তোড়জোড়: ফের খোলার আগে জীবাণুনাশের কাজ। বুধবার, দক্ষিণ কলকাতার একটি হলে। নিজস্ব চিত্র
অর্ধেক আসন ভর্তি করার শর্তে আজ, বৃহস্পতিবার হল খুলছে। তবে তাতে যুগলেরাও পাশাপাশি বসতে পারবেন কি না, রয়েছে সন্দেহ। কোভিড-বিধির শর্ত মানলে সিনেমা হলে অন্তত শুরুর পর্যায়ে এই দূরত্বটাও তাঁদের সহ্য করতে হবে। আনলক-৫ পর্বে কেন্দ্রীয় সরকারের সিনেমা হল খোলার নির্দিষ্ট দিনেও অবশ্য কলকাতায় শতকরা ৮০ ভাগ সিনেমা হল বন্ধই থাকছে। হাতে গোনা সিঙ্গল স্ক্রিন ও মাল্টিপ্লেক্স খুলবে। তবে শুক্রবার আরও কয়েকটি হল খোলার কথা। বেশ কয়েকটি হল আবার জল মাপছে। পুজোর ঠিক আগে তারা দরজা খুলবে। পূর্ব ভারতের প্রযোজক, পরিবেশক, প্রদর্শকদের সংগঠন ইম্পা সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার নন্দন এবং বেলঘরিয়ার রূপমন্দির নামের একটি হল খোলার কথা। সেই সঙ্গে আইনক্সের স্বভূমি ও মধ্যমগ্রামে শো চালু হচ্ছে। হাওড়ার একটি মাল্টিপ্লেক্সও খোলার কথা।
কী বাধা রয়েছে হল খোলার পথে? ইম্পা-র কোষাধ্যক্ষ শান্তনু রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘প্রধানত নতুন সিনেমার অভাব। তবে এই দুর্দিনে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের ছবি এবং লকডাউনের আগে মুক্তিপ্রাপ্ত কিছু বাংলা-হিন্দি ছবিতেই ভরসা করতে হচ্ছে।’’ আরও একটি বড় সঙ্কট হল ছবি দেখানোর ডিজিটাল পরিষেবা সংস্থার সঙ্গে মতভেদ। প্রিয়া ছাড়াও শিলিগুড়ি, বৈদ্যবাটী, বালুরঘাট, হলদিয়া, দুর্গাপুরে সিঙ্গল স্ক্রিন ও মাল্টিপ্লেক্সের কর্তা অরিজিৎ দত্ত বলছেন, ‘‘পুরনো ছবির ক্ষেত্রেও কোনও কোনও ডিজিটাল পরিষেবা সংস্থা বেশি টাকা চাইছে। এটা সমস্যার।’’
যদিও সিনেমা দেখানোর ডিজিটাল প্রযুক্তি সংস্থা ইউএফও-র তরফে রাজকমল চৌরাসিয়া বলছেন, ‘‘লকডাউন-পরবর্তী পর্যায়ে সিনেমার এই সঙ্কটে নতুন মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি আপলোডের নির্ধারিত মূল্যে আমরা ৫০ শতাংশ ছাড় দেব। আর পুরনো ছবির ক্ষেত্রে শুধু নিয়ে আসার খরচটুকু দিতে হবে।’’ তবে অন্তত ২১ অক্টোবরের আগে বড়সড় নতুন ছবি মুক্তির সম্ভাবনা কম। আর পুজোয় কয়েকটি বাংলা ছবি মুক্তি পেলেও নতুন হিন্দি ছবির দেখা মিলবে না।
আরও পড়ুন: তারকাদের গলায় স্বস্তির সুর
আরও পড়ুন: সৌমিত্রের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ, উন্নতি হয়েছে শারীরিক অবস্থার
নানা ধরনের সংশয়ও রয়েছে সিনেমা হল বা মাল্টিপ্লেক্সগুলির মধ্যে। নবীনা-র নবীন চৌখানি ২১ তারিখের আগে হল খুলবেন না। প্রাচী, বসুশ্রীর মতো হল শুক্রবার খোলার কথা। প্রিয়া শনিবার থেকে শো চালুর চেষ্টায়। একটি বিষয়ে ছোট-বড় সিঙ্গল স্ক্রিনগুলিও একমত, কাগজের টিকিট ব্যবহার হবে না। স্মার্টফোনহীন দর্শকের কাছে এসএমএসে হলে ঢোকার ছাড়পত্র পৌঁছে যাবে। আইনক্সের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা অমিতাভ গুহঠাকুরতা বলছেন, ‘‘পরিস্থিতি বুঝে ধাপে ধাপে বাকি মাল্টিপ্লেক্স খোলারও প্রস্তুতি চলছে।’’
আরও পড়ুন: ‘ফেঁসে গেছি আমি অকালে’! বিয়ে করে আফসোস ‘শ্যামা’র?
তবে বেশির ভাগ হল কর্তৃপক্ষই একসঙ্গে টিকিট কেটে আসা দর্শকদের পাশাপাশি বসার বিধিনিষেধ নিয়ে অস্বস্তিতে। জনৈক হল আধিকারিক বলছেন, ‘‘একই পরিবারের দু’জন বা যুগলকে পাশাপাশি বসতে না দিলে অনেকেই হলবিমুখ হতে পারেন।’’ তবে তাঁর আশা, ‘‘চিন, জাপানের মতো অনেক দেশেই ধাপে ধাপে সিনেমা হলে দর্শক-সংখ্যা বাড়ানোর অনুমতি মিলছে। এখানে কী হবে, তা নির্ভর করছে কোভিড পরিস্থিতির উপরেই।’’