যদি তাঁর মতো একজন বহিরাগত ইন্ডাস্ট্রিতে সুপারস্টার হতে পারেন, তবে আমারও আশা আছে—শাহরুখ খানকে দেখে এই কথাগুলোই ভাবতেন রাজকুমার। সেই স্বপ্নকে মনে মধ্যে রেখেই গুরুগ্রাম থেকে তিনি একদিন পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বই।
মু্ম্বই আসার আগে প্রস্তুতির অন্যতম ধাপ ছিল পুণে শহরে কাটানো দিনগুলি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পরে রাজকুমার কোর্স করেন পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট থেকে।
এফটিটিআই উত্তীর্ণ রাজকুমার শূন্য থেকে শুরু করার জন্য এসে পৌঁছন মুম্বই। প্রথম এক বছর তাঁর কেটেছিল পরিচালক প্রযোজকদের দরজায় দরজায় ঘুরে। প্রথম সুযোগ দেন দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১০ সালে মুক্তি পায় ‘লভ সেক্স অউর ধোকা’। আরও অনেকের সঙ্গে অডিশন দিয়ে এই ছবির জন্য নির্বাচিত হন রাজকুমার। তিনটি ছোটগল্প নিয়ে তৈরি এই ছবির দ্বিতীয় গল্পে নুসরত ভারুচার বিপরীতে অভিনয় করেন রাজকুমার।
তবে ‘লভ সেক্স অউর ধোকা’-র আগে রাজকুমার অভিনীত ‘রণ’ ছবি মুক্তি পেয়েছিল। এই ছবিতে তাঁর ভূমিকা ছিল সংক্ষিপ্ত। প্রথম থেকেই কিছুটা অন্যধারার ছবির জন্য রাজকুমার ছিলেন পরিচালকদের প্রথম পছন্দ।
রাগিনী এমএমএস’, ‘শয়তান’, ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর পার্ট টু’, ‘তলাশ’, ‘ভুল ভুলাইয়া’, ‘কাই পো চে’, ‘শহিদ’, ‘কুইন’—একের পর এক ছবিতে নিজের প্রতিভার ছাপ রাখেন রাজকুমার।
২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল হনসল মেটা পরিচালিত ‘সিটিলাইটস’। বক্স অফিসে ব্যর্থ হলেও এই ছবিতে রাজুমারের বলিষ্ঠ অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল সমালোচকদের কলমে।
‘সিটিলাইটস’-এ রাজকুমারের বিপীরতে তাঁর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেন পত্রলেখা পল। পরবর্তী সময়ে রিয়েল লাইফেও কাছাকাছি আসেন রাজকুমার-পত্রলেখা। গত প্রায় এক দশক ধরে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
তবে এখনও বিয়ে করেননি তাঁরা। কবে বিয়ে করবেন, সে বিষয়েও কিছু বলেননি এই দুই কুশীলব। আপাতত দু’জনেই ব্যস্ত নিজেদের বলিউড কেরিয়ার নিয়ে।
রাজকুমারের ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য বাকি নাম হল ‘ডলি কি ডোলি’, ‘হমারি অধুরি কহানি’, ‘আলিগড়’, ‘ট্র্যাপড’, ‘বরেলী কি বরফি’, ‘নিউটন’ এবং ‘জাজমেন্টাল হো ক্যয়া’।
ওয়েব সিরিজ ‘বোস:ডেড/ অ্যালাইভ’-এ রাজকুমার রাওয়ের কাজ দর্শকদের মন জয় করেছে। এই সিরিজে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ১১ কেজি ওজন বাড়িয়েছিলেন রাজকুমার।
আবার রাজকুমারই ছবির চরিত্রের সঙ্গে চেহারা মানানসই করতে ওজন কমানোর জন্য সারাদিন কফি আর গাজর খেয়ে থাকতেন।
নিজের জন্মপরিচয় নিয়েও পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন রাজকুমার। প্রথমে তিনি পরিচয় থেকে বাদ দেন তাঁর পদবি, ‘যাদব’। তারপর আবার তিনি পদবি ব্যবহারের রীতিতে ফিরে যান।
তবে এ বার আর যাদব নয়। তিনি নামের পাশে বসালেন ‘রাও’। তাঁর কথায়, তাঁর পদবিহীন পরিচয় পছন্দ ছিল না মায়ের। তাই তিনি ‘রাও’ পদবি নেন। কারণ তাঁর মনে হয়েছে, ‘যাদব’-এর তুলনায় তাঁর নামের সঙ্গে ‘রাও’ পদবি-ই বেশি মানানসই।
তবে নাম পরিবর্তনের জন্য ভাটা পড়েনি জনপ্রিয়তায়। রাজকুমার যাদবের মতো রাজকুমার রাও-ও দর্শকদের কাছে চূড়ান্ত জনপ্রিয়।