সুশান্তের না বলা গল্প বললেন রূপম
৩৬৫ দিন হতে চলল। এক বছর আগের দিনটা মনে করলে দেখা যাবে, আর কয়েক ঘণ্টা পরেই খবরের শিরোনামগুলি ভরে উঠেছিল একটিই বাক্যে, ‘আত্মঘাতী সুশান্ত সিংহ রাজপুত’। অধিকাংশ দেশবাসী যে খবরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে রূপম ইসলামও এক জন। তাঁর অন্যতম প্রিয় অভিনেতা ছিলেন সুশান্ত।
রূপমের সাম্প্রতিক গানের ভিডিয়ো ‘দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ বা ‘না বলা গল্পেরা'-তে ফুটে উঠল সুশান্তের পরিপার্শ্ব। সুশান্তের প্রিয় জিনিসের ছবিগুলো, তাঁর জীবনের টুকরোগুলো রূপমের ভিডিয়োয় বার বার ফিরে এল। মনে করিয়ে দিল ঠিক এক বছর আগের কথা। কোথাও প্রয়াত অভিনতার প্রিয় দূরবীন, কোথাও বা তাঁর বারান্দায় ঝুলন্ত খাঁচা, কোথাও আবার সেই পাখাটা, যার সাহায্যে অভিনেতা বেরিয়ে গিয়েছিলেন এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে। সেগুলোর ঝলকের সঙ্গে সঙ্গেই রূপমের গলায়, ‘কত অটোগ্রাফের খাতা/ কত বাঁধভাঙা জনতা/ তবু আজও সে বন্দি একা তার/ মিথ্যে রূপকথায়’।
গানের যন্ত্রানুষঙ্গের দায়িত্বে ছিলেন জন পল। মিক্সিং ও মাস্টারিং করেছেন প্রসেনজিৎ পম চক্রবর্তী। ভিডিয়ো ও আঁকাগুলি ফুটে উঠেছে অন্তরূপ চক্রবর্তীর হাত ধরে।
১৯৯৯ সালে একটি গান রেকর্ড করেছিলেন রূপম। তাঁর গানের দল ফসিলস-এর প্রথম রেকর্ডিং ছিল সেটা। চলচ্চিত্র বিষয়ক এক অনুষ্ঠানের শীর্ষ সঙ্গীত হিসেবে শোনা গিয়েছিল সেই গান। সে সময়ে রূপমের মনে হয়েছিল, গানটা যেন অসমাপ্ত। আনন্দবাজার ডিজিটালকে রূপম বললেন, ‘‘আমি এক জনের গল্প বলা শুরু করেছিলাম, যাকে আমি চিনতাম না। কিন্তু বুঝতাম, সে কষ্টে আছে। কালো চশমায় যন্ত্রণা ঢেকে রাখে সে। বিলাসিতার ভিড়ে সে যেন বড্ড একা। তার শেষটা জানতাম না আমি। মনে হচ্ছিল, সে বাস্তব চরিত্র। কিন্তু জানতে পারিনি, কে সে। সুশান্তের মৃত্যুর পরে বুঝেছিলাম, সেই চরিত্র সুশান্তই।’’
তাই অভিনেতার চলে যাওয়ার এক বছর বাদে সেই গান প্রকাশ করলেন রূপম। অসমাপ্ত গল্পে, ভাবনায় দাঁড়ি পড়ল। এক বছর আগেই রূপম ফেসবুকে এই গানের সূত্র খুঁজে পাওয়ার কথা, চরিত্রের চেহারা দেখতে পাওয়ার কথা লিখেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, গানের পরিসমাপ্তি খুঁজে বার করে তিনি বিষণ্ণ। চাননি, এ ভাবে তাঁর গানের শেষ তিনি খুঁজে পান। সেটা বড়ই মর্মান্তিক।
গানের শেষ কয়েকটি কথায় রূপম তাই বার বার প্রশ্ন রাখলেন, ‘কাটাছেঁড়া চলে মন নিয়ে/ যৌবন ও জীবন নিয়ে/ ফাঁসের দাগ-ধরন নিয়ে/ এ ভাবেও কি যেতে হয়!’