বুম্বাদাকে ‘মিস্’ করবেন তো এ বার থেকে? ‘তুমি যে আমার’ টিভি শো-টা শেষ হয়ে গেল। একসঙ্গে টানা শ্যুটিং করলেন দু’জনে...
দেখুন, বুম্বাদাকে আমি বহু বার নানা ভাবে মিস্ করেছি।
কী রকম?
’৯৫-তে বুম্বাদার সঙ্গে যখন প্রথম ছবি ‘মোহিনী’ করে ওড়িশা চলে গেলাম...মনে হয়েছিল এত বড় স্টারের সঙ্গে কাজ করতে পারব না...প্রথম বার মিস্ করলাম...তার পর ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত টানা ৩৫টা ছবি করে যখন সংসার-জীবনে ঢুকে পড়লাম, তখন আবার মিস্ করলাম...আর এই ২০১৪-তে ‘তুমি যে আমার’ শেষ হয়ে গেল...এখনও মিস্ করছি।
টিভি-তে কিন্তু আপনাদের শো-এ যে রসায়নটা তৈরি হয়েছিল, তা দেখে তো মনে হচ্ছিল, প্রসেনজিতের প্রেমে আপনি হাবুডুবু খাচ্ছেন?
(রসিকতা করে চোখ টিপে)...সে তো অনেক লম্বা লাইন ভাই... কত কমা-দাঁড়ি-সেমিকোলন (হাসি)...প্রথম নাকি...জোকস অ্যাপার্ট... বুম্বাদার মতো মানুষ সত্যিই পাওয়া যায় না...কাজের ক্ষেত্রে এত সাহায্য করেন...ডেট, সময়, সব কিছু এত অ্যাডজাস্ট করতে পারেন...তবে নিজের শো ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’য়ে ফিরে যাচ্ছি, অন্য রকম একটা আনন্দ তো হচ্ছেই। শো-টা আরম্ভ হচ্ছে অগস্টের মাঝামাঝি থেকে।
আচ্ছা আপনার জায়গায় এক বার জুন মাল্য আর এক বার দেবশ্রী রায় এলেন। দু’জনের মধ্যে কাকে আপনার বেশি ভাল লাগল? প্লিজ, ইনি-ও ভাল, উনি-ও ভাল— এ রকম মনরাখা কথা বলবেন না।
(ভেবে) দেবশ্রী রায় এক জন সিনিয়র অ্যাকট্রেস এবং অত্যন্ত গুণী শিল্পী...ওঁর কাজ ডেফিনেটলি আমার বেশি ভাল লেগেছে...তবে জুনও ঠিক আছে।
আচ্ছা, এই শো-টায়, আপনি বার বার ফিরে আসছেন। রহস্যটা কী? আপনি নাকি টিভির ‘মেয়ে মীর’?
(হেসে) আমি হয়তো ঘোরতর সংসারী বলে প্রতিযোগীদের মনের কথা সহজে ধরতে পারি...আর সবচেয়ে বড় কথা, ওই মঞ্চে কিন্তু নিজেকে নায়িকা ভাবলে হবে না। সেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে...সেটাই রহস্য!
আচ্ছা, ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’ যদি ঋতুপর্ণা করেন, তা হলে কেমন হয়?
এটা কোনও প্রশ্ন হল না।
কেন? ঋতুপর্ণার প্রত্যেকটা গ্যাপে আপনি চলে এসেছেন। প্রসেনজিতের সঙ্গে যখন ঋতুপর্ণার চিড় ধরল, তখন আপনি পর পর প্রসেনজিতের নায়িকা হতে থাকলেন... হালে ‘রামধনু’ ছবিটাও। পরিচালক শিবপ্রসাদকে ঋতুপর্ণা ‘না’ বলল বলেই তো রোলটা আপনার কাছে এল এবং আপনি করলেনও...
