তিনি বলিউডের ‘বাদশা’। শাহরুখ খান। যাতেই হাত দেন, তাতেই নাকি সোনা ফলে। তবে এমন বেশ কিছু ছবি আছে, যাতে অভিনয় করতে নারাজ ছিলেন শাহরুখ। অথচ পরবর্তীতে সেই ছবিগুলি ভেঙে দেয় তাঁরই বক্স অফিসের রেকর্ড। গড়ে দেয় অন্যদের কেরিয়ার। কিং খানের ৫৬ তম জন্মদিনে ফিরে দেখা যাক সেই সব ছবির তালিকা।
এক থা টাইগার: সলমন খান নয়, ‘টাইগার’ হিসেবে পরিচালক কবীর খানের প্রথম পছন্দ ছিলেন শাহরুখ। চিত্রনাট্য পছন্দ হলেও ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন কিং খান। কারণ তখন যশ চোপড়ার ‘যব তক হ্যায় জান’ ছবির শ্যুটে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। পরিবর্তে আসেন সলমন। বক্স অফিসে তিনশো কোটিরও বেশি ব্যবসা করেছিল এই ছবি।
থ্রি ইডিয়টস: ২০০৯ সালে বলিউডের অন্যতম সফল ছবি। আমির খান অভিনীত চরিত্রটির জন্য শাহরুখকে চেয়েছিলেন পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়া। কিন্তু সময়ের অভাবে পরিচালককে ফিরিয়ে দেন ‘বাদশা’। শাহরুখের প্রত্যাখ্যানেই সে বছর ছবি চলে যায় আমিরের হাতে। বক্স অফিসের রেকর্ড চুরমার তার পরেই।
মুন্নাভাই এম বি বি এস: পরপর ফ্লপ ছবি। ডুবে যেতে বসেছিল সঞ্জয় দত্তের কেরিয়ার। ‘মুন্নাভাই’ হয়ে ফিরে আসেন তিনি। বক্স অফিসে ঝড় তোলেন দীর্ঘ কাল পর। অথচ আসলে তাঁর জন্য রাখা হয়েছিল জিমি শেরগিল অভিনীত চরিত্রটি। ‘মুন্নাভাই’ হিসেবে নির্মাতারা চেয়েছিলেন শাহরুখকে। তিনি রাজি না হওয়ায় সঞ্জয়ের ঝুলিতে গিয়ে পড়ে তাঁর কেরিয়ারের অন্যতম এই চরিত্র।
লগান: আমিরের ছবির দীর্ঘ তালিকায় এখনও ঝলমল করে ‘লগান’। জানেন কি, শাহরুখের জন্যই আশুতোষ গোয়ারিকরের ‘ভুবন’ হয়ে উঠতে পেরেছিলেন বলিউডের ‘পারফেকশনিস্ট’? প্রথমে এই চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন শাহরুখ। কিন্তু বন্ধু আশুতোষকে ফিরিয়ে দেন অভিনেতা। আমির খানকে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন পরিচালককে। তখনও দুই খানের বন্ধুত্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আঁচ পড়েনি। শাহরুখের ছেড়ে দেওয়া চরিত্রে তাই ঢুকে পড়েন আমির।
কহো না…প্যায়ার হ্যায়: শাহরুখ এই ছবির প্রস্তাব না ফেরালে কী হত ভেবে দেখেছেন? বলিউড কি পেত সুঠাম চেহারার, নাচে পারদর্শী নতুন নায়ককে? শাহরুখকে চিত্রনাট্য পড়ে শুনিয়েছিলেন রাকেশ। শেষমেশ তা মনে ধরেনি কিং খানের। অগত্যা ছেলে হৃতিক রোশনকে নায়ক করেই ছবি তৈরির সিদ্ধান্ত নেন রাকেশ। হৃতিকের প্রথম ছবি শুধু বক্স অফিসেই ঝড় তোলেনি। বুঝিয়ে দিয়েছিল তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া।
যোধা আকবর: ‘স্বদেশ’-এর পর এই ছবিতেও শাহরুখকেই মুখ্য চরিত্রে চেয়েছিলেন আশুতোষ গোয়ারিকর। তখন অন্য একটি ছবির কাজে ব্যস্ত ছিলেন বাদশা। তার পরেই ছিল সপরিবার দীর্ঘ ছুটির পরিকল্পনা। তাই শেষমেশ আর পর্দার আকবর হতে পারেননি শাহরুখ। পরিবর্তে হৃতিককে ছবিতে নেন পরিচালক।
রং দে বসন্তি: রাকেশ ওম প্রকাশ মোহরা পরিচালিত এই ছবিতেও অভিনয়ের সুযোগ এসেছিল শাহরুখের। শোনা যায়, মাধবন অভিনীত চরিত্রটির জন্য তাঁকে চেয়েছিলেন পরিচালক। কিন্তু সময়ের অভাবে এই ছবিতে কাজ করা হয়নি কিং খানের।
ফেরারি কি সওয়ারি: একাধিক বার প্রত্যাখ্যাত হয়েও এ ছবিতে মুখ্য চরিত্রের জন্য শাহরুখকে চেয়েছিলেন বিধু বিনোদ চোপড়া। কিন্তু ফের শাহরুখ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁকে।
কখনও সময়ের অভাব। কখনও বা চরিত্র পছন্দ না হওয়া। প্রায় তিন দশকের দীর্ঘ কেরিয়ারে এমন একাধিক ছবি ছেড়ে দিয়েছেন শাহরুখ। আবার এমন ছবিও করেছেন, যা মুখ থুবড়ে পড়েছে বক্স অফিসে। কিং খানের অবশ্য আফশোস নেই। সেই কবেই তো বলেছেন— “হার কর জিতনেওয়ালে কো বাজিগর কহতে হ্যায়।”