Papon

আমার নাচতে ভালই লাগে, বললেন পাপন

মর্মস্পর্শী গান দিয়েই পাপনের পরিচিতি। তবে ডান্স নাম্বারও পছন্দের। খোলামেলা পাপন

Advertisement

সায়নী ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৪৬
Share:

পাপন

তাঁর ভরাট গলায় ‘সুভাষজি সুভাষজি’ গমগম করছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল প্রাঙ্গণে। গত ২৩ জানুয়ারি নেতাজির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করতে কলকাতায় এসেছিলেন পাপন। অতিমারির পরে এই প্রথম লাইভ শ্রোতার সামনে গাইলেন শিল্পী। তাই আলাদা উত্তেজনা ধরা পড়ল তাঁর কণ্ঠে, ‘‘যখন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাই, তখন ট্রাভেল করা নিয়ে একটু চিন্তিত ছিলাম। তবে এত দিন পরে লাইভ অডিয়েন্সের সামনে পারফর্ম করতে পারব, সেই লোভ সংবরণ করতে পারিনি।’’

Advertisement

যে কোনও পারফর্মিং আর্টিস্টের মতোই লকডাউনের সময়টা ভাল কাটেনি পাপনের। সব কিছু স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় বসেছিলেন। লাইভ কনসার্ট, রেকর্ডিং সবই বন্ধ, তাই লকডাউনের প্রথম কয়েক মাস সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই হাজির হয়ে যেতেন লাইভ কনসার্ট নিয়ে। ‘‘বিহু উপলক্ষে একটা অনলাইন প্রোগ্রাম করেছিলাম। শ্রেয়া ঘোষাল, শানের মতো শিল্পীদেরও ডেকেছি আমার অনুষ্ঠানে। তবে মঞ্চে গাওয়ার অনুভূতি কি তাতে পাওয়া যায়?’’ বললেন তিনি। এই সময়ে চুটিয়ে গেয়েছেন বিভিন্ন ওয়েব সিরিজ় ও ফিল্মের জন্য। বড় পর্দায় প্লেব্যাক মিস করছেন না? ‘‘অবশ্যই করছি। সিনেমার চার্ম আলাদা। তবে সেটা মনে হয় ভুলতে বসেছি আমরা। এখন সকলে বাড়িতে বসে ফোন/ট্যাবে সব কিছু দেখতে-শুনতে অভ্যস্ত। আমি নিজেও তার বাইরে নই,’’ বললেন শিল্পী। গত তিন-চার মাস গোয়ায় রয়েছেন পাপন। সেখানকার বাড়িতে মোবাইল স্টুডিয়ো সেটআপ তৈরি করে দিব্যি চলছে রেকর্ডিং। পাশাপাশি চলছে তাঁর সন্তানদের অনলাইন ক্লাসও। ‘‘লকডাউনের সময়টা মুম্বইয়েই ছিলাম। তবে সব কিছু অনলাইন হয়ে যাওয়ায় ড্রাইভ করে বারবার গোয়া যাওয়ার চেয়ে সেখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। শান্তিপূর্ণ গ্রাম্য জীবন উপভোগ করছি। বাড়ির দোরগোড়ায় বাইসাইকেলে করে এসে আনাজপাতি বিক্রি করে যাচ্ছে। আসলে গ্রাম্য জীবনই আমাকে বেশি টানে,’’ তৃপ্তি তাঁর কণ্ঠে।

তবে গোয়ার রাস্তাঘাটে, রেস্তরাঁয় পাপনকে দেখলে লোকে ভিড় করে গান শোনার অনুরোধ করবে না, তা হয় নাকি? লাকি আলির ভাইরাল হওয়া ‘ও সনম’ ভিডিয়োর মতোই পাপনকেও মাঝে মাঝে ঘিরে ধরেন ভক্তরা। ‘‘একদিন রেস্তরাঁয় গিয়েছি। গিটার সঙ্গেই ছিল। উপস্থিত অতিথিদের অনুরোধে হঠাৎই জ্যামিং শুরু হয়ে গেল। দারুণ লাগে এই স্বতঃস্ফূর্ত আড্ডাগুলো।’’

Advertisement

মাসকয়েক আগেই বাংলায় ‘নীরবতা দাও গান’ রেকর্ড করেছেন পাপন। মাতৃভাষার পরে বাংলা গানের সঙ্গেই সবচেয়ে বেশি একাত্মবোধ করেন শিল্পী। কিছু নতুন ধরনের গান, গজ়লের কভারের পরিকল্পনা করেছেন লকডাউনে। এই সময়কার কভার গাওয়ার ট্রেন্ড নিয়ে পাপনের বক্তব্য, ‘‘মূল স্রষ্টার প্রতি ট্রিবিউট জানাতেই কভার করা হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, মূল গানের প্রাণ যেন নষ্ট না হয়ে যায়। শুধু জনপ্রিয় হওয়ার জন্য বা ব্যবসার স্বার্থে কভার করাটা ঠিক নয়।’’

সমসাময়িকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বা বলিউড প্লেব্যাকে অরিজিৎ সিংহের একাধিপত্য নিয়ে মোটেই বিচলিত নন পাপন। তাঁর কথায়, ‘‘বলিউডে ট্রেন্ড বারবার পাল্টেছে, আর তা ভালর জন্যই। নতুন মিউজ়িশিয়ানরা দারুণ কাজ করছেন। এখন অপশন এত যে, কোনটা ছেড়ে কোনটা শুনব বুঝতে পারি না।’’ তবে শুধু ফিল্মি গান নয়, নন-ফিল্ম অ্যালবাম, সিঙ্গলস নিয়েও ডুবে থাকেন পাপন। পছন্দের জ়ঁর ফোক আর আপবিট ডান্স নাম্বারস। ‘‘কারণ আমি নিজে নাচতে পছন্দ করি যে,’’ হেসে উঠলেন শিল্পী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement