Sabarimala

নারীর পবিত্রতা কি যোনিতেই সীমাবদ্ধ ? শবরীমালা বিতর্কে বিস্ফোরক অভিনেত্রী

কেরলের কোঝিকোড়ে জন্ম পার্বতীর। সেই কেরল, যেখানে কিনা সাক্ষরতার হার দেশে সবচেয়ে বেশি (৯৩.৯৮%)।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তিরুঅনন্তপুরম শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ১৩:৩৩
Share:

শবরীমালা নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন পার্বতী।

নারীর অস্তিত্ব কখনও শরীরসর্বস্ব হতে পারে না। কে পবিত্র, কে অপবিত্র তার বিচার হতে পারে না যোনি দিয়ে। কে কুমারী আর কে নন, তা দিয়ে নারীর সতীত্ব বিচার করার অধিকার নেই কারও। কেরলের শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশ নিয়ে যখন বিতর্ক জারি, সেই সময় এমন মন্তব্য করলেন মলয়ালম ছবির জনপ্রিয় অভিনেত্রী পার্বতী।

Advertisement

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সেখানে শবরীমালা বিতর্ক নিয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সমর্থন করে বলেন, জন্ম থেকেই শুনে আসছেন ঋতুমতী নারী অপবিত্র। শুরু থেকেই বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তিনি। তাই কখনও কাউকে পরোয়া করেননি। যখনই মন চেয়েছে মন্দিরে গিয়েছেন।

কেরলের কোঝিকোড়ে জন্ম পার্বতীর। সেই কেরল, যেখানে কিনা সাক্ষরতার হার দেশে সবচেয়ে বেশি (৯৩.৯৮%)। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চোখ রাঙানি নেই। বরং অবাধ স্বাধীনতা রয়েছে নারীদের। সব ক্ষেত্রে পুরুষদের সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারেন তাঁরা। তবে বাস্তব চিত্রটা নাকি একেবারেই আলাদা। শবরীমালা বিতর্কের জেরে সম্প্রতি যা সামনে এসেছে। ভারতীয় সমাজব্যবস্থায় মাহিলাদের স্থান আসলে কোথায়, তা ফের স্পষ্ট হয়েছে। তবে পার্বতীর দাবি, সংবাদপত্রে বা টেলিভিশনে যে হিসাব দেখানো হয়, বাস্তবের সঙ্গে তার কোনও মিল নেই। দেশের অন্য রাজ্যগুলির থেকে একেবারেই ব্যতিক্রম নয় কেরল।

Advertisement

আরও পড়ুন: মিমির দেওয়ালি কী ভাবে কাটছে জানেন?​

আরও পড়ুন: নতুন খবর দিলেন শুভশ্রী!

তিনি বলেন, ‘‘কাগজে অনেককিছুই বেরোয়। কিন্তু বাস্তবটা একেবারেই আলাদা। মানসিকতার পরিবর্তন একেবারেই হয়নি। আজও লিঙ্গের ভিত্তিতেই পরিচয় গডে় ওঠে। মহিলারা নিজেও তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। নিজেদের মানুষ বলে ভাবতে শেখেননি এখনও। ১৭ বছর বয়সে বিনোদন জগতে পা রেখেছিলাম। লিঙ্গ বৈষম্যটা তখন আরও ভালভাবে বুঝতে শিখি। কথা বলার সময় পুরুষ সহকর্মীদের নজর আটকে থাকত আমার শরীরে। বুঝিয়ে দিত, যে তারা আর একজন মানুষের সঙ্গে কথা বলছে না। কথা বলছেন একজন মহিলার সঙ্গে। অনেকেই তাতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। যেন ওটাই স্বাভাবিক। পুরুষদের মর্জির উপরই যেন আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ!’’

শবরীমালা বিতর্কের জন্যও সেই সঙ্কীর্ণ মানসিকতাই দায়ী বলে মত পার্বতীর। তিনি বলেন, ‘‘শবরীমালা নিয়ে এতদিন কিছু বলিনি কারণ আমার কাছে এটা নতুন কিছু নয়। জন্ম থেকে শুনে আসছি, ঋতুমতী মেয়েরা নাকি অপবিত্র। মেয়েদের অস্তিত্ব যেন শরীর সর্বস্ব। যাবতীয় পবিত্রতা লুকিয়ে যোনিতেই। কুমারী কি না, তার উপর নির্ভর করছে সতীত্ব। এই মানসিকতা পাল্টানো দরকার। জানি না কবে তা সম্ভব হবে। হয়ত আরও কয়েক প্রজন্ম কেটে যাবে। তবে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। নইলে বিষয়টি থিতিয়ে যাবে।’’

এ দিকে সোমবারই দ্বিতীয়বারের জন্য খুলেছে শবরীমালা মন্দির। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও মহিলা সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি। সেই নিয়ে বিক্ষোভ জারি রয়েছে। তাঁদের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে তার মধ্যেও সেখানে পৌঁছে গিয়েছে একাধিক দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। সোমবার সন্ধেয় সেখানে হাজির হন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। ছিলেন ‘আয়াপ্পা ধর্ম সেনা’-র সভাপতি রাহুল ঈশ্বর এবং দলের সমর্থকরাও। সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনরালোচনা করে দেখার আবেদন জানানো হয়নি বলে পিনারাই বিজয়ন সরকারের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিক্ষোভ দেখাবেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement