রীতার কণ্ঠরোধ করতে চেয়েছিলেন অনুপম!
তিন দিন পরেও সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অকালমৃত্যু নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলেবদের মত বিনিময় চলছেই। মত পার্থক্য যেমন রয়েছে, প্রবীণ তারকারা নবীনদের মনের জোর বাড়াতে অনেক ভাল মন্তব্যও করছেন। যেমন, অনুপম খের। সুশান্তের লড়াইয়ের কথা বলতে গিয়ে নিজের জীবনের না জানা তথ্য বুধবার ইনস্টা ভিডিয়োতে পোস্ট করেছেন অভিনেতা।
তারপরেই সেটি ব্যুমেরাং হয়ে ফিরেছে অভিনেতার দিকে। অনুপমের একটি কথাও কানে না তুলে নেটাগরিকেরা ফের উস্কে দিয়েছেন প্রয়াত পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘বাড়িওয়ালি’র মুখ্য চরিত্রাভিনেতা কিরণ খেরের ‘ডাবিং’ বিতর্ক। প্রশ্নও তুলেছেন, অনুপমের আসল চেহারা নিয়ে!
ভিডিয়োতে অভিনেতার দাবি, ৩৯ বছর আগে তিনি যখন মায়া নগরীতে পা রেখেছিলেন তখনও এ ভাবেই নাকি সবাই নাক সিঁটকেছিল তাঁকে দেখে। বলেছিল, মাথায় চুল নেই, রোগা হাড়গিলে চেহারা, এ করবে অভিনয়? তখন তাঁর প্রতি রাতের ঠিকানা ছিল প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চ। সেখানেই রাতের ঘুম সেরে রোজ সকালে হাজিরা দিতেন স্টুডিয়ো পাড়ায়। বেশির ভাগ দিনই খালি হাতে ফিরতেন। তবু হার মানেননি বলিউডে ‘আউট সাইডার’ হয়েও। সেই তকমা নিয়েই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
অনুপমের মুখ থেকে এত ভাল কথা বেরোনোর পরেও কিন্তু তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে পারেনি নেটাগরিকরা। উল্টে আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছে, ‘বাড়িওয়ালি’ ছবিতে কিরণের ডাবিং করার পর কী ভাবে কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রীতা কয়রালের।
শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় সঞ্চালিত চ্যানেলের এক শো-তে রীতা নিজ মুখে স্বীকার করেছিলেন, তাঁকে অনুপম ফোনে বলেছিলেন, ডাবিংয়ের সমস্ত টাকা তিনি নগদে দিয়ে দেবেন। বদলে, তিনি কিরণের হয়ে ডাবিং করেছেন সে কথা কাউকে জানাতে পারবেন না। রীতা প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁকে নাকি ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকিও দিয়েছিলেন ছবির প্রযোজক অনুপম।
ডাবিংয়ের সূত্রেই সেরা অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার পেতে কিছু বিলম্ব হয়েছিল কিরণের। কারণ, তাঁর চরিত্রের কণ্ঠস্বর ‘ডাব’ করা হয়েছে বলে তিনি আদৌ পুরস্কারের ন্যায্য দাবিদার কিনা, তা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল গৌতম ঘোষের নেতৃত্বাধীন জুরির মধ্যে, এবং জাতীয় পুরস্কারের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও চরিত্রের কণ্ঠ ডাবিং হলে সেটা লিখিত জানাতে হয়। যা টিমের তরফ থেকে করা হয়নি।
যদিও জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পরে ঋতুপর্ণ নাকি স্বীকার করেন, কিরণের গলা ডাব করেছিলেন রীতা। ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে।
নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য টলিউডের সঙ্গে দ্বিচারিতা করতে বাঁধেনি যাঁর, টলিপাড়ায় আক্ষরিক অর্থেই ‘আউট সাইডার’ অনুপমের ভিডিয়ো তাই স্বাভাবিক ভাবেই ‘ব্রাত্য’ বাংলার কাছে।
পাল্টা অভিযোগ, এমন মুখোশধারী মানুষ আছে বলেই যুগে যুগে বলির পাঁঠা হতে হয় সুশান্ত সিংহ রাজপুতদের।