ছবির নাম ‘হেলমেট’। বিষয়, ভারতের মতো দেশে জনস্ফীতি রুখতে কন্ডোমের ব্যবহার বাড়ানো নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি। বিষয়টি জানার পরে ছবির নামের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন পড়ে না। ছবিটি নিয়েও আর বিশেষ কিছু বলার থাকে না। কারণ কনটেন্টধর্মী ছবির বাজারে একটি মহৎ ভাবনা ছবি বানানোর জন্য যথেষ্ট নয়। মূল বিষয়গত ভাবনাকে যদি ছবির মতো করে বানানো না হয়, তবে দর্শকের কাছে তা কোনও বার্তাই বহন করে না। শুধু ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বাড়তে থাকা হিন্দি ছবির তালিকায় একটি নাম যোগ হয় মাত্র। সতরম রমানির ‘হেলমেট’ সম্পর্কে উপরোক্ত সব ক’টি কথা খাটে। কয়েকজন বলিষ্ঠ চরিত্রাভিনেতা নিলেও, ছবির ভাগ্যোদয় হয় না।
সহকারী পরিচালক এবং প্রোডাকশন ডিজ়াইনিংয়ের অভিজ্ঞতা থাকা সতরাম ছবির মূল গল্পের স্রষ্টা। যৌনতা নিয়ে ছোট শহরের ছুতমার্গ, শিক্ষার অভাব... ছবি বানানোর ক্ষেত্রে লোভনীয় বিষয়। কয়েক বছর আগে ‘শুভ মঙ্গল সাবধান’ এই জ়ঁরে ছাপ ফেলেছিল। কিন্তু ‘হেলমেট’-এর শুরু থেকেই গল্পটি জমাট বাঁধে না।
উত্তরপ্রদেশের এক ছোট শহরে ব্যান্ড পার্টির লিড গায়ক লাকি (অপারশক্তি খুরানা)। তার প্রেমিকা রূপালি (প্রানূতন বহেল)। রুপালির বাবা যোগী (আশিস বিদ্যার্থী) প্রভাবশালী। মেয়ের বিয়ে সে দিতে চায় না লাকির সঙ্গে। জীবনে এগোনো ও বিয়ে করার জন্য লাকির চাই টাকা। তাই বন্ধু মাইনাস (আশিস বর্মা) এবং সুলতানের (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে জোট বেঁধে সে ট্রাক লুঠের পরিকল্পনা করে। তারা ভেবেছিল, ট্রাকে রয়েছে বহুমূল্য ‘গুডস’। কিন্তু কম মূল্যের বিভিন্ন ফ্লেভারের ‘বাক্স’ নিয়ে তারা কী করবে, সেটাই গল্প!
হেলমেট
পরিচালক: সতরাম রমানি
অভিনয়: অপারশক্তি, অভিষেক, প্রানূতন, আশিস, শারিব
৪/১০
ছবিতে রোম্যান্স রয়েছে, শেষে প্যাচপেচে মেলোড্রামাও রয়েছে। আর রয়েছে এক লাইনের একটি ভাবনা। তা যে খুব নতুন, তা-ও নয়। কন ড্রামার স্বাদ জোগানোর জন্য একটি ডন চরিত্রেরও প্রয়োজন পড়ে। সেখানে দেখা যায় ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’খ্যাত শারিব হাশমিকে। পৌনে দু’ঘণ্টার এই ছবির শেষে, দর্শক একটি প্রশ্নই করতে চাইবেন, গল্পের বুনট না থাকলে কি একটি ছবি দাঁড়ায়? সামাজিক বার্তা দেওয়ার দায় পরিচালক-নির্মাতাদের। তা নিয়ে দর্শকের মাথাব্যথা নেই। তাঁরা নিখাদ বিনোদন প্রত্যাশা করেন। জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্যে আগেও তাঁরা হলমুখো হননি। ওটিটিমুখো-ও হবেন না।
অপারশক্তি, অভিষেক ভাল। কিন্তু ছবিতে তাঁদের প্রতিভার অপচয় করা হয়েছে বলে মনে হবে। প্রানূতনের বাচনভঙ্গিতে জড়তা রয়েছে বলে মনে হয়। মূল চরিত্ররাই যে ছবিতে ঠিকমতো ব্যবহৃত নন, সেখানে শারিব হাশমি বা আশিস বিদ্যার্থীর মতো অভিনেতাদের প্রতি ন্যায়বিচারের আশা রাখা একটু বেশিই চাওয়া।
স্পষ্ট ভাষায়, ছবিটি দাগ কাটে না। সিনেমার স্বার্থে ছবিটিকে বিনোদনযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করা হয়নি। সামাজিক বার্তা গুঁজে দিলেই ছবির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে না।