রাজকুমার রাও। স্বল্পভাষী রাজকুমার এই মুহূর্তে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা। কিন্তু এই অভিনেতাই এক কাণ্ড করে বসেছিলেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শাহরুখের বাড়ি ‘মন্নত’-এর বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন।
রাজকুমারের জন্ম গুরুগ্রামে। তাঁর বাবা একজন সরকারি কর্মী ছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি বাবাকে হারান। এর দু’বছর পর মায়েরও মৃত্যু হয়।
ছোট থেকেই অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। প্রথমে মনোজ বাজপেয়ী এবং পরে শাহরুখ খানের ভক্ত হয়ে ওঠেন রাজকুমার। তাঁদের সিনেমা দেখেই অভিনেতা হওয়ার ঝোঁক মাথায় চাপে।
প্রথাগত পড়াশোনা শেষ করে তাই পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট থেকে অভিনয়ের কোর্স করেন। মু্ম্বই আসার আগে প্রস্তুতির অন্যতম ধাপ ছিল পুণে শহরে কাটানো এই দিনগুলি।
এফটিআই-উত্তীর্ণ রাজকুমার শূন্য থেকে শুরু করার জন্য এসে পৌঁছন মুম্বই। প্রথম এক বছর তাঁর কেটেছিল পরিচালক প্রযোজকদের দরজায় দরজায় ঘুরে।
প্রথম সুযোগ দেন দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১০ সালে মুক্তি পায় ‘লভ সেক্স অউর ধোকা'। অডিশন দিয়ে এই ছবির জন্য নির্বাচিত হন রাজকুমার। তিনটি ছোটগল্প নিয়ে তৈরি এই ছবির দ্বিতীয় গল্পে নুসরত ভারুচার বিপরীতে অভিনয় করেন রাজকুমার।
তবে ‘লভ সেক্স অউর ধোকা'-র আগে রাজকুমার অভিনীত ‘রণ’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। এই ছবিতে তাঁর ভূমিকা ছিল সংক্ষিপ্ত। প্রথম থেকেই কিছুটা অন্যধারার ছবির জন্য রাজকুমার ছিলেন পরিচালকদের বেশ পছন্দের।
'রাগিনী এমএমএস’, ‘শয়তান’, ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর পার্ট টু’, ‘তলাশ’, ‘ভুলভুলাইয়া’, ‘কাই পো চে’, ‘শহিদ’, ‘কুইন’— একের পর এক ছবিতে প্রতিভার ছাপ রাখেন রাজকুমার।
২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল হনসল মেহতা পরিচালিত ‘সিটিলাইটস’। বক্স অফিসে ব্যর্থ হলেও এই ছবিতে রাজুমারের বলিষ্ঠ অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল সমালোচকদের কলমে।
‘সিটিলাইটস’-এ রাজকুমারের বিপীরতে তাঁর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেন পত্রলেখা পল। পরবর্তী সময়ে রিয়েল লাইফেও কাছাকাছি আসেন রাজকুমার-পত্রলেখা। গত প্রায় এক দশক ধরে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
এ সব তো গেল রাজকুমারের সাফল্যের কাহিনি। কিন্তু জানেন কি মুম্বই এসে প্রথম কোন কাজটা তিনি করেছিলেন? শাহরুখের বাড়ির সামনে টানা ৬-৭ ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলেন। শুধু শাহরুখকে এক ঝলক দেখতে পাওয়ার জন্য।
না, শাহরুখকে তিনি ওই দিন দেখতে পাননি। তবে তাঁর স্ত্রী গৌরীকে দেখেছিলেন। আর সেটাই ছিল তাঁর পাওনা। পরে অবশ্য সফল হওয়ার পর শাহরুখের বাড়িতে অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন। রাজকীয় আপ্যায়নও মিলেছিল।