কোরিয়োগ্রাফার রেমো এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি শৈশবকাল থেকে বহুবার বর্ণ বৈষম্যের মুখোমুখি হয়েছি। এটা এমন একটা বিষয়, যার সঙ্গে অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছিলাম। বিশেষ করে যখনই বিদেশে গিয়েছি, এই সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে। আবারও রিল ভিডিয়োয় মজার ছলে সে কথাই মনে করালেন বলি তারকা।
গায়ের রং নিয়ে খারাপ মন্তব্য শুনতে হত রেমোকে
রেমো ডি’সুজা। সব সময়ে হাসিমুখ। নেচে নাচিয়ে আনন্দে থাকেন ও রাখেন। কেবল রেমো নন, তাঁর স্ত্রী লিজেল ডি’সুজাও। তারকা জুটি মাঝে মধ্যেই তাঁদের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে মজাদার রিল ভিডিয়ো বানান। কখনও অভিনয় করেন, কখনও আবার নাচেন।
রবিবার হেসেখেলেই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন বলিউডের প্রথম সারির নৃত্যশিল্পী ও কোরিয়োগ্রাফার রেমো। রিল ভিডিয়ো বানানোর ছলে মন খারাপের কথা বললেন তিনি। তাঁর গায়ের রঙের জন্য ছোট থেকে নানা ধরনের বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য শুনতে হত তাঁকে। রেমো নামে নয়, ‘কালিয়া’ বা ‘কালু’ ডাকেই পরিচিত ছিলেন তিনি। গায়ের রং নিয়ে ঠাট্টা মস্করা তো দীর্ঘ দিনের চর্চা। কেবল ঠাট্টা উপহাস নয়, গায়ের রং কালো বলে মৃত্যুবরণও করতে হয় মানুষকে।
২০১৯-এর ২৫ মে মিনিয়াপোলিসের রাস্তায় ৪৬ বছর বয়সি কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের গলা হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছিল পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিন। ৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ড সে ভাবে থাকার ফলে শ্বাসরোধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান ফ্লয়েড। তার পর থেকে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে আমেরিকা। সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।
সে সব কথা না মনে করালেও অল্প কথায় ভক্তদের মনে প্রশ্ন তুললেন রেমো। ‘গুমনাম’ ছবির বিখ্যাত গান ‘হম কালে হ্যায় তো কেয়া হুয়া দিলওয়ালে হ্যায়’ গানে রিল বানালেন স্বামী-স্ত্রী।
তার সঙ্গে রেমো লিখলেন, ‘ছোটবেলায় কালিয়া বা কালু বলে ডাকলে আমার মন খারাপ হত। তখন আমার মা বলতেন, গায়ের রং আসল কথা নয়, হৃদয়ের গুরুত্ব অনেক বেশি। তখন আমায় এই গানটি গেয়ে শোনাতেন মা। মন ভাল হয়ে যেত আমার। আজ আমি এই গানটি লিজেলকে গেয়ে শোনাই।’
কয়েক বছর আগে একটি সাক্ষাৎকারে রেমো জানিয়েছিলেন, গায়ের রঙের জন্য নানা দিক থেকে উড়ে আসা কটাক্ষ তাঁকে কাজ করে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। চেয়েছিলেন এমন একটা জায়গায় নিজেকে নিয়ে যাবেন যাতে কেউ আর তাঁকে কোনও রকম কটূ কথা বলার সাহস না পান।
রেমোর কথায়, “আমি শৈশবকাল থেকে বহুবার বর্ণ বৈষম্যের মুখোমুখি হয়েছি। এটা এমন একটা বিষয়, যার সঙ্গে অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছিলাম। বিশেষ করে যখনই বিদেশে গিয়েছি, এই সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে। আমি যখন বড় হচ্ছিলাম, আমাকে বিভিন্ন নামে ডাকা হত। আমি ভাবতাম আমাকে এ রকম দেখতে বলেই হয় তো মানুষজন এ সব নামে ডাকেন।”