চিত্রাঙ্গদা চক্রবর্তী। ছবি : ফেসবুক থেকে নেওয়া।
বিয়ে করছেন অভিনেত্রী চিত্রাঙ্গদা চক্রবর্তী। পাত্র 'প্ৰিয় বন্ধু' সম্বিৎচট্টোপাধ্যায়। বিশিষ্ট তবলাবাদক পণ্ডিত শুভেন চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে। সম্বিৎ নিজেও একজন পেশাদার সঙ্গীতশিল্পী। আবার তাঁর একটা টলিউড যোগও রয়েছে। বাংলা চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট কৌতুকাভিনেতা জহর গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর দাদু। বৃহস্পতিবার সম্বিতের সঙ্গে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বাগদান পর্ব সেরে ফেললেন চিত্রাঙ্গদা। সমাজ মাধ্যমে অনুষ্ঠানের ছবি দিয়ে লিখলেন, ‘খাতায় কলমে জুড়লাম তাহলে। দারুণ আনন্দ হচ্ছে। এত হাসছি যে গাল ব্যথা করছে আমার’।
চিত্রাঙ্গদাকে অভিনন্দন জানাতে ফোন করেছিল আনন্দবাজার ডিজিটাল। কবে বিয়ে, প্রশ্ন করতেই হেসে ফেললেন অভিনেত্রী। বললেন, ‘‘বিয়ের এখনও দেরি আছে। প্রায় এক বছর বাকি। এখনও তো এনগেজমেন্টের ঘোরই কাটেনি। আপাতত সেই রেশই উপভোগ করছি তারিয়ে তারিয়ে।’’
বোন ঋতাভরী অবশ্য অনেক দূরের কথা ভাবছেন। দিদির ‘ব্যাচেলরেট পার্টি’ থেকে শুরু করে বিয়ের যাবতীয় প্ল্যান মাথায় ঘুরছে এখন থেকেই। সঙ্গে আবেগ, দুঃখ মিলেমিশে উত্তেজিত শোনাল ঋতাভরীকে। আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন, ‘‘দারুণ অনুভূতি। বাড়ির কারও বিয়ে হলেই বোধ হয় এরকম হয়। ও তো আমার দিদি নয়। আমরা বন্ধু। আমার কাছে এখনও ছোট্ট তিতিন ও। তিতিন বলেই ডাকি। ও আমায় ডাকে পলিন বলে। তিতিনের বিয়ে হচ্ছে। যেমন ভাল লাগছে তেমনই একটু মনও খারাপ। হাজার হোক, দিদির বিয়ে হওয়া মানেই বোনের বড় হয়ে যাওয়া। এটা সত্যিই একটা অন্য রকম অনুভূতি। থ্যাঙ্ক গড, এখনও পরের বছর জানুয়ারি পর্যন্ত সময় পাব ব্যাপারটার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য।’’ হবু ‘জামাইবাবু’ সম্বিতের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে প্রশংসা থামতেই চাইছিল না ঋতাভরীর। বললেন, ‘‘দারুণ মজার মানুষ ও। আমার তো তিতিন-সম্বিতের জুটি দারুণ লাগে। এনগেজমেন্টে দারুণ মজা করেছে ওরা। একসঙ্গে নেচেছে, গান গেয়েছে। আমার দারুণ লেগেছে ওদের ওই ভাবে আনন্দ করতে দেখে।’’
গ্ল্যামার দুনিয়ায় চিত্রাঙ্গদার পরিচয় ‘ভিন্টেজ গার্ল’ নামে। রাজকীয়তা, ঐতিহ্য এবং ধ্রুপদিয়ানা নাকি সুন্দর মিলে যায় তাঁর হাবে ভাবে। বাগদান অনুষ্ঠানেও মিলেছে তার ঝলক। অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল পাত্রপক্ষের তরফেই। সম্বিতের ‘কর্তাদাদু’ জহর গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে। চিত্রাঙ্গদা বলছিলেন, ‘‘পুরনো সময়টা একরকম বন্দি হয়ে আছে এই বাড়িতে। গ্রামোফোন থেকে শুরু করে অজস্র পুরনো জিনিস। সেখানেই আমাদের বাগদানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন আঙ্কল-আন্টি (সম্বিতের বাবা-মা)।’’ তিনি নিজেও পরেছিলেন তাঁর দিদার শাড়ি-গয়না। সমাজমাধ্যমে সে কথা জানিয়ে চিত্রঙ্গদা লিখেছেন, ‘ভিন্টেজ যে আমাকে মানায় আরও একবার প্রমাণ হল। আজ আমি যা যা পরেছি— শাড়ি থেকে গয়না সবকিছুই আমার দিদার’।
এখন সব তারকারাই থিম বিয়ে করছেন। চিত্রঙ্গদার বিয়ের থিমেও কি তা হলে রাজকীয়তা এবং ঐতিহ্য দেখা যাবে? ঋতাভরী বললেন, ‘‘আমার মায়ের দিদা ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তাগাছার রাজকন্যা। জমিদারি বংশের কিছু তো প্রভাব পড়বেই। তিতিনের বিয়েও হবে রাজবাড়িতে। স্বাভাবিকভাবেই বিয়েতে ভিন্টেজ থিম থাকছে।’’কোন রাজবাড়িতে বিয়ে হচ্ছে প্রশ্ন করতে ঋতাভরী বললেন, ‘‘রাজ্যের বাইরে কোথাও নয়।’’ তবে দিদিকে ‘ব্যাচেলরেট পার্টি’ দিতে লস এঞ্জেলসে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে তাঁর। আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন, ‘‘আমার গ্র্যাজুয়েশন জুন মাসে। তার পরে মা এবং দিদিকে নিয়ে এলএ যাওয়ার ইচ্ছে আছে। ওখানেই ওর ব্যাচেলরেট পার্টিও হয়ে যাবে।’’
বিয়ের সব কিছু হবে বাঙালি নিয়ম মেনেই। চিত্রাঙ্গদার কথায়,‘‘লাল বেনারসিই পরব। শোলার মুকুটও। টোপর পরবে সম্বিৎ। অন্তত তেমনই ইচ্ছে আছে।’’ খাওয়া দাওয়া? হবু কনের জবাব, ‘‘এটা নিয়ে এখনও ভাবিনি। তবে বাঙালি খাবারই আমার পছন্দ। এই তো এনগেজমেন্টের অনুষ্ঠানেও সব বাঙালি পদ হয়েছিল। কড়াইশুঁটির কচুরি, আলুর দম, ছোলার ডাল, পোলাও, গন্ধরাজ চিকেন এবং মাটনের কোর্মা জাতীয় কিছু একটা পদ। উফ্! দারুণ ছিল সেটা। আমি তো পরের দিন সকালেও খেয়েছি।’’