রূপঙ্কর বাগচী এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
অতীতে শিল্পীরা সময়ে-অসময়ে একে-অন্যের খবর নিতেন। পেশাগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা কখনও আন্তরিকতায় ছায়া ফেলেনি। গানের স্বর্ণযুগের এক কিংবদন্তির হাত ধরে সেই রেওয়াজ ফিরে এল একুশ শতকে। অতিমারিতে কেমন আছেন রূপঙ্কর বাগচী? ২ দিন ফোনে খোঁজ নিলেন স্বয়ং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। অশীতিপর শিল্পীর এই আন্তরিকতায় হতবাক রূপঙ্কর। সেই ঘটনা তিনি সবিস্তারে জানিয়েছেন নেটমাধ্যমে। ঘটনার সমর্থনে মুখ খুলেছেন রাঘব চট্টোপাধ্যায়, লোপামুদ্রা মিত্র। জানিয়েছেন, তাঁদেরও প্রায়ই খোঁজ নেন প্রবীণা শিল্পী।
নিজের সামাজিক পাতায় কী জানিয়েছেন রূপঙ্কর? জাতীয় পুরস্কারজয়ীর কথায়, ‘মাস তিনেক আগে একদিন সকালে একটা ফোন এল। আমি তখন বাজারে পটল কিনতে ব্যস্ত। এক প্রবীণা উৎকণ্ঠিত হয়ে আমার এবং আমার পরিবারের সকলের কুশল জানতে চাইলেন। আমি মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার করছি কিনা, অপ্রয়োজনে বেরোচ্ছি কিনা ইত্যাদি’। সেই প্রবীণার ফোন আবারও শনিবার সকালে। শিল্পী তখন অনলাইনে গানের তালিম দিচ্ছেন। আবারও স্ত্রী, মেয়ের খোঁজখবর। শিল্পীকে বার বার সতর্কও করলেন তিনি, যেন বাড়ি থেকে না বের হন রূপঙ্কর। প্রয়োজনে বের হলেও যেন অন্যদের থেকে ৬ ফিট দূরত্ব বজায় রাখেন।
স্বাভাবিক ভাবেই রূপঙ্করও প্রবীণা শিল্পীর কুশল জানতে চান। তখনই সবিনয় উত্তর, ‘‘'আমার কথা ছাড়। তোমাদের অনেক কিছু দেওয়ার আছে বাংলা সঙ্গীত জগতকে। সাবধানে থেক।’’ এর পরেই রূপঙ্কর ফাঁস করেন, ‘২টি ঘটনায় আমি হতচকিত। কয়েক মুহুর্ত যেন স্থানুবৎ হয়ে গেলাম। প্রবীণা আর কেউ নন। গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়!’ নেটমাধ্যমে এই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতেই ৫ হাজার নেটাগরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রূপঙ্করকে।
মন্তব্য বিভাগে শিল্পীর সঙ্গে নিজেদের অজ্ঞিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন আরও ২ শিল্পী। রাঘব লিখেছেন, ‘এটা আমারও হয়েছে। গান, গল্প মাঝে মাঝেই হয়ে থাকে। কী যে ভাল মানুষ, কী বলব। মায়ের মতোই স্নেহশীল, যত্নবান'। একই অভিজ্ঞতা লোপামুদ্রা মিত্রেরও। তিনি জানিয়েছেন, ‘আজ আমি পেয়েছি সেই ফোন। সকালে। এই নিয়ে সেই '৯৬ সাল থেকে বেশ কয়েক বার পেলাম। আমাদের খবর নিলেন, গান শোনালেন। গান শুনলেন। বললেন, উনি আমাদের দিদি। তাই খবর নিচ্ছেন আমরা কেমন আছি'।
তার পরেই প্রশ্ন রেখেছেন লোপামুদ্রা, ‘আমরা এ ভাবে কারওর খোঁজ করি? করব?’