(বাঁ দিক থেকে) শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, নন্দিতা রায়, ঋতাভরী চক্রবর্তী, আবীর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
গত তিন রাত ধরে ঘুমোতে পারেননি শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়! পঞ্চমীর ভোরে টিম ‘বহুরূপী’র জন্য পুজো দিতে দক্ষিণেশ্বরে গিয়েছিলেন জিনিয়া সেন। প্রথম শো শুরু হওয়ার সময় যত এগিয়েছে, ততই নাকি হৃৎস্পন্দন বেড়েছে প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতার। এই নিয়ে পর পর দু'বছর পুজোতে ছবি উপহার দিচ্ছে উইন্ডোজ় প্রযোজনা সংস্থা। এ বছর প্রেক্ষাগৃহে তাদের ছবি ‘বহুরূপী’। সেখানেই শিবপ্রসাদের চিন্তা। কারণ, এই ছবিতে তিনি মুখ্য চরিত্রে। ছবি করতে করতে দুর্ঘটনা-সহ অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে।
প্রিমিয়ারে ঋতাভরী চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত।
সন্ধ্যায় ছবির প্রিমিয়ার। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রেক্ষাগৃহের সামনে ভিড়। টলিউডের দাবি, ছবির ট্রেলার, গান শিবপ্রসাদের আকর্ষণ নাকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে! পরনে ময়ূরকণ্ঠী নীল পাঞ্জাবি আর ধুতিতে সেজে প্রেক্ষাগৃহে পা রাখতেই সব আলো তাঁর উপরে। প্রত্যেক প্রিমিয়ারে ছবির বিষয় অনুযায়ী পোশাকের রং বাছেন প্রযোজনা সংস্থার সদস্যেরা। ‘বহুরূপী’রা সাজ-সজ্জায় ভীষণ রঙিন। তাই শিবপ্রসাদ, নন্দিতা রায়, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, ঋতাভরী চক্রবর্তী, আবীর চট্টোপাধ্যায় এ দিন গাঢ় রঙে রঙিন। ব্যতিক্রম প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি আপাদমস্তক সাদা।
আবীর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
ছবি শুরু হতেই প্রেক্ষাগৃহের বাইরে নন্দিতা-শিবপ্রসাদ-আবীর। এত বছর ধরে চেনা পথে হেঁটে হঠাৎ রহস্য-রোমাঞ্চে মন! কেন? তারকাখচিত ছবিমুক্তির অনু্ষ্ঠানে আমন্ত্রিত আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন করেছিল নন্দিতাকে। মৃদু হেসে তাঁর জবাব, “নিজেকেই নিজে চ্যালেঞ্জ ছুড়লাম। ৭০ বছর বয়সে পা দিয়েছি। নিজের ধার পরীক্ষা করব না? আমার পরীক্ষা দেওয়ার জায়গা সিনেমা। তাই চেষ্টা করেছি।” কী ভাবে দুর্ধর্ষ ব্যাঙ্ক ডাকাত ‘বিক্রম’-এর হদিশ পেলেন? নন্দিতার দাবি, নাইজেল আকারাকে নিয়ে ‘মুক্তধারা’ তৈরির সময়ের ঘটনা। সেই সময় সংশোধনাগারের এক বন্দি নন্দিতাকে ডেকে বলেছিলেন, “নাইজেলকে নিয়ে কী ছবি বানাচ্ছেন! আমার জীবন আরও রোমাঞ্চকর। একের পর এক ব্যাঙ্ক ডাকাতি করেছি। পুলিশ টিকি ছুঁতে পারিনি।”
সেই বন্দির গল্প নন্দিতাকে নাড়া দিলেও তিনি সঙ্গে সঙ্গে ছবিটি বানাতে পারেননি। তাঁর কথায়, “নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে শুটিং করতে হবে। অর্থাৎ, ব্যয়বহুল ছবি। সেই সময় উইন্ডোজ়-এর ততটাও ক্ষমতা ছিল না। ফলে, ছবি করতে এত সময় লেগে গেল।” ছবি তখন শেষের পথে। প্রেক্ষাগৃহের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসেছেন ঋতাভরী, কৌশানী। ক্যামেরার ফ্লাশ তখন তাঁদের উপরে ঝলকাচ্ছে। কথা বলতে বলতেই শিবপ্রসাদকে নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে পা রাখলেন তিনি। এবং শুভেচ্ছা, প্রশংসায় ভাসলেন। সকলের হাসিমুখ দেখে এ বার স্বস্তি? নন্দিতা নন, এ বার জবাব কাহিনি-চিত্রনাট্যকার জিনিয়ার। বললেন, “আমরা এ বার নন্দিতাদির বাড়িতে পার্টি করতে যাব!”