এই প্রথম কোনও প্রেক্ষাগৃহ টিকাকরণ কেন্দ্রে রূপান্তরিত হবে।
প্রিয়া সিনেমা হল রূপান্তরিত হতে চলেছে টিকাকরণ কেন্দ্রে। প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানিয়েছেন, ‘‘মেডিকা হাসপাতালের সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়েছে তাঁর। আপাতত হাসপাতালে অতিমারির যথেষ্ট সংখ্যক টিকা নেই। সব ঠিক থাকলে চলতি মাসের মাঝামাঝি চালু হতে পারে এই বিশেষ ব্যবস্থা।’’ ভাবনা বাস্তবায়িত হলে দেশে এই প্রথম কোনও প্রেক্ষাগৃহ টিকাকরণ কেন্দ্রে রূপান্তরিত হবে।
হঠাৎ কী ভাবনা থেকে এই পদক্ষেপ? দেশপ্রিয় পার্কের উল্টো দিকে অবস্থিত জনপ্রিয় প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধারের দাবি, তিনি নিজে টিকা নিতে গিয়ে দেখেছেন কত অসুবিধা আর কষ্ট পেতে হচ্ছে মানুষকে। অরিজিতের দাবি, ‘‘বেশি কষ্ট পাচ্ছেন প্রবীণরা। গরমের মধ্যে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। টিকা নিচ্ছেন। টিকা নেওয়ার পরেও পর্যবেক্ষণের জন্য ভিড়ের মধ্যে বসে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন।’’ এই কষ্টের হাত থেকে কলকাতাবাসীদের মুক্তি দিতে এই ভাবনা তাঁর।
সেই মতো মেডিকা হাসপাতালের সঙ্গে প্রাথমিক কথা বলার পরেই রাজি ২ পক্ষ। অরিজিতের চিন্তা অনুযায়ী, একদম নীচে নাম নথিভুক্তের ব্যবস্থা থাকবে। গরমে বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করার বদলে নীচে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রেক্ষাগৃহে বসতে পারবেন টিকাগ্রহণকারীরা। সেই সময় পর্দাজুড়ে চলবে জনপ্রিয় ছবি! উপরের তলে টিকা নেওয়ার পরে পর্যবেক্ষণের জন্য ফের থাকবে ঠান্ডাঘরে বসার সুযোগ। এখানেও বাড়তি পাওনা সিনেমা। টিকাকরণের যাবতীয় ব্যয়ভার হাসপাতালের। একই মূল্যে দেওয়া হবে টিকা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রেক্ষাগৃহ বা সিনেমা দেখানোর খরচ কে দেবেন? অরিজিতের দাবি, ‘‘সেই খরচ সামান্য। আলোচনায় ঠিক হবে। একা বহন করতেও খুব সমস্যা হবে না।’’
অরিজিতের জনসেবার এই নিদর্শন প্রসঙ্গে বাকি প্রেক্ষাগৃহের মালিকেরা কি ভাবছেন?
আনন্দবাজার ডিজিটাল যোগাযোগ করেছিল নবীনা সিনেমা হলের মালিক নবীন চোখানির সঙ্গে। নবীনের অকপট জবাব, ‘‘মেডিকা হাসপাতালের সঙ্গে সম্ভবত অরিজিত দত্তের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন পরিচালক-প্রযোজক-অভিনেতা শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।’’ অন্তত তিনি এমনটাই শুনেছেন। তাঁর সঙ্গে এমন প্রস্তাব নিয়ে কেউ যোগাযোগ এখনও করেনি। যোগাযোগ হলে কি তিনি রাজি হবেন? চোখানির দাবি, আগে নিয়মকানুন জানবেন। পুরোটা ভেবে দেখবেন। কারণ, হল চালানো আর টিকাকরণ কেন্দ্র চালানো এক নয়। তাঁর কর্মীদের সবার এখনও টিকাকরণ হয়নি। এই দিকটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। তবে সরকার থেকে এ রকম কোনও প্রস্তাব এলে তিনি দ্বিতীয় বার ভাববেন না, এমনটাও অকপটে জানিয়েছেন নবীন।