খোলা চিঠিতে প্রিয় নায়কের কাছে অকপট রাহুল।
প্রিয় মানুষের প্রতি অনুরাগ থাকবে, অনুযোগও। ভালবাসায় যেমনটা হয়। ২ নভেম্বর তেমনই এক ভালবাসার মানুষকে খোলা চিঠি লিখলেন রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ শাহরুখ খানের জন্মদিনে। কলকাতা থেকে তাঁকে অনুযোগ মাখানো ভালবাসা পাঠালেন অভিনেতা। তাতে ছড়িয়ে দিলেন শাহরুখকে ঘিরে জমে থাকা তাঁর যাবতীয় অনুভূতি।
চিঠির শুরুতেই আরিয়ান খানকে নিয়ে কিছু কথা। তাঁর প্রতি রাহুলের ভাবনা উঠে এসেছে প্রথম কয়েকটি ছত্রে। আর তার পরেই বাদশা খানের প্রতি তাঁর একরাশ অভিমান! বলিউডের ‘বাদশা’র উদ্দেশ্যে টলিউডের অভিনেতার লেখা— ‘স্যার দোষ আপনার। আপনি দিল্লি থেকে এসে এত কিছু কেন করলেন? আমার মতো সাধারণ দেখতে মানুষদের মাথায় কেন ঢোকালেন, "তোমরাও পার!"’
খোলা চিঠিতে নায়কের কাছে রাহুল অকপট— ‘আজ বিজয়গড়ের একটা ছেলে শুধু নিজের মেধা দিয়ে একটা জায়গা করে নিয়েছে। পরিশ্রমকে নিজের পাথেয় করেছে কাকে দেখে? এত স্পর্ধা সাধারণ মানুষকে দেওয়ার কোনও মানে হয়? আমরা বসতাম নীচে, ফ্রন্ট রো-তে। পোস্টারের এর যোগ্য করে তুলেছেন শুধু আপনি।’
৫৬টি বসন্ত পার করলেন শাহরুখ। তবু আজও ভক্তদের কাছে তিনি সেই আদ্যন্ত রোম্যান্টিক ‘রাজ’। কিংবা ‘রাহুল’। আর এখানেই ক্ষোভ বাস্তবের রাহুলের। চিঠির বয়ানে তারই ইঙ্গিত। একটা সময়ে দেশবাসী ভারত বলতে বুঝত শাহরুখ খান। তার পরে মুম্বইয়ের আরব সাগর ও কলকাতার গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। বদলে গিয়েছে ভারতও। সেই বদলে যাওয়া দেশের সঙ্গে যেন নিজেকে পুরোপুরি বদলাতে পারেননি পর্দার ‘রাজ’। এক সময়ে নিয়মিত বিজয়গড় কলোনির বেঁটেখাটো ছেলের স্বপ্নে ছিল তাঁর নিত্য যাওয়াআসা। পুরনো শাহরুখ যেন তাঁর কানের কাছে ফিসফিসিয়ে আশ্বাস দিতেন— "হ্যাঁ, তুমিই সেরা!" সেই স্মৃতি আজও রাহুলের চোখে আঁকা।
রাহুলের এই চিঠি শাহরুখ পড়েননি বটে। তবে পড়েছেন ‘দেশের মাটি’র ‘রাজা’র অসংখ্য অনুরাগী। রাহুলের চিঠি বেয়ে পাড়ি দিয়েছচেন ফেলে আসা সময়ে, সেই নয়ের দশকে। যখন শাহরুখের নাম উচ্চারিত হলেই মনের পর্দায় ভেসে উঠত ‘বাজিগর’ কিংবা ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’, কানে বাজত কভি হাঁ কভি না’ ছবির গান, ‘ও তো হ্যায় আলবেলা... হাজারো মে অকেলা।’
এই প্রজন্মের কাছে ‘রাহুল’ নামটাও তো জনপ্রিয়। শাহরুখ খানের জন্যই!