অরিন্দমের জন্মদিনে শুভকামনায় রূপাঞ্জনা।
অতীত-স্মৃতি এখনও তাজা। এখনও সেই স্মৃতি ভিড় করলে অস্বস্তি তৈরি হয়। দিনের শেষে শিল্পী সত্তার ঊর্ধ্বে আমিও তো মানুষ। তাই চেষ্টা করি মনখারাপ করা ঘটনাগুলো থেকে দূরে থাকতে। তখনও অরিন্দম শীলকে ঘিরে কোনও খারাপ অনুভূতি নেই। কোনও কাজও করিনি। কিন্তু ওঁর ‘আবর্ত’ দেখেছিলাম। ছবিটি, ওঁর পরিচালনা, জয়া আহসানের অভিনয়--- এই তিনটি দিক আমায় রাতারাতি অরিন্দমদার গুণমুগ্ধ করে তুলেছিল। সে কথা জানিয়েওছিলাম পরিচালককে।
অরিন্দমদার খেয়াল আছে কিনা জানি না, এর আগে ওঁর জন্মদিনে বাকিদেরও মতো আমারও তখন আমন্ত্রণ থাকত। ওঁর পরিচালনা, ওঁর গল্প বলার ধরণ ভাল লাগত। ওঁর সঙ্গে অনেক কাজ করেছি, তা নয়। তবে যে কয়েকটি কাজ করেছি, ভালই ব্যবহার পেয়েছি। রূপটান ঘরে এসে সমস্ত অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে দেখা করে যেতেন। স্টার জলসার ‘ভূমিকন্যা’র ক্ষেত্রেও। দাঁড়িয়ে হয়তো সামান্য কথা বলতেন। চলে যেতেন। যা দেখে মনে হয়েছিল, ভাল পরিচালকের পাশাপাশি মানুষ হিসেবেও যথেষ্ট দায়িত্বশীল। সবার খেয়াল রাখেন।
সেটেও যে খুব আসতেন তাও নয়। কারণ, অরিন্দমদা ‘ভূমিকন্যা’র প্রযোজক ছিলেন। খারাপ লেগেছিল, ধারাবাহিকের কারণে যখন ওঁর প্রচুর টাকা নষ্ট হয়েছিল। একই সঙ্গে মনে হয়েছিল, বাকি অনেক পরিচালকদের থেকে অরিন্দম শীল এগিয়ে। তাই হয়তো সেই সময়ের দর্শক ওই কাজটি নিতে পারেনি। তার পরেই সব কেমন এলোমেলো হয়ে গেল। ওঁর আরও একটি দিক দেখে ফেলেছিলাম। যা মনে পড়লে আজও তেতো লাগে।
সেই সময় সবাই বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যেতে বলেছিলেন। রাজনীতির রং লাগানোরও চেষ্টা করেছিলেন বহু জন। কারণ, আমি বিজেপি। অরিন্দমদা তখন তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। আমি সেই পথে হাঁটিনি। একটাই কারণে। পেশাগত কারণে আমরা একই দুনিয়ার বাসিন্দা। একে অন্যের মুখোমুখিও হব। এই ভাবনা থেকেই অন্যদের পাশাপাশি আমার আগামী ছবি ‘ইকির মিকির’-এর প্রিমিয়ারে সস্ত্রীক অরিন্দমদাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। এ বার প্রশ্ন, তা হলে কি সব ভুলে আগামী দিনে আবার অরিন্দমদার সঙ্গে কাজ করব? জানি না। খুব ভাল চরিত্র পেলে হয়তো বিবেচনা করব।
১২ মার্চ অরিন্দমদার জীবনের বিশেষ দিন, জন্মদিন। আজ সব ভুলে বলছি, অরিন্দমদা খুব ভাল থেকো। তোমার সব কিছু ভীষণ শুভ হোক।