রেজিস্ট্রির দুই বছর পার করলেন রাজ চক্রবর্তী এবং শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। ফ্যানক্লাবে তাঁদের বিয়ের ‘থ্রো ব্যাক’ ছবির ছড়াছড়ি। এই বিশেষ দিনে স্মৃতির পাতা থেকে আরও একবার দেখে নেওয়া যাক টলি পাড়ার ওই ‘পাওয়ার কাপল’এর ‘ভালবাসার বিয়ের’ নানা মুহূর্তের ঝলক।
সিনেমার মতো বিয়ের গল্প বুনেছিলেন ওঁরা। সম্পর্কের টানাপড়েন। হাজারও চাপানউতোরের মধ্যে দিয়েও এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন ভালবাসা।
২০১৮-র ৬ মার্চ— রেজিস্ট্রি সেরেছিলেন রাজ-শুভশ্রী। এর পর থেকেই চলছিল বিয়ের নানা জল্পনা। কবে বিয়ে করছেন তাঁরা? সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংবাদমাধ্যম—সবার মনে তখন একটাই প্রশ্ন। শুভশ্রী বুনছিলেন নতুন স্বপ্নের জাল। রাজের মনেও খেলছিল শিহরণ।
রেজিস্ট্রির পর থেকেই চলছিল নানা অনুষ্ঠান। ২০১৮-র ৮মে শহরের এক অভিজাত হোটেলে বসেছিল ককটেল পার্টি।টলিপাড়ার চেনা মুখেরা ভিড় জমিয়েছিলেন সেখানে। সৃজিত মুখোপাধ্যায় থেকে রুদ্রনীল ঘোষ,সৌরভ-অনিন্দিতা— হাজির ছিলেন ওঁরাও। হাসি-ঠাট্টা তামাশায় রাজ-শুভশ্রী তখন একেবারে অন্য মেজাজে।
বিয়ের জন্য রাজ-শুভশ্রী বেছে নিয়েছিলেন শহর থেকে সামান্য দূরে বাওয়ালি রাজবাড়ি। রাজবাড়ি সেজে উঠেছিল নানা ফুলের সাজে। ১০মে ছিল তাঁদের আইবুড়োভাত। কাঁসার থালায় থরে থরে সাজানো ছিল খাবার। আলতা দিয়ে দু’পা রাঙিয়েছিলেন নায়িকা।
রাত বাড়তেই বসেছিল সঙ্গীতের আসর। হিন্দি-বাংলা গানের সঙ্গে পা মিলিয়েছিলেন রাজ-শুভশ্রীও। নাচের মধ্যে শুভশ্রীর ঘাম মোছাতে রাজের এগিয়ে আসা, রাতের ভোজের শেষে পাকা আম কেটে ইনস্ট্যান্ট কুলফি বানিয়ে খাওয়ার মজা— এমনই ছোট ছোট মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
অবশেষে এল ‘দ্য ডি ডে’—পাওয়ার কাপলের বিয়ের দিন। ১১ মে ভোর চারটেয় জল সইতে যাওয়া ও দধিমঙ্গল দিয়ে শুরু হয়েছিল বিয়ের উপচার। রাজের গা ছোঁয়ানো হলুদ এসে লেগেছিল শুভশ্রীর শরীরে।
বিয়ের দুপুরেও ছিল খাওয়া-দাওয়ার বিস্তর আয়োজন।মৌরলা মাছ, পোস্তর বড়া, চিংড়ি বাটা, চিংড়ির মালাইকারি, ভেটকি পাতুরি, পুদিনা মুরগি... বাদ ছিলনা কিছুই।
রাত নামতেই বসেছিল বিয়ের আসর। জুঁই ফুলের ম ম গন্ধে বিয়েবাড়ি তখন ভরপুর। মোমবাতির নরম আলোর মায়াবী পরিবেশ আর সানাইয়ের সুর অতিথিদের পৌঁছে দিয়েছিল কোনও এক অপার্থিব জগতে।
সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের লাল বেনারসি পরেছিলেন শুভশ্রী। গলার ভারী সোনার গয়নায় তিনি ছিলেন মোহময়ী। কপালে চন্দন, লাল ওড়না... শুভশ্রী ধরা দিয়েছিলেন শাশ্বত বাঙালি নারী রূপে।
কনেকে পাল্লা দিয়ে সেজেছিলেন রাজ। চিরাচরিত ঘরানা থেকে বেরিয়ে পরেছিলেন সবুজ পাঞ্জাবি, বেনারসি পাড় বসানো ধুতি। পোশাক তৈরি করেছিলেন রাজ বন্দ্যোপাধ্যায়।
মালাবদল, শুভদৃষ্টি, খই পোড়ানো, সিঁদুরদান— নিয়ম মেনে পালন হয়েছিল বিয়ের সমস্ত উপচার।
বিয়ের দিন টলিউডের বেশির ভাগ তারকা যেতে না পারলেও উপস্থিত ছিলেন শ্রীকান্ত মোহতা, জিৎ, রুদ্রনীল ঘোষ, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, তনুশ্রী, জুন মাল্য, শ্রেয়া পাণ্ডে, মানালি দে, অনিন্দিতা বসু প্রমুখ।
নতুন ভাবে পথ চলা শুরু করেছিলেন ওঁরা। প্রায় দু’বছর কেটে গেলেও রয়ায়নে ভাঁটা পড়েনি এতটুকুই। রাজ-শুভশ্রী ভাল থাকছেন নিজেদের শর্তেই।