ঋত্বিক। ছবি: দেবর্ষি সরকার
প্র: এই বছরে আপনার পাঁচটি ছবি রিলিজ় করেছে। দু’টি মুক্তির পথে। এটাই কি কেরিয়ারের সেরা সময়?
উ: ছবি রিলিজ়ের নিরিখে ভাল সময় বটেই। বেশির ভাগ ছবি দর্শকের ভাল লেগেছে। তাই খুব ভাল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।
প্র: পরপর ছবিতে দর্শকের নজরে থাকা কি অভিনেতার আলাদা গুরুত্ব তৈরি করে?
উ: এর একটা ঝুঁকি আছে। একই অভিনেতাকে বারবার দেখতে গিয়ে দর্শকের একঘেয়েমি তৈরি হতে পারে। ছবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অভিনেতাকে আরও যত্নশীল হতে হয়। আমি অন্তত চেষ্টা করি, চরিত্র যেন রিপিট না হয়। হয়তো পরপর দুটো ছবিতে লেখকের চরিত্র। আর কিছুতে তাদের মিল নেই। তাই দ্বিতীয় যে পরিচালক প্রস্তাব নিয়ে আসছেন, তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া কঠিন হয়ে যায়।
প্র: অভিনেতা ঋত্বিককে বক্স অফিসের কথা ভাবতে হয়?
উ: বক্স অফিসের হিসেবনিকেশ স্পষ্ট করে ইন্ডাস্ট্রির কেউই বলতে পারে না। তবে একজনের কাছে পরপর যখন কাজ আসছে, তার মানে ব্যবসাতেও সে কোনও ভাবে সাহায্য করছে। আর সিনেমা এখন শুধু বক্স অফিস নির্ভর নয়। অনেক ধরনের প্ল্যাটফর্ম খুলে গিয়েছে।
প্র: পরিচালক না স্ক্রিপ্ট, কোনটার গুরুত্ব বেশি?
উ: অনেক সময়ে স্ক্রিপ্টটা ভাল না লাগলেও পরিচালকের জন্য কাজটা করি। তবে স্ক্রিপ্ট ভাল লাগা বা না লাগার গুরুত্ব থেকেই যায়। তাই স্ক্রিপ্টকে এগিয়ে রাখব।
প্র: শুধু পরিচালকের খাতিরে কোনও কাজ করেছেন?
উ: ঠিক তা নয়। এমন অনেক প্রযোজক আছেন, যাঁদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, ছবিটা কি আদৌ দাঁড়াবে? আবার এমন ছবিও করেছি, যেগুলো শুধু ফেস্টিভ্যালের জন্য।
প্র: ঋত্বিক কি তারকা হয়ে উঠেছেন?
উ: তারকা তকমায় আপত্তি রয়েছে। কারণ আমার মধ্যে তারকাসুলভ এলিমেন্ট আছে বলে মনে করি না। তাই অভিনয় যখন থেকে শুরু করেছি, তখন থেকেই জানি, তারকা হতে পারব না। বরাবর অভিনেতা হতে চেয়েছি।
প্র: বদলে যাওয়া ছবির ধারায় অভিনেতারাই তো তারকার জায়গা নিচ্ছেন...
উ: তারকা শব্দটা আসলে মার্কেট ঠিক করে দেয়। তারকার স্ট্রং ফ্যানবেস থাকবে। প্রথম দু’সপ্তাহে তারা হল ভর্তি করে দেবে। সেটাই আমার কাছে তারকা। সেটা হয়েছে কি না, জানি না। তবে বাঙালি দর্শকের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নেওয়া, অভিনেতার গুরুত্বের নিরিখে বদলটা দেখতে পাই। অনেক মানুষ আমার কাজ দেখতে পছন্দ করেন। কনটেন্ট বদলের পুরো প্রসেস মন দিয়ে লক্ষ করছি। উপভোগ করছি। দেশের সব ইন্ডাস্ট্রিতেই তো সেটা হচ্ছে।
প্র: নতুন গোয়েন্দা শান্তিলালের প্রতি দর্শক কেন আকৃষ্ট হবেন?
উ: গোয়েন্দা বলতে আমাদের চোখে একটা ইমেজ ভাসে। ঝকঝকে সপ্রতিভ চেহারা, ক্ষুরধার বুদ্ধি। শান্তিলালকে দেখে এ সব কিছু মনে হয় না। সে খুবই সাধারণ। আর ছবি এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে সে অসাধারণ হয়ে ওঠে। আজকের পৃথিবীতে ইনফরমেশনের যে জোর, তার জন্যই সে বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। তাই এটা শুধু গোয়েন্দা গল্প নয়, এক সাধারণের জিতে যাওয়ারও গল্প।
প্র: একই পরিচালকের ছবিতে বারবার আপনাকে দেখা যায়। কেন বলুন তো?
উ: তখন অভিনয়েও আসিনি। চাঙ্কি পাণ্ডের একটা সাক্ষাৎকার দেখেছিলাম। জোর দিয়ে তিনি বলছেন, তাঁকে কোনও প্রযোজক রিপিট করেননি। ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছিল। অনেক পরিচালকই আমাকে রিপিট করেন। খুব শিগগির সৃজিতও (মুখোপাধ্যায়) করবে বলে মনে হচ্ছে!
প্র: যিশু সেনগুপ্ত ও আবীর চট্টোপাধ্যায় কি আপনার চেয়ে এগিয়ে বলে মনে করেন?
উ: সে রকম মনে হয় না। আমি আমার জার্নি নিয়ে খুব খুশি।
প্র: রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট না করলে কি এই দলবদলের দিনে পথ চলা যাবে?
উ: রাজনীতিতে একটা দিক বেছে না নিলে এই ইন্ডাস্ট্রিতে কিছু করা যায় না, সেটা আমি মানি না। আমার কাছে সরাসরি প্রস্তাব আসেনি। যাঁরা যে রাজনৈতিক দলে আছেন, তাঁরা অভিনয়ের জন্য রাজনীতিতে আসেননি। রাজনীতির জন্যই রাজনীতিতে এসেছেন বলে মনে করি।
প্র: প্রস্তাব এলে কী করবেন?
উ: রাজনীতি করা একটা সিরিয়াস বিষয়। এটা শখে করা যায় না। শখে স্ট্যাম্প কালেক্ট করা যায় (জোরে হাসি)!