ব্যক্তি নয়, সংস্থার কাছে আইনই শেষ কথা, আরিয়ান-কাণ্ডে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই দাবি করলেন নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর কর্তা।
আরিয়ান-কাণ্ডে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই হাল ধরলেন নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর কর্তা স্বয়ং। তাঁর দাবি- ব্যক্তি নয়, সংস্থার কাছে আইনই শেষ কথা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই লেগেছে রাজনীতির রং।
বুধবার জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) মুখপাত্র তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক অভিযোগ করেন, ২ অক্টোবর মুম্বই উপকূলে প্রমোদতরীতে এনসিবি'র অভিযান ছিল সম্পূর্ণ ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। অভিযান চালানোর সময়ে সেখান থেকে কোনও মাদক বাজেয়াপ্ত হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি, অভিযানের সঙ্গে যুক্ত দুই ব্যক্তির উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এনসিপি-র দাবি, ওই দুই ব্যক্তির এক জন বিজেপির সদস্য।
এনসিবি-র তদন্ত প্রক্রিয়ার দিকে বিশ্বাসঘাতকতার আঙুল উঠতেই বৃহস্পতিবার মুখ খুলেছেন এনসিবির আঞ্চলিক অধিকর্তা সমীর ওয়াংখেড়ে। তিনি জানান, সংস্থা ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছে। আঞ্চলিক কর্তার দাবি, ‘‘আমরা অত্যন্ত দক্ষ এবং পেশাদার। আমাদের কাছে ব্যক্তি নির্বিশেষে প্রাধান্য পায় ‘এনডিপিএস’ আইন।’’
আরিয়ান-কাণ্ডে ইতিমধ্যেই লেগেছে রাজনীতির রং।
সমীরের পাল্টা জবাব ছাড়াও তদন্তকারী দলের সঙ্গে থাকা দুই ব্যক্তি বিষয়েও বিবৃতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাদের দাবি, ২ অক্টোবর প্রমোদতরী অভিযানের সময় মনীশ ভানুশালী এবং কিরণ গোসাভি এনসিবিকে সাহায্য করেছিলেন। এঁরা ‘স্বাধীন সাক্ষী’। বাইরে থেকে দলকে তদন্তে সাহায্য করেছেন।
এ প্রসঙ্গে এনসিপি-র জাতীয় মুখপাত্র এবং প্রতিমন্ত্রী নবাব মালিকের অভিযোগের তীব্র নিন্দা করেন এনসিবি'র ডেপুটি ডিজি জ্ঞানেশ্বর সিংহ। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‘সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। সংস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এবং এনসিবি-র পূর্ববর্তী পদক্ষেপের প্রতিশোধ নিতেই এই মিথ্যে অভিযোগ।’’
শাহরুখ খান এবং তাঁর ছেলে আরিয়ানের সমর্থনে নবাব আলি অভিযোগ করেছিলেন, তল্লাশির সময়ে কোনও মাদক মেলেনি। তা নিয়েও মতামত জানিয়েছেন এনসিবি'র ডেপুটি ডিজি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য, ধারাবাহিক ভাবে মাদক সরবরাহ বন্ধ করা এবং মাদকাসক্তদের পুনর্বাসন। পাশাপাশি, মহারাষ্ট্র ও গোয়াকে সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত করাও লক্ষ্য।’’ তাঁর দাবি, এই কারণে মাদক সংক্রান্ত কোনও তথ্য পেলেই সংস্থা সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে যায় ঘটনাস্থলে। সমাজের যত গণ্যমান্য ব্যক্তিই তার সঙ্গে যুক্ত থাকুন, তাঁর বিরুদ্ধে এনসিবি পদক্ষেপ করতে পিছপা হয় না বলেও দাবি জ্ঞানেশ্বর সিংহের।
নিজেদের কর্মকাণ্ডের স্বপক্ষে জ্ঞানেশ্বর সিংহ আরও জানিয়েছেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক বছরে, ভারতে এনসিবি তাদের কাজে অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছে। ইতিমধ্যেই ১০৬টিরও বেশি মামলায় ৩০০ জনেরও বেশি অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। মুম্বইয়ের ডোংরিতে মাদক তৈরির একটি কারখানাসহ ২টি কারখানা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত হয়েছে মাদক ব্যবসায়ীদের আর্থিক ও অন্যান্য সম্পত্তি।