১৯৯৪ এবং ১৯৯৫। এই দু’টো বছর ছিল হিন্দি ছবির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই দু’বছরে এমন দু’টি ছবি মুক্তি পেয়েছিল, যা হিন্দি ছবির ইতিহাসে অন্যতম সেরা মাইলফলক বলা যেতে পারে।
‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ এবং ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল সলমন খান এবং মাধুরী দীক্ষিতের ছবি ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’। আর তার পরের বছর মুক্তি পায় ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’।
এই দু’টি ছবিই বক্স অফিসে চূড়ান্ত সফল হয়েছিল। ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ভারতীয় হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে সর্বাধিক উপার্জনকারী ছবি হয়ে উঠেছিল সে সময় এবং ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’ সবচেয়ে বেশি দিন ধরে সিনেমা হলে চলতে থাকা ছবি ছিল।
মু্ক্তির পর ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ সে সময় ৭২ কোটি টাকা আয় করেছিল এবং ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’ আয় করেছিল ৫৫ কোটি টাকা। মুক্তির পর এই ছবি টানা ১ হাজার ২৫০ সপ্তাহ ধরে চলেছিল।
কিন্তু জানেন কি, মুক্তির ২৬ বছর পরও এই দু’টি ছবি একই ভাবে দর্শকদের বিনোদন দিয়ে চলেছে এবং এখনও রাজস্থানের জয়পুরের একটি সিনেমা হল দু’টি ছবি চালিয়ে বড় অঙ্কের লাভও করছে?
আরও বিস্ময়ের বিষয় হল দু’টি ছবির মুক্তির পর থেকে একাধিকবার টিভিতে দেখিয়েছে। যাঁরা সিনেমা হলে গিয়ে ছবিগুলি দেখছেন, সেই সব দর্শকদের কাছে নতুন তো নয়ই, উপরন্তু একাধিকবার টিভিতে দেখে ছবি দু’টির সংলাপও হয়তো তাঁদের মুখস্থ হয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও এই মন্দার বাজারে জয়পুরের ওই সিনেমা হল লাভ করছে।
রাজ মন্দির নামে ওই সিনেমা হল-এ গত সপ্তাহে ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’ দেখানো হয়েছিল। দিনে ৩টি শোয়ে এই ছবিটিই দেখানো হচ্ছিল। ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত এই ছবিটি চলেছে।
এই কয়েক দিনেই অন্তত ৩ হাজার দর্শক ছবিটি রাজ মন্দিরে গিয়ে দেখেছেন। ৩ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে।
গত ৫ মার্চ থেকে রাজ মন্দিরে দেখানো শুরু হয়েছে ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’। প্রথম ৩ দিনেই হাজারেরও বেশি দর্শক এবং দেড় লাখ টাকার টিকিট বিক্রি!
মুম্বইয়েও এমন একটি সিনেমা হল রয়েছে, যা আজও ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’-র উপর নির্ভর করেই চলছে। ওই সিনেমা হলে প্রতিদিন অন্তত ২০০ থেকে ৩০০ মানুষ এই ছবির টানেই টিকিট কেটে প্রবেশ করেন।
মুম্বইয়ের ওই হলের নাম ‘মরাঠা মন্দির’। লকডাউনের সময় প্রদর্শনী বন্ধ রেখেছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত নভেম্বর থেকে পুনরায় ছবির প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
লকডাউনের পর যেখানে সিনেমা হলগুলির ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়েছে, দর্শক টানতে রীতিমতো কসরত করতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে, সেখানে শাহরুখ-কাজলের এই ছবি রোজ দর্শকদের সিনেমা হলমুখী করছে।
রোজ বেলা সাড়ে ১১টায় এই ছবি দেখানো হয়। এই ছবির ক্ষেত্রে একটি বিষয় এখনও বদলাননি কর্তৃপক্ষ। এর টিকিট মূল্য। ব্যালকনি ৩০ টাকা, ড্রেস সার্কল ২৫ টাকা এবং স্টল টিকিট ২০ টাকা।