পর্কে প্রথমে কোনও ধারণাই ছিল না তাঁর। ‘‘সেই জন্যই হয়তো আমি খুব সহজে ওঁদের সঙ্গে মিশতে পেরেছিলাম,’’ বললেন অভিনেতা।

Advertisement

সায়নী ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৫৯
Share:

সপ্তর্ষি। ছবি: নিরুপম দত্ত

বাংলা ধারাবাহিকের দর্শক তাঁকে চেনেন ‘ডিঙ্কা’ হিসেবে। ‘শ্রীময়ী’ সিরিয়ালে অভিনয়ের পাশাপাশি সপ্তর্ষি মৌলিক ইতিমধ্যেই ব্যাগে ভরেছেন একাধিক বাংলা ছবি। সামনে মুক্তি পাবে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়-শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সাঁঝবাতি’। তার পরে রয়েছে রাজ চক্রবর্তীর ‘ধর্মযুদ্ধ’। ‘নান্দীকার’-এর অন্যতম প্রধান মুখ কী করে ছোট ও বড় পর্দায় এলেন? ‘‘উত্তরপাড়ায় আমার বাড়ি। অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলাম। যে সময়ে বন্ধুরা চাকরিতে ঢুকছে, সেই সময়েও আমি লক্ষ্য স্থির করতে পারিনি। একদিন ‘নান্দীকার’-এর ওয়র্কশপের বিজ্ঞাপন দেখি...’’ বললেন সপ্তর্ষি। তখন তাঁর ওজন মোটে ৪৫ কেজি। ধীরে ধীরে গ্রুম করেছেন নিজেকে। ‘‘ওয়র্কশপে গিয়ে প্রথম দিন স্যর (রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত) আমার দিকে মিনিট দুয়েক তাকিয়ে ছিলেন। মনে হয়েছিল, মানুষটা যেন আমার ভিতরটা পুরো দেখতে পাচ্ছেন,’’ ‘নান্দীকার’-এর প্রথম দিনটা মনে করলেন সপ্তর্ষি।

Advertisement

রুদ্রপ্রসাদ, সোহিনী, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত কিংবা ‘নান্দীকার’ সম্পর্কে প্রথমে কোনও ধারণাই ছিল না তাঁর। ‘‘সেই জন্যই হয়তো আমি খুব সহজে ওঁদের সঙ্গে মিশতে পেরেছিলাম,’’ বললেন অভিনেতা। একই কারণে সোহিনী সেনগুপ্তকে ‘ভালবাসি’ বলতেও দ্বিধা করেননি। ছ’বছরের বিবাহিত জীবন সোহিনী-সপ্তর্ষির। ‘‘সোহিনীর সঙ্গে প্রথম দেখা হতে মনে হয়েছিল যেন হারিয়ে যাওয়া এক বন্ধুকে পেলাম। ও যে বয়সে আমার চেয়ে অনেকটা বড়, কিংবা আমার তুলনায় অনেক বেশি বিদেশি সাহিত্য পড়েছে, এমন কখনও মনে হয়নি। মিনার্ভা থিয়েটারে নাটক দেখতে গিয়ে আলাপ করেছিলাম। সে দিন গাড়িতে আমাকে ড্রপ করে দিয়েছিল সোহিনী। তার পর থেকে প্রায়ই শো শেষে ফেরার সময়ে সল্টলেকে নেমে যেতাম, মামাবাড়ি যাব বলে। আসলে ওখানে সোহিনীর বাড়ি। স্যর বুদ্ধিমান লোক, হয়তো বুঝতে পারতেন,’’ হাসি সপ্তর্ষির মুখে। রুদ্রপ্রসাদের কাছে বিয়ের কথা বলাটা কি অতটাই সহজ ছিল? ‘‘একদিন সাহস করে বলেই ফেললাম, আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই। স্যর শুনে পাশের ঘরে গিয়ে হো-হো করে হেসেছিলেন!’’ নিজের সদ্য শুরু হওয়া জার্নির সিংহভাগ কৃতিত্ব সোহিনীকেই দিলেন অভিনেতা, ‘‘এখনও কিছু শেখানোর সময়ে বকাবকি করলে মাথা পেতে নিই।’’

‘পাঞ্চজন্য’ নাটকে তাঁর অভিনয় দেখার পর রাজ চক্রবর্তী প্রথম সুযোগ দিয়েছিলেন সপ্তর্ষিকে। সেই সময়ে আরও দুটো নাটক লিখে ফেলেছিলেন সপ্তর্ষি। যার একটা (‘মানুষ’) এখনও চলছে শহরের বিভিন্ন মঞ্চে। নাটকের নামে অশ্লীলতা বিক্রি করার পরিপন্থী সপ্তর্ষি। থিয়েটার মানে তাঁর কাছে লাল চা আর মুড়ি খাওয়া নয়। অন্য মাধ্যমে উপার্জন করে থিয়েটারে কনট্রিবিউট করায় বিশ্বাসী তিনি।

Advertisement

শুটিংয়ের ফাঁকে দলের জন্য কতটা সময় দিতে পারেন? ‘‘একটা নাট্যদলে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও মাসে ২০দিন সিরিয়ালের শুটিং করি, সেটা দলের সাপোর্ট ছাড়া অসম্ভব। তবে এটাও ঠিক, যদি একটা শো মিস করি, জানি আমি পরের দিনই রিপ্লেসড হয়ে যাব।’’

‘শ্রীময়ী’তে অভিনয়ের পর থেকে রাস্তাঘাটে মানুষ একটু বেশি চিনতে পারছেন তাঁকে। ব্যাপারটা উপভোগই করছেন। ‘‘সবে তো শুরু করেছি। অনেক ধরনের চরিত্র করতে চাই। মঞ্চ থেকে আসার ফলে ক্যামেরার সামনে কতটা এক্সপ্রেসিভ হতে হবে, আগে বুঝতাম না। তবে অভিনয়টা ভাল করে জানলে ফর্মটা ম্যাটার করে না,’’ মত সপ্তর্ষির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement