নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা আশঙ্কা থাকলেও ছবির স্বার্থে যে ভাবে সঞ্জয় তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন, তা মুগ্ধ করেছিল পরিচালককে। —ফাইল চিত্র
পরিচালক অপূর্ব লাখিয়ার সঙ্গে অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের সম্পর্কের সমীকরণ নিছক আর পাঁচ জন অভিনেতা-পরিচালকের মতো নয়। সঞ্জয় যে তাঁর জীবনে বিশেষ এক জন মানুষ, তা বোঝাতে একটি ঘটনার স্মৃতিচারণ করেছেন অপূর্ব।
অপূর্ব পরিচালিত ‘শুটআউট অ্যাট লোখন্ডওয়ালা’ (২০০৭) এবং ‘জঞ্জির’( ২০১৩) ছবিতে সঞ্জয় অভিনয় করেছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে অপূর্ব জানান, ‘জঞ্জির’ ছবির কাজ যখন শেষ পর্যায়ে, তখনই ১৯৯৩ সালের মুম্বইয়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশের কাছে সঞ্জয়ের আত্মসমর্পণ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। অপূর্ব বলেন, “এই পরিস্থিতিতে সঞ্জয় স্যর আমাকে ডেকে পাঠিয়ে বলেছিলেন ছবির কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করে নিতে। তখন স্যরকে বেশির ভাগ সময় দুবাইতে থাকতে হত। যখন মান্যতা ওঁর জীবনে এলেন, তখন আমরা ‘জঞ্জির’ শেষ করেছি।”
সঞ্জয়ের দায়িত্ববোধে মুগ্ধ অপূর্ব বলেন, “সঞ্জু স্যর দুর্দান্ত! পরের দিন জেলে যাওয়ার কথা তাঁর, এ দিকে জঞ্জিরের ডাবিং শেষ করতে পারেননি তিনি। পরের দিন দেড়টায় পুলিশ নিয়ে যাবে তাঁকে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি ফোনে আমায় ডাকলেন। বললেন, ‘ভাই, আমি খুবই দুঃখিত। তোমার ছবির ডাবিং শেষ করতে পারিনি। আজ রাতে তুমি আমার বাড়িতে এসো, ডাবিং শেষ করে নাও।’”
নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা আশঙ্কা থাকলেও ছবির স্বার্থে যে ভাবে সঞ্জয় তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন, তা মুগ্ধ করেছিল পরিচালককে। অপূর্ব বলেন, “আমি ওঁর বাড়িতে গিয়েছিলাম। জিনিসপত্র সরিয়ে পান-ভোজনের এলাকাটা উনি ঠিকঠাক করে নিলেন। তার পর ফোনেই গোটা সিনেমায় তাঁর অংশটুকুর ডাবিং করে ফেললেন।” পরের দিন দুপুর ১টায় সঞ্জয়কে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। তার আগে অভিনেতার এই কর্তব্যনিষ্ঠা, সহৃদয়তা মুগ্ধ করেছিল অপূর্বকে। সত্তরের দশকে অমিতাভ-অভিনীত জনপ্রিয় ছবি ‘জঞ্জির’-এর রিমেক করেছিলেন অপূর্ব। তাঁর পরিচালিত ছবির প্রধান চরিত্রে ছিলেন রাম চরণ এবং প্রিয়ঙ্কা চোপড়া।