লুটকেস
পরিচালনা: রাজেশ কৃষ্ণন
অভিনয়: কুনাল খেমু, রসিকা দুগ্গল, গজরাজ রাও, বিজয় রাজ,
রণবীর শোরে
৪.৫/১০
জনমানবহীন রাস্তায় কেউ টের পাওয়ার আগেই যেমন নন্দন কুমার সুটকেস নিয়ে চম্পট দিয়েছিল, তেমনই কিছু সিনেমা হলে আসে কিন্তু দর্শক টের পাওয়ার আগেই ছবি ভোকাট্টা। তার মধ্যে কিছু ছবি সত্যিই ভাল হয়। প্রচারের ঢক্কানিনাদ না থাকায় সুবিধে করতে পারে না। কিছু কহতব্যের মধ্যে পড়ে না। আবার কিছু ছবিতে একটু যত্ন নিলে, তা হয়তো ভাল হতে পারত। ‘লুটকেস’ এই তৃতীয় গোত্রের মধ্যে পড়ে।
প্লটলাইন একেবারে সরল। একদিন আচমকাই কোটি টাকা ভর্তি সুটকেস পায় নন্দন কুমার (কুনাল খেমু), যার বাড়িতে অভাব নিত্যদিনের সঙ্গী। নন্দন গত দশ বছর ধরে স্ত্রী লতাকে (রসিকা দুগ্গল) শিমলা বেড়ানোর স্তোক দেয়, ছেলেকে ওয়াটার পার্ক নিয়ে যাওয়ার। ছাপোষা মানুষের সাধ আর সাধ্যের মধ্যে যোজনখানেক ব্যবধান। এমন পরিস্থিতিতে নন্দন আলিবাবার খাজানা নিয়ে বাড়িতে হাজির হয়। স্ত্রীকে সত্যি বলার ক্ষমতা নেই, কারণ তা হলে ওই টাকা পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে। অন্য দিকে সুটকেসের আসল মালিকও চুপ করে বসে নেই। বসে নেই তার প্রতিপক্ষও। ওই সুটকেসেই আবার রয়েছে সরকারি নথি, যা টাকার চেয়েও দামি। ফলে শুরু হয় লুট-কেস! ব্যস এটাই কাহিনি।
ছবিতে কী হতে যাচ্ছে, তা দর্শক আগে থেকেই আন্দাজ করতে পারবেন। তাতে কিছু যায় আসত না যদি জার্নিটা উপভোগ্য হত। ‘‘হেরা ফেরি করনে কা, ইয়া নেহি করনে কা?’’ ‘লুটকেস’-এর থিমও খানিক এমনই। এই থিমে যতটা বিনোদন প্রয়োজন ছিল, তা দিতে ব্যর্থ নির্মাতারা। দু’ঘণ্টা বারো মিনিট ধরে দর্শকের ধৈর্য পরখ করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন পরিচালক রাজেশ কৃষ্ণন। সবচেয়ে বড় ত্রুটি, কমেডি ছবিতে দর্শকের হাসি চওড়া হতে গিয়েও হয় না। মজার মুহূর্তগুলোই ভাল করে বুনতে পারেননি পরিচালক, নেই জমাটি পাঞ্চলাইন। তবে আয়োজন ছিল। আর ছিলেন গজরাজ রাও, বিজয় রাজ, রসিকা দুগ্গল, রণবীর শোরের মতো বলিষ্ঠ চরিত্রাভিনেতারা। কুনাল খেমুর কাছে এ ছবি নিঃসন্দেহে বড় ব্রেক হতে পারত কিন্তু জোলো চিত্রনাট্য তাতেও জল ঢেলে দিল। বিজয় রাজকে এই ধরনের গুন্ডার চরিত্রে দেখে দেখে দর্শকও বোধহয় ক্লান্ত। বরং গজরাজ রাওয়ের ঠান্ডা মাথায় শয়তানি ছবির প্লাস পয়েন্ট। আর একজন ভারী সাবলীল, তিনি রসিকা দুগ্গল। লতা আর নন্দনের দাম্পত্য বিলাস দেখতে ভাল লাগে। মধ্যবিত্ত সংসারের ঠোকাঠুকির জায়গাগুলোও সুন্দর।
চিত্রনাট্যে রসবোধের মাত্রা আর ক্ল্যাইম্যাক্সের কেওস— এই দুটো জিনিস সামলে দিতে পারলে নিশ্চিত ভাবে ‘লুটকেস’ উপভোগ্য ছবি হতে পারত।