বাঁ দিকে অনুরাগ এবং ডান দিকে পায়েল।
পরিচালক অনুরাগ কশ্যপের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগে মুম্বইয়ের ভারসোভা থানায় এফআইআর দায়ের করলেন অভিনেত্রী পায়েল ঘোষ। মঙ্গলবার পায়েলের আইনজীবী সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭৬, ৩৫৪, ৩৪১ এবং ৩৪২ ধারা অনুযায়ী অনুরাগের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।
গত শনিবার বাঙালি অভিনেত্রী পায়েল ঘোষ টুইটারে প্রধানমন্ত্রীকে ট্যাগ করে একটি পোস্ট করেন। পায়েল লেখেন, পাঁচ বছর আগে নিজের বাড়িতে তাঁকে যৌন হেনস্থা করেন অনুরাগ। ওই অভিনেত্রী এ-ও অভিযোগ করেন, কুপ্রস্তাব দেওয়ার পর পায়েল তা প্রত্যাখান করায় অনুরাগ ‘অশালীন’ শব্দ ব্যবহার করে বলেছিলেন, ‘একটা ফোন করলেই হুমা, রিচা এবং মাহি চলে আসবে।”
এর পরেই পায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে অনুরাগকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে শুরু করেন কঙ্গনা। চুপ করে থাকেননি অনুরাগও। প্রধানত কঙ্গনার উদ্দেশে তিনি টুইটারে লেখেন, ‘‘দারুণ ব্যাপার যে আমাকে চুপ করানোর চেষ্টা করতে এত সময় লেগে গেল। সে না হয় ঠিক আছে। কিন্তু আমাকে চুপ করানোর জন্য এত মিথ্যে বলতে হচ্ছিল যে নারী হয়ে অন্য এক নারীকে সেই মিথ্যেয় শামিল করতে হল। ম্যাডাম, অন্তত একটু শালীনতা বজায় রাখুন। আমি শুধু এইটুকুই বলব যে, যা যা অভিযোগ আনা হয়েছে, সব ভিত্তিহীন। আমাকে কালিমালিপ্ত করতে গিয়ে আমার কলাকুশলী, এমনকি বচ্চন পরিবারকে টেনে আনাটা মোটেই বুদ্ধির কাজ হয়নি!’’
A post shared by Ajit Shil (@ajitshil83) on
এ বিষয়ে একটি বিবৃতিও জারি করে অনুরাগ বলেন, “#মিটু আন্দোলনের গুরুত্বকে লঘু করতেই এ ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক একটা বিষয় যে #মিটু-র মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনকে ব্যক্তিস্বার্থে ভোঁতা করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিষয়টিকে ব্যক্তি আক্রমণে নামিয়ে আনা হচ্ছে।” অনুরাগ আরও বলেন, “এ ধরনের মনগড়া অভিযোগের ফলে আন্দোলনের গুরুত্বটা যেমন লঘু হয়ে যাচ্ছে, তেমনই যাঁরা সত্যিই যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছেন তাঁদের আবেগ নিয়ে খেলা হচ্ছে।”
পায়েল তাঁর টুইটে যে তিন বলি অভিনেত্রী অনুরাগের ‘লালসার শিকার’ হয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন সেই তিন অভিনেত্রী অর্থাৎ হুমা কুরেশি, রিচা চাড্ডা এবং মাহি গিল গোটা ঘটনায় অনুরাগেরই পক্ষ নিয়েছেন। তিন জনেই একই সুরে বলেছেন, অনুরাগের কাছ থেকে কোনও রকম খারাপ ব্যবহার তাঁরা পাননি।
A post shared by Huma S Qureshi (@iamhumaq) on
প্রথমে মাহি গিল এবং পরে রিচা চাড্ডা অনুরাগের হয়ে পাশে দাঁড়ান। আর মঙ্গলবার অনুরাগের হয়ে মুখ খোলেন হুমা। ‘অনুরাগ কখনও এ সব বলতে পারেন না’, রবিবার এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্টতই জানিয়ে দেন মাহি। অন্য দিকে, ইনস্টাগ্রামে রিচার আইনজীবী সবিনা বেদী সচার জানান, অনুরাগের যৌন হেনস্থার প্রসঙ্গে তাঁর মক্কেলের নাম অন্যায় ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এমন কোনও ঘটনা আদৌ ঘটেনি। তবে রিচা বিশ্বাস করেন যিনি কাজের জায়গায় বা অন্যত্র যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন, তাঁর বিচার পাওয়া উচিত। রিচার আইনজীবী জানান, পায়েল ঘোষের বিরুদ্ধে তাঁর মক্কেল আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আরও পড়ুন- ‘সুপার ড্রাগ’, রণবীরকে বলেছিলেন দীপিকা, ভাইরাল ছবি
বাকি ছিলেন হুমা। এ দিন তিনিও অনুরাগকে ক্লিনচিট দেন। পাশপাশি অকারণে তাঁর নাম জরানোয় নাম না করে পায়েলের উপরেও ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
শুধু হুমা, মাহি অথবা রিচা নন তাপসী, রাধিকারাও পাশে দাঁড়িয়েছেন অনুরাগের। যদিও পায়েল বনাম অনুরাগের লড়াইয়ে বলিউডের একাংশ ‘রাজনীতি’-কেই ‘দায়ী’ করছেন। সম্প্রতি সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরেও অনুরাগ বিভিন্ন ভাবে তাঁর মত প্রকাশ করেছেন। যা কেন্দ্রের শাসকদলকে খুব একটা স্বস্তিতে রাখেনি। বারেবারেই তাঁর মতবিরোধ দেখা দিয়েছেন ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ কঙ্গনা রানাউতের সঙ্গে। সেই অনুরাগের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠায় বলিউডের একাংশ ‘রাজনীতি’রই গন্ধ পাচ্ছেন।