প্রান্তিক -অঙ্কিতা
কী বিপরীত দৃশ্য! ‘ওঠ ছুঁড়ি তোর বিয়ে’ বলে রণবীর কপূর ধুমধাম করে বিয়ে করে নিলেন আলিয়া ভট্টকে। একই কথা অঙ্কিতা চক্রবর্তীকেও কিন্তু বলেছেন প্রান্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটা এমন গোপনে যে টলিউড দূরে থাক, দুই পরিবারের কেউ ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি!
মাত্র ১০ দিনের কড়ারে নবদম্পতি প্রান্তিক -অঙ্কিতা। ইন্ডাস্ট্রি টের পেল না, জানুয়ারিতে বিয়ে হয়ে গেল তাঁদের। তার আগে ১০ বছর প্রেম করেছেন তাঁরা। সেই প্রেমের খবর অবশ্য টলিউডের কমবেশি প্রায় সবাই জানতেন। এত চুপিচুপি বিয়ে সারলেন কেন? অঙ্কিতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। হাসতে হাসতে জবাব অঙ্কিতার, ‘‘ঢাকঢোল পিটিয়ে কিচ্ছু করতে চাইনি। আমরা বিয়ে করছি, এই অনুভূতিটা যেন আমাদের ঘিরে থাকে সেটাই চেয়েছিলাম। প্রচুর ভিড় চাইছিলাম না। তাই ছোট আয়োজন।’’ যুগলে একেবারেই চাননি, কতটা সাজানো হল, খাবারের তালিকায় কী কী পদ, নতুন বউ কত গয়না পেল, কে অসন্তুষ্ট হল--- বিয়ের বাসরে এ সমস্ত অবাঞ্ছিত আলোচনা জায়গা করে নিক।
১০ বছরের প্রেম। ১০ দিনের মাথায় বিয়ে? পর্দার ‘পবিত্র পাপী’র দাবি, ‘‘দু’জনের বাড়ি মুখোমুখি। অঙ্কিতা জানালেন, সকাল থেকে রাতের যে কোনও সময় দেখা হত। দুপুরে প্রান্তিকের বাড়িতে আড্ডা দিলাম। রাতে সবান্ধবে প্রান্তিক আমার বাড়িতে। থেকেও গিয়েছেন একে অপরের বাড়িতে কত দিন!
অঙ্কিতা বলেন, “সেই সময় যদিও শুধু বন্ধুত্ব। এক ছিঁটে ফ্লার্ট পর্যন্ত করিনি। আচমকাই দেখি বন্ধুত্বের হাত ধরে প্রেম হাতছানি দিচ্ছে। সম্পর্কটা যেন অন্য দিকে মোড় নিচ্ছে। সেই ডাকে সাড়া দেব কিনা ভাবতে মাত্র ১০ দিন সময় নিয়েছিলাম। তার মধ্যে প্রান্তিকের একটি জামা আমার একটি শাড়ি কিনে উঠতে পেরেছি।’’
দুই বাড়ির মা-বাবার অভিমানে মুখ ভারী হয়েছে। বিশেষ করে অঙ্কিতার বাবা। একমাত্র মেয়ের বিয়ে কত জমকালো ভাবে দেবেন! তা নয়, সোহিনী সরকার, সৌম্যজিৎ সহ ১৮ জন বন্ধুকে নিয়ে সিকিমের ওল্ড হোমস্টেক মনেস্ট্রির নীচে একটি হোমস্টে-তে সাতপাক সম্পন্ন! গোটা আস্তানা নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছিলেন প্রান্তিক-অঙ্কিতা। আস্তে আস্তে মান ভেঙেছে বাড়ির বড়দের। তা হলে অনুষ্ঠান কবে? ‘‘এখন কিচ্ছু নয়। সবে জানিয়েছি সবাইকে। এ বার তো পার্টি, হুল্লোড় লেগেই থাকবে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে সে গুলোই উপভোগ করব। এ ভাবে গোটা একটা বছর ধরে বিয়ের আনন্দ চলবে। বছর ঘুরলে পরিবার, আত্মীয়, ইন্ডাস্ট্রিকে এক ছাদের নীচে নিয়ে উদযাপন’’, বলেছেন অঙ্কিতা।
নতুন সংসার কতটা গুছিয়ে উঠলেন নবদম্পতি? অভিনেত্রীর কথায়, হাতে একমুঠো কাজ। তাঁর এখন দুটো বাড়ি। যতই বিয়ে করুন, ব্যস্ততার চোটে দু’জনে মোটেই সারা ক্ষণ গায়ে গায়ে লেপ্টে নেই! বরং দূরত্ব বজায় রেখেই চলছেন। দুটো বাড়ির সংসার একা হাতে সামলাতে হচ্ছে অঙ্কিতাকেই। নিজেদের কাজ নিজেদের বাড়িতে আলাদা আলাদাই সারছেন তাঁরা। তারই ফাঁকে দুই বাড়ির দু’টি জানলায় অধীর প্রতীক্ষায় দু’টি মুখ। চকিত চাউনিতে মিলন ঘটছে চার চোখের। অঙ্কিতার কথায়, ‘‘এরই নাম প্রেম।’’