ফাইল চিত্র।
এই প্রথম বাংলা ছবির বিষয়বস্তু সার্কাস! এই প্রথম শীতে নয়, গরমের কলকাতায় আসছে সার্কাস। থাকবে তাঁবুর অন্দরের খুঁটিনাটি। খেলা, সেখানকার মানুষদের সুখ-দুঃখ হাসিকান্না। তাঁদের জীবনের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে বইবে এক বর্ষীয়ান দম্পতির জীবনের সুখ-দুঃখ। এ সব নিয়ে গরমের ছুটিতে সপরিবারে দেখার মতো ছবি ‘সার্কাসের ঘোড়া’ উপহার দিতে চলেছেন রাজেশ দত্ত এবং ইপ্সিতা রায় সরকার। যাঁদের তৈরি "আবার বসন্ত বিলাপ", "৬১নং গড়পার লেন" বাঙালি মহল্লার অন্দরমহলের ছবি তুলে ধরেছিল। এই পরিচালক জুটিরও তুরুপের তাস পরান বন্দ্যোপাধ্যায়-লিলি চক্রবর্তী জুটি। এ ছাড়াও আছেন দীপঙ্কর দে, ইন্দ্রাণী হালদার, সাহেব চট্টোপাধ্যায়, দেবাশিস ঘোষ, সুমিত সমাদ্দার, দেবপ্রসাদ হালদার, অনন্যা সেনগুপ্ত সহ অন্যান্যরা। এই ছবিতেই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে প্রথম জুটি বেঁধেছেন গৌরব চট্টোপাধ্যায়, দেবলীনা কুমার। তবে কোন ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁদের, এই মুহূর্তে ভাঙতে রাজি নন পরিচালক।
শহর কলকাতার শীতে সার্কাস দেখার অভ্যেস আছে? হঠাৎ কেন গরমে তার আগমন? আনন্দবাজার অনলাইনকে ঈপ্সিতার যুক্তি, ‘‘এও আরও এক অকালবোধন বলতে পারেন। এখন শীতে শহরে সার্কাস আসে। কিন্তু বাচ্চারা মা-বাবার হাত ধরে আর সেখানে ভিড় জমায় না। কারণ, তাদের হাজার বিনোদনের উপকরণ রয়েছে। তাই মনে হল, গরমেই ছবির মধ্যে দিয়ে এ বছর সার্কাস আসুক। আগের মতো সপরিবারে দেখে সবাই আনন্দ পাবেন।’’
শ্যুটিংয়ে ইন্দ্রাণী হালদার
ছবিতে সমান্তরাল ভাবে বলা হয়েছে দুটো গল্প। একটি গল্পের মুখ্য ভূমিকায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার মানিকবাবু আর তাঁর স্ত্রী। তাঁরা কলকাতায় থাকেন। মানিকবাবুর স্ত্রী, পুত্রকে নিয়ে থাকেন বিদেশে। প্রবীণ প্রাক্তন সেনা অফিসার তাঁর নাতির অভাব অনুভব করেন। যদিও স্কাইপে রোজই দেখা হয় দাদু-নাতির। কিন্তু ছুঁতে পারেন কই? মানিকবাবু সেই অভাব পূরণ করেন বন্ধুর নাতি তাতাইকে দিয়ে। তাকে পক্ষীরাজ ঘোড়ার গল্প শোনাতে গিয়ে ঘোড়া দেখানোর প্রসঙ্গ ওঠে। তারই হাত ধরে জায়গা করে নেয় সার্কাস। এটিই, দ্বিতীয় গল্প। পাশাপাশি থাকবে টানাপড়েন, মানিকবাবু কি পারবেন তাতানের স্বপ্নপূরণ করতে? তাতান কি পারবে মানিকবাবুর নাতির জায়গায় বসতে? উত্তর লুকিয়ে ছবিতে।
পরিচালকের কথায়, ছবিতে তিনটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।প্রথমটি, দাদু-নাতির স্নেহের সম্পর্ক। দ্বিতীয়টি, ছবিটি দেখতে দেখতে দর্শকরা ফিরে পাবেন হারিয়ে যাওয়া সময়। তৃতীয়ত জানতে পারবেন, মুখে রং মেখে জীবনকে বাজি রেখে যাঁরা সার্কাসে খেলা দেখিয়ে বেড়ান তাঁদের কথা। ছবিতে যেহেতু সার্কাস তাই ২০১৯-এর শীতে একটি প্রথম সারির সার্কাস সংস্থার সঙ্গে চার দিনের চুক্তি করেছিলেন পরিচালক জুটি। চার দিন ধরে শ্যুট চলেছে সেই তাঁবুতে। সার্কাসের এক জোকার ধনঞ্জয় অভিনয় করেছেন ছবিতে। সুমিত সমাদ্দারের সহকারী হিসেবে পর্দায় দেখা যাবে তাঁকে। ছবি মুক্তির কথা ছিল ২০২০-তে। অতিমারির কারণে পিছিয়ে তা মুক্তি পাচ্ছে ২০২২-এ। ছবিতে মাত্র একটি গান। গেয়েছেন জোজো। কথা ও সুরে সুমিতা ঘোষ। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন শ্রায়ামিত ফিল্মস প্রাইভেট লিমিটেডের কর্ণধার দেবাশিস ঘোষ।