পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত শনিবার কাঞ্চনের যে রূপ দেখলাম, ৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে তা আগে কখনও দেখিনি। সংবাদমাধ্যমে ওর আর শ্রীময়ীর সম্পর্কে মুখ খুলেছি। সেটা আমার স্বামী মেনে নিতে পারেনি। ফোন করেছিল আমাকে। বলছিল, ওর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। কিন্তু তত ক্ষণে মামনি (সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়) এ সব খবর জানতে পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দাদা আর আমি ছুটতে ছুটতে নিউ আলিপুরের বাড়িতে এসেছি ওঁকে দেখতে। আমি কাঞ্চনকে জানালাম, কথা বলার অবস্থায় আমি নেই। কিন্তু ও তখনও আমাকে ভয় দেখিয়ে চলেছে। অন্য দিকে শ্রীময়ীও অনবরত ফোন করেছে। ওর ফোন তখন আমি তুলিনি ।
তবে আমি জানতাম, এত সহজে ওরা আমাকে ছেড়ে দেবে না। চেতলার বাড়িতে গিয়ে হানা দেবে, সেটা আঁচ করতে পেরেছিলাম। সেখানে আমার বৃদ্ধ মা-বাবা রয়েছেন। আমি তখনই দাদার সঙ্গে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ি । চেতলার বাড়ি থেকে দিদিকে নিয়ে ফেরার পথে কাঞ্চন আমাদের গাড়ি আটকায়। রাস্তায় দাঁড়িয়েই আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। আমি রাজি না হলে কাঞ্চনকে সরিয়ে এগিয়ে আসে শ্রীময়ী। আমাকে হুমকি দেয়, “তুই জানিস না কার লেজে পা দিয়েছিস।” কাঞ্চন তখনও আমার গাড়ির লক ধরে টানাটানি করে চলেছে, যাতে আমাকে গাড়ি থেকে রাস্তায় নামিয়ে আনতে পারে। এত হেনস্থার পরেও আমাকে নিজের জায়গায় অনড় দেখে রাগ সামলাতে পারেনি শ্রীময়ী। শাসিয়ে বলে, “তুই জানিস না, তুই কী ভুল করেছিস। তোকে আমি দেখে নেব।”
কাঞ্চন আর শ্রীময়ী যখন আমাকে ভয় দেখাচ্ছে, আমার ছেলে তখন গাড়িতে বসে। নিজের বাবার এই রূপ দেখে ও ভয়ে ছটফট করছে। সারা জীবন ওকে আগলে রেখেছিলাম। ওকে যাতে কোনও দিন এ সব না দেখতে হয়, সেই জন্যই আমি চেতলার বাড়িতে আলাদা থাকতাম। কিন্তু শেষ রক্ষাটুকু হল না। তাই নিজেকে বাঁচাতে, নিজের সন্তানকে বাঁচাতে নিউ আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করি দু’জনের নামে।
পরিবারের কথা ভেবে বহু দিন চুপ করেছিলাম। কাঞ্চন কখনও আমার বা আমাদের সন্তানের খোঁজ রাখে না। আমার মা যখন হাসপাতালে ছিলেন, তখনও তাঁর কোনও খবর নেয়নি । এই অতিমারির আবহে একবারও জানতে চায়নি আমি করোনার টিকা নিয়েছি কি না। অথচ কৈফিয়ত চেয়েছিল শ্রীময়ীর সঙ্গে ওর সম্পর্ক নিয়ে কেন আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে মুখ খুলেছি ।
এখন শুনছি ওরা নাকি ১০ বছর ধরে একে অপরকে চেনে। অথচ বিয়ের ৫ বছর পর্যন্ত শ্রীময়ীর নাম শুনিনি কাঞ্চনের মুখে। এত গুঞ্জনের পরেও নিজেদের দাম্পত্য বাঁচাতে চুপ করে থাকব ভেবেছিলাম। কিন্তু শেষমেশ আর ধৈর্য রাখতে পারলাম না। পুলিশের সাহায্য নিতে বাধ্য হলাম।