পরীমণি
সকাল-সকাল বেলা দশটায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৯ নং আদালতে চিত্রনায়িকা পরীমণি উপস্থিত। ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে পরীমণির আনা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমি সহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ ছিল আজ। অসুস্থ শরীর নিয়ে পরীমণি হাজিরা দিলেও কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত জানান, উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ দানের তারিখ ঠিক করেছেন আগামী ১৮ মে। উল্লেখ্য, মামলার বাদী চিত্রনায়িকা পরীমণি বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা।
পরীমণির জীবনে গত বছরের ৮ জুন কী ঘটেছিল? আদালতে সত্যের সন্ধান চলছে। তবে সবার মনে আছে সাংবাদিক সম্মেলনে পরীমণি কাঁদতে কাঁদতে জানিয়েছিলেন, ৮ জুন রাতে পারিবারিক বন্ধু অমি ও ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী জিমিকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার বোট ক্লাবে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে মদ্যপানরত কয়েক জনের সঙ্গে পরীমণির পরিচয় করিয়ে দেন অমি। তাঁদেরই একজন হঠাৎ জোর করে তাঁর মুখে মদের গ্লাস চেপে ধরেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
পরীমণির সেই অভিযোগ প্রথমে গ্রহণ করেনি থানা। এমনটাই দাবি করেছিলেন অভিনেত্রী। এরপর ১৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মা’ সম্বোধন করে ফেসবুকে খোলা চিঠি পোস্ট করেন পরীমণি। সেখানে লেখেন— ‘আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’
এই ঘটনায় বাংলাদেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। ১৪ জুন সাভার থানায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ, পরীমণির পারিবারিক বন্ধু বলে পরিচিত অমি এবং আরও চার জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-প্রচেষ্টা ও হত্যাপ্রয়াসের অভিযোগে মামলা করেন অভিনেত্রী। দ্রুত গ্রেফতার হন নাসির ও অমি সহ পাঁচ জন। তাঁদের কাছ থেকে বিদেশি মদ ও ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পরে নাসিররা জামিনে মুক্ত হয়ে যান।
এর পরই ঘটনাক্রমে পরীমণি নিজেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেফতার হন। সেই মামলাও বর্তমানে বিচারাধীন।
পরীমণির ঘনিষ্ঠজনেরা আশায় আছেন, দুই ক্ষেত্রেই সঠিক বিচার পাবেন লড়াকু এই অভিনেত্রী।