কাকতালীয়! আমি যখন ছবি করতে আসি, তখন ওই জায়গাটায় আমি ফিট করে গেছিলাম...আর ‘রামধনু’র চরিত্রটা ভাল লেগেছে, করেছি...ঋতুর হয়তো ভাল লাগেনি...হতেই পারে।
আচ্ছা, ঋতুপর্ণা না হয় প্রসেনজিতের সঙ্গে ছবি করেন না, কিন্তু আপনার তো সমস্যা নেই। তা হলে আপনাকে হালের কোনও ছবিতে ওঁর সঙ্গে দেখা যায়নি কেন?
বুম্বাদা অন্য রকম ছবি করছেন এখন..
আপনিও তো ‘অন্য রকম’ ছবি করছেন। ধরুন ‘মনের মানুষ’। পাওলির চরিত্রটা করতে পারতেন না?
না, সেই সময় আমি কাজই করতাম না। তবে সবাই জানেন রচনা কী রকম কাজ করে, কী তার যোগ্যতা...কেউ যদি না বলেন...আমি কাউকে নিজে থেকে ফোন করে কাজ চাইতে পারব না...
প্রোডাকশন হাউজগুলোর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন? মানে, ধরুন এই মুহূর্তে সবচেয়ে ক্ষমতাশালী হাউজ ‘ভেঙ্কটেশ ফিল্মস’...
হাই-হ্যালো সম্পর্ক আছে। তবে আমার ‘পিআর’ খুব খারাপ। হেসে-হেসে কাজ ম্যানেজ করতে পারি না বা ‘লবি’ করতে পারি না...বা বারবার ফোন করে ঘ্যান ঘ্যানও করতে পারি না...
আজকালকার নিয়ম অনুযায়ী, আপনি তো দেখছি কিছুই পারেন না...(হাসি)
(জোরে হেসে সোফার ওপরে গড়িয়ে পড়ে) যা বলেছেন... তবে হ্যাঁ, একটা জিনিস পারি, যার নাম—অভিনয়।
একটু অন্য প্রসঙ্গ, আনন্দplus-এই এক সাক্ষাৎকারে প্রসেনজিতের স্ত্রী অর্পিতা ‘তুমি যে আমার’ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘‘...রচনাকে শো-তে দারুণ মানিয়েছে। শো-টা যে ধরনের দর্শকদের জন্য বানানো, তাদের ভাল লেগেছে...তবে আমি নিজে ওই ধরনের দর্শকদের মধ্যে পড়ি না। তাই একটা এপিসোডের পর আর দেখিনি”...এ সম্পর্কে কিছু বলবেন?
টিআরপি আর দর্শকদের ভালবাসায় জনপ্রিয় শো-টা দারুণ সফল হয়েছিল। আর অর্পিতা তো বুম্বাদার স্ত্রী। স্বামীর অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাঁর স্ত্রী কিছু বলেছেন, তাতে আমি আর কী বলব!
‘দিদি নাম্বার ওয়ান’ করতে করতে আর কোনও ছবি করবেন?
জানি না। তবে আমি অত ওয়ার্কোহলিক নই। ভাল রোল না হলে করব না। আমি ঘোরতর সংসারী। রোজ রাত আটটায় শ্যুটিং থেকে ফিরে ছেলের হোমওয়ার্ক নিয়ে বসি।
পাক্কা ‘দিদিমণি’ টাইপ?
তা বলতে পারেন।
টিভির ‘দাদাগিরি’-তে দাদা সৌরভ, আর ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এ দিদি রচনা...তাই তো দাঁড়াচ্ছে?
দারুণ কমপ্লিমেন্ট...তবে ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এ ফেরাটা আমার কাছে বাপের বাড়ি আসার মতো। নিজের ঘর, নিজের রাজত্ব... মানে হাত-পা ছেড়ে যেন বলতে পারব, ‘ওরে কে কোথায় আছিস এক কাপ চা নিয়ে আয়...’
তা হলে ‘তুমি যে আমার’ অনুষ্ঠানটা কী?
(হেসে) শ্বশুরবাড়ি!