বহু দিন ধরেই মনের মানুষের খোঁজ করছিলেন পরিণীতি? তাঁর মায়ের কথায় উদ্বেগের অবসান। ছবি—ইনস্টাগ্রাম
কয়েক মাস ধরেই খবর ভাসছিল মায়ানগরীর আকাশ-বাতাসে। অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়া এবং আপ নেতা রাঘব চড্ডা প্রেম করছেন। কলেজজীবনের বন্ধু তাঁরা, তবে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে দু’জনের কেউ মুখ খোলেননি। পরিবার থেকেও কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি বিয়ে নিয়ে। জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১৩ মে রাঘব-পরিণীতির বাগ্দান হল দিল্লিতে।
সাদা পোশাকে রাজকীয় সাজে পরিণীতির ঠোঁটে ঠোঁট রাখলেন রাঘব। পরিজনের শুভেচ্ছা বর্ষিত হল নবীন জুটির উপর। সব কিছু চুকে যেতে তার পরই মুখ খুললেন পরিণীতির মা রীনা চোপড়া।
কন্যা এবং হবু জামাইয়ের একটি ছবি ভাগ করে নিয়ে রীনা হৃদয়স্পর্শী বার্তা দিয়েছেন সমাজমাধ্যমে। লিখেছেন, “জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যখন তুমি বিশ্বাস করতে বাধ্য যে, ঈশ্বর আছেন মাথার উপর। এটাও তেমন এক ঘটনা।” আরও লিখেছেন, তাঁর মেয়ে আশীর্বাদধন্যা। ঈশ্বরকে অশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি, কন্যা মনের মানুষ খুঁজে পাওয়ায়।
রীনার কথায় অনেকের অনুমান, পরিণীতির বিয়ে নিয়ে চিন্তা ছিল তাঁর। কন্যা কি বহু দিন ধরেই মনের মানুষের খোঁজ করছিলেন? একের পর এক প্রেম ভেঙে যাওয়ায় পরিণীতি মুষড়ে পড়েছিলেন হয়তো । তাই এ বার সন্তর্পণে চেষ্টা করতে চেয়েছিলেন, এমনই অনুমান অনুরাগীদের। রাঘবের সঙ্গে ঘুরছিলেন, অথচ সম্পর্কের কথা কেন অস্বীকার করলেন পরিণীতি? উঠছে সেই প্রশ্নও। বাগ্দান পর্যন্ত সকলেই চুপ। এই নীরবতাই আরও বেশি করে ভাবাচ্ছে বিষয়টা নিয়ে।
আগে এক সাক্ষাৎকারে পরিণীতি জানিয়েছিলেন, কোনও রাজনীতিবিদকে বিয়ে করতে চান না তিনি। তবে, প্রেমে পড়লে যে সব সম্ভব, আবার প্রমাণ করে দিলেন পরিণীতি। কলেজজীবনের বন্ধু রাঘবকে জীবনসঙ্গী হিসাবে বেছে নেওয়ায় মন বোঝা গেল ‘হাসি তো ফাসি’-র অভিনেত্রীরও। অবশেষে পেয়েছেন, যা চাইছিলেন।
জীবনসঙ্গীর মধ্যে কোন কোন গুণ থাকতে হবে, তার ফিরিস্তি দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। পরিণীতি বলেছিলেন, “যাঁকে ভালবাসব, তাঁকে শক্ত মনের মানুষ হতে হবে। তাঁর রসবোধ থাকাটাও খুব জরুরি। তাঁকে দায়িত্ববান এবং পরিণত মনের হতে হবে। আমার থেকে ২০ বছরের বড় হতে পারেন তিনি, তাতে সমস্যা নেই।” তিনি জানান, রোম্যান্টিক ডেটে আগে যাননি তিনি। সত্যি সত্যি প্রেমে পড়লে অবশ্যই ডেট করবেন। শেষমেশ ডেটে গেলেন পুরনো বন্ধুর সঙ্গেই।
পরিণীতি জানান, তাঁর জীবনসঙ্গী হতে চাইলে ঘুরতে ভালবাসতে হবে। অভিনেত্রীকে বলতে শোনা যায়, “আমারই মতো তাঁর আগ্রহের ক্ষেত্র হবে ঘুরতে যাওয়া। সমুদ্র, নদী ভালবাসতে হবে। স্কুবা ডাইভিং করতে চাইবে সে আমার সঙ্গে।”
রাঘব আর পরিণীতির বন্ধুত্বের ভিত্তিই সেই ভ্রমণপ্রেম। লন্ডনে একসঙ্গে কলেজে পড়েছেন। তার পর আলাদা রাজ্যে থেকেও তাঁদের মধ্যে পর্যটন নিয়েই কথা হত। বন্ধুত্ব গভীর হয়েছিল ক্রমশই, সেখান থেকেই প্রেম। প্রথম দিকে অবশ্য প্রকাশ্যে আনতে চাননি কিছুই। ধীরে ধীরে সব খবর জানা যায়। শনিবার বাগ্দানের পর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেল তাঁদের সম্পর্ক। সাদা পোশাকে পরস্পরের হাত ধরলেন যুগল। আংটিবদল সেরে চোখে চোখ রেখে হারিয়ে গেলেন দু’জনে। পরিণীতি তাঁদের একসঙ্গে ছবি পোস্ট করে যা লিখেছেন তার মর্মার্থ এই যে, তাঁর প্রার্থনা পূরণ হল এত দিনে।
দিল্লির কপূরথলা হাউসে রাজনীতি এবং বিনোদন জগতের অতিথিদের সামনে দাম্পত্যে প্রবেশের সুতো কাটলেন যুগল। আংটিবদল সারা। যদিও বিয়ের দিনক্ষণ এখনও রহস্যাবৃত।