Ritwik Chakrabarty

Gora: সিরিজ়ে আগাগোড়াই ঋত্বিক

শহরে পরপর খুন হয় তিন নামী সাহিত্যিক। তাদের গোটা দেহে পেনের নিবের আঁচড়, দাঁত তুলে নিয়ে সেখানে সাজিয়ে দেওয়া হচ্ছে পেনের নিব।

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২২ ০৯:২১
Share:

ওটিটি প্ল্যাটফর্মে (বাংলা) নতুন থ্রিলার, যার ক্যাচলাইন ‘দ্য প্রাইভেট ডিফেক্টিভ’! মুখ্য গোয়েন্দা চরিত্রে ঋত্বিক চক্রবর্তী (গৌরব সেন ওরফে গোরা), যাকে পুরোদস্তুর কাল্টিভেট করতে হয়! সায়ন্তন ঘোষাল পরিচালিত হইচই সিরিজ় ‘গোরা’র জ়ঁরে লেখা রয়েছে ‘কমেডি’। থ্রিলারে কি কমেডি জায়গা পেতে পারে? গোয়েন্দা কি সূত্র-নাম ভুলে যেতে পারে? এমন বেশ কিছু ‘হতে পারে’-র সহাবস্থান ‘গোরা’, যে সিরিজ়ে নামচরিত্র এবং সে চরিত্রের অভিনেতাই ইউএসপি। বাকি সিরিজ় মোটের উপরে মন্দ নয়। তবে আরও ভাল করার অবকাশ ছিল।

Advertisement

শহরে পরপর খুন হয় তিন নামী সাহিত্যিক। তাদের গোটা দেহে পেনের নিবের আঁচড়, দাঁত তুলে নিয়ে সেখানে সাজিয়ে দেওয়া হচ্ছে পেনের নিব। ঘটনার তদন্তে নামে গোরা, সারথি (সুহোত্র মুখোপাধ্যায়), ইনস্পেক্টর সরখেল (অভিজিৎ গুহ)। কমবেশি কুড়ি মিনিটের আট পর্বের সিরিজ়ে শেষ দুই পর্বে সমাধান হয় মার্ডার মিস্ট্রির। আছে একটি সাবপ্লটও। বিয়ের পরে ফিরে এসেছে সোমলতার (ইশা সাহা) ছোটবেলার রোগ, স্লিপ ওয়াকিং। কিন্তু তার নেপথ্যে রয়েছে কি কোনও ষড়যন্ত্র? সন্দেহের বশে গোরার দ্বারস্থ হয় সোমলতা।

গোরা এমন এক গোয়েন্দা, যে অভদ্র, খিটখিটে, বদমেজাজি, নারীবিদ্বেষী, অহঙ্কারী... কিন্তু এত দোষ থাকা সত্ত্বেও এমন একটি চরিত্রকে ভালবাসার যোগ্য করে তুলতে পারেন ঋত্বিক। সম্ভবত চিত্রনাট্যকার সাহানা দত্ত তাঁকে মাথায় রেখে এই চরিত্রটি লিখেছেন। ওটিটিতে এটি অভিনেতার প্রথম কাজ। অনায়াস দক্ষতায় গোরা হয়ে উঠেছেন তিনি। ঋত্বিকের লম্বা কোঁকড়ানো চুল, কাঁচাপাকা দাড়ির লুকও চরিত্রটিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। চরিত্রের নামের মান রেখেছেন সুহোত্র। গোরা-সারথির জুটি শোয়ের অন্যতম আকর্ষণ। ইশা তাঁর চরিত্রে সুন্দর। কিন্তু ‘ইন্দু’র (‘ইন্দু’ সিরিজ়ের নামচরিত্র) সঙ্গে সোমলতার মিল (বহিরঙ্গে নয়) কি সচেতন দর্শকের চোখে লাগে? পার্শ্বচরিত্রে অনুরাধা রায়, অভিজিৎ, অনন্যা সেন মানানসই। নজর কেড়েছেন পায়েল দে। কৌশিক চট্টোপাধ্যায়কেও ভাল লেগেছে।

Advertisement

গোরা
(ওয়েব সিরিজ়)
পরিচালনা: সায়ন্তন ঘোষাল
অভিনয়: ঋত্বিক, সুহোত্র, ইশা, অভিজিৎ, পায়েল, অনন্যা
৫.৫/১০

গোরা যে রাশভারী গোয়েন্দা নয়, তা টাইটেল ট্র্যাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সিরিজ়ে সেই রেশ আরও একটু রাখলে ভাল হত। সাবপ্লটটি একেবারেই জমেনি। গল্পে একটি সুদীর্ঘ দৃশ্য ধরে জট ছাড়ানো হয়। তার বদলে সাতটি পর্বে যদি ঘটনাপ্রবাহ বাড়ানো হত, তা হলে পরিবেশন স্বতঃস্ফূর্ত মনে হত। খুন হচ্ছে সাহিত্যিকেরা। গোয়েন্দার নাম গোরা, যা বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী সৃষ্টি। এই দু’টি বিষয়ের কি যোগসূত্র তৈরি করা যেত? সিরিজ়টি দেখতে গিয়ে দর্শকের তেমন প্রত্যাশা হলেও হতে পারে।

বাংলা ওটিটিতে এখনও অবধি থ্রিলারে নজরকাড়া গল্প দেখা যায়নি। সেই অভাব পূরণ করতেই হয়তো গোরার মতো চরিত্রের সৃষ্টি। চরিত্র দিয়ে যতটুকু বাজিমাত করার, তা নির্মাতা-চিত্রনাট্যকার এবং অভিনেতা করেছেন। কিন্তু এমন চরিত্রের টানে দ্বিতীয় সিজ়ন দেখার জন্য, থ্রিলারের মান বাড়ানোও প্রয়োজন। কারণ প্রথম চমক প্রথম সিজ়নে শিহরন জাগায়, পরবর্তীতে নয়!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement