The Diary of West Bengal

সারা দেশে মুক্তি পেলেও বাংলায় কেন নেই সনোজকুমারের ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’?

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবেশকের দাবি, “প্রযোজক বা পরিচালক চাননি কলকাতায় ছবিটি মুক্তি পাক। তাই তাঁরা কলকাতার কোনও পরিবেশকের সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত করেননি।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৪ ১৫:৩৮
Share:

পরিচালক সনোজকুমার মিশ্র। গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ।

বিতর্ক তৈরি করে বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা ছবির দুনিয়ায় নতুন নয়। বাঘা পরিচালক, প্রযোজক থেকে স্বল্প পরিচিত— অনেকেই তাঁদের ছবিমুক্তির সময় এই পথে হাঁটেন। চর্চা, পরিচালক সনোজকুমার মিশ্র, প্রযোজক জিতেন্দ্র নারায়ণ সিংহ ত্যাগীও কি সেই পথেই হাঁটলেন? তাঁদের সদ্যমুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ ছবিটিকে বাণিজ্যসফল বানাতে? কেন এই চর্চা, জানতে গেলে একটু পিছিয়ে যেতে হবে।

Advertisement

খবর, ১৪ অগস্ট নাকি কলকাতায় এসেছিলেন ছবির পরিচালক। আদালতে ছবি সংক্রান্ত আইনি ব্যাপার নিষ্পত্তির কারণে। আচমকাই তার এক দিন পর থেকে গুঞ্জন, তিনি নাকি কলকাতায় এসে নিখোঁজ! সেই সময় কলকাতা উত্তপ্ত আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে। এমন আবহে এই শহর থেকে এক চলচ্চিত্র নির্মাতার নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছিল। পরিচালকের হয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন নতুন বিধায়ক-অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। এর এক সপ্তাহের মধ্যে ফের খবরের শিরোনামে সনোজ। খবরে প্রকাশ, তিনি বারাণসীতে বিরাজমান! সেই পর্ব মিটিয়ে শুক্রবার সর্বভারতীয় স্তরে মুক্তি পেল ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’। অথচ পশ্চিমবঙ্গকে কেন্দ্র করে ছবি সেখানকার প্রেক্ষাগৃহেই নেই! কেন?

এ প্রসঙ্গে প্রযোজক রানা সরকার সমাজমাধ্যমে বক্তব্য রেখেছেন। পাশাপাশি কথা বলেছেন আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গেও। তাঁর মতে, সনোজের এই ছবিটি পুরোপুরি রাজনৈতিক। এর আগে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বাংলাকে কালিমালিপ্ত করার জন্যই নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিরোধী পক্ষ সনোজকে দিয়ে ছবিটি বানিয়েছে। ছবিটি যাতে রাজ্যে মুক্তি না পায় তার জন্য বাংলার শাসকদল কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। যদিও আদালত এই বিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। ছবিমুক্তিতেও কোনও বাধা দেয়নি।

Advertisement

তা হলে আইনি ছাড়পত্র পাওয়ার পরেও কেন কলকাতা-সহ বাংলার কোথাও নেই ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’?

এই প্রশ্ন আনন্দবাজার অনলাইন রেখেছিল শহরের প্রথম সারির এক পরিবেশকের কাছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সেই পরিবেশকের দাবি, “প্রযোজক বা পরিচালক চাননি কলকাতায় ছবিটি মুক্তি পাক। কারণ, ছবিটি বড় বাজেটের নয়। বড় অভিনেতাও নেই। তাঁরা কলকাতার কোনও পরিবেশকের সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত করেননি।” তাঁর মতে, সনোজ বা জিতেন্দ্রের লক্ষ্য ছিল কিছু বিতর্ক তৈরি করে ছবিটির প্রচার করা। সেই জন্যই পরিচালকের নিখোঁজ হয়ে যাওয়া নিয়ে হঠাৎ খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কেন বাংলায় মুক্তি পেল না ছবি, এই কৌতূহল থেকে যেখানে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে সেখানকার দর্শক প্রেক্ষাগৃহে ভিড় জমান। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পরিবেশক এ-ও জানিয়েছেন, খোঁজ নিলেই জানা যাবে, ছবিটি কিন্তু খুব বড় করে দেশের সর্বত্রও মুক্তি পায়নি।

নেপথ্যে আরও কোনও কারণ আছে কি না জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল আরও এক সর্বভারতীয় স্তরের পরিবেশক মনোজের সঙ্গে। তিনিও একই কথা বলেন। সঙ্গে এ-ও জুড়েছেন, “এই মুহূর্ত কলকাতা উত্তপ্ত আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে। ছবিতে বাংলার শাসকদলের দুর্নীতি দেখানো হয়েছে। সম্ভবত পরিচালক-প্রযোজক নতুন করে যাতে সমস্যায় জড়িয়ে না পড়েন, তার জন্য বাংলা বাদে অন্যত্র ছবির মুক্তি দিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement