টিম ‘টেক্কা’র সাফল্য উদ্যাপনে মধ্যমণি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
শহরের প্রতি কোনায় আলোর ছটা। বহুতলের ছাদে আকাশপ্রদীপ। দোকানে, বাড়ির বারান্দায় টুনির ঝিলিক। মঙ্গলবার রাতে তেমনই এক মুঠো আলো দক্ষিণ কলকাতার এক রেস্তরাঁর অন্দরে। ‘টেক্কা’র সাফল্য উদ্যাপন। অভিনেতা দেব নন, এ দিন তাঁর প্রযোজক অবতার ধরা দিল। একাধারে সাংবাদিকদের আগলাচ্ছেন, আমন্ত্রিত অতিথিদেরও। কালো পোশাকে, ঝকঝকে হাসিতে পরিশ্রমের ক্লান্তি থাবা বসাতে পারেনি। আনন্দবাজার অনলাইন তাঁর মুখোমুখি হয়ে জানতে চেয়েছিল, বলিউডকে বাংলা ‘টেক্কা’ দেবে, দেব বুঝেছিলেন? অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে জবাব এল, “বাংলা ছবির প্রতি, বাংলার মানুষের প্রতি অগাধ আস্থা আমার। আমি জানি, ভাল ছবি দেখাতে পারলে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে যাবেনই। হিন্দি ছবি কোনও বাধা নয়।”
‘টেক্কা’র সাফল্য উদ্যাপনে মিষ্টিমুখ। নিজস্ব চিত্র।
তত ক্ষণে দেবকে ঘিরে ভিড়। একটা নিজস্বী? ঘুরেফিরে সকলের আবদার মেটাতে মেটাতে দেব যেন কল্পতরু। কারও দাবিতে ‘না’ নেই তাঁর। তারই ফাঁকে স্বীকারোক্তি, “শুরুতে ভয় ছিল, ‘হোস্টেজ ড্রামা’ লোকে নেবে তো!” নিজে ছবি দেখার পর আশ্বস্ত হয়েছেন। দেবের প্রায় গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে তাঁর নায়িকা। সে দিকে ফিরে হাসিমুখে বললেন, “একটা ‘টেক্কা’ করতে আমার ১৭ বছর লেগে গেল। রুক্মিণীর মাত্র সাত!” সঙ্গে সঙ্গে লাজুক হেসে প্রত্যুত্তর, “শুনে বিশ্বাস হয়নি। ভেবেছি সাহস জোগাচ্ছে!”
পরের ছবি নিয়ে আলোচনা? নিজস্ব চিত্র।
এ ভাবেই কথাবার্তার সঙ্গে আপ্যায়ন পর্ব চলছে। ঘড়ির কাঁটা আরও রাতের দিকে গড়াতেই আসরে এলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন প্রযোজক অতনু রায়চৌধুরী, অভিনেত্রী ইশা সাহা-সহ আরও অনেকে। দেব তাঁকে জড়িয়ে ধরতেই মাথায় হাত বুলিয়ে আদর বুম্বাদার। তার পর সাংবাদিকদের উদ্দেশে বললেন, “আসলে ‘টেক্কা’ হল তিন নায়কের গল্প। দেব, রুক্মিণী মৈত্র, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।” তাঁর কথার মধ্যেই টেবিলে হাজির উদ্যাপনের কেক। তাকে ঘিরে দেব, সুজন নীল মুখোপাধ্যায়, আরিয়ান ভৌমিক, সৃজা দত্ত, বুম্বাদা স্বয়ং।
নিজের প্রযোজনা সংস্থা খোলার পর থেকেই দেবের নায়ক থেকে অভিনেতায় উত্তরণ। তিনি দর্শকমনে সেই ছাপ ফেলেছেন। টলিউড বলছে, এই ছবির দৌলতে একই কৃতিত্বের দাবিদার এ বার রুক্মিণীও। তিনি কী বলছেন? নায়িকার দাবি, “সৃজিতদা আমায় ভরসা করছেন। আমার নিজের উপরে ভরসা নেই! খালি ভয়, পারব তো? শেষে দেখলাম পেরে গেলাম।” শুরু থেকে নিজেকে ভেঙে আসছেন… কথা ফুরোনোর আগেই কথা, “আমার অভিনীত প্রত্যেকটি চরিত্র প্রমাণ দেয়। আমি বলতে হয় বলে বলি না,” দাবি নায়িকার। এই ছবিতেও তিনি ছক ভেঙেছেন। নারীত্বের পেলবতা সরিয়ে পুরুষালি হয়েছেন। ছোট চুলে নতুন লুক তাঁর। সাহস করে পরচুলার বদলে যদি নিজেই চুলের ছাঁদ বদলাতেন? রুক্মিণী জানালেন, তাঁর হাতে এখনও কাজ রয়েছে। ফলে, ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না। তার পরেই দাবি, “উইগ পরে ফোটোশুট করেছি। ভাইরাল কিন্তু সব ছবি।”
দেব আর তাঁর ‘দেবী’। নিজস্ব চিত্র।
ভাইরাল ‘মায়া’কেও যে দর্শক প্রতি পুজোয় চাইছে? হলুদ গাউন সামলে, টোল ফেলা হাসিতে চারপাশ মাতিয়ে রহস্যময় উত্তর এল, “বলছেন দর্শক চাইছে? সৃজিতদা আভাস দিয়েছেন, দর্শক চাইলে ‘মায়া’ তাঁর পুলিশ ব্রহ্মাণ্ডের অন্যতম আধিকারিক প্রবীর রায়চৌধুরীর সহকারী হয়েও ফিরতে পারেন!”