Bollywood

জটিল রোগে ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তি, অতীতের সবচেয়ে দামি নায়িকা সাধনার শেষজীবন কাটে আশা ভোঁসলের ফ্ল্যাটে

ব্যক্তিগত জীবনেও সাধনার কাছে ছয়ের দশক খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৯৬৬ সালে সাধনা বিয়ে করেন পরিচালক আর কে নায়ারকে। তাঁদের বয়সের ব্যবধানের জন্য এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না সাধনার বাবা-মা। কিন্তু পরে মেয়ের জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হন তাঁরা।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ১৬:০৩
Share:
০১ ১৮

পছন্দের অভিনেত্রীর নামে একমাত্র মেয়ের নাম রেখেছিলেন বাবা। তখন আর কে জানত একদিন এই কন্যাই শাসন করবে হিন্দি ছবির দুনিয়া! পরিবারে অভিনয়ের ধারা আগে থেকেই থাকায় এই কেরিয়ারে পা রাখতে সুবিধে হয়েছিল সাধনা শিবদাসানির।

০২ ১৮

অবিভক্ত ভারতের করাচির সিন্ধ প্রদেশে সাধনার জন্ম ১৯৪১ সালের ২ সেপ্টেম্বর। তাঁর কাকা ছিলেন অভিনেতা হরি শিবদাসানি। করিশ্মা-করিনার মা অভিনেত্রী ববিতা হলেন সাধনার খুড়তুতো বোন।

Advertisement
০৩ ১৮

তিন ও চার দশকের জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী তথা নায়িকা সাধনা বসু-র নামে নামকরণ হয়েছিল শিবদাসানির পরিবারের সদ্যোজাত শিশুর। দেশভাগের পরে তাঁদের পরিবার করাচি থেকে চলে এসেছিল তত্কালীন বম্বে শহরে।

০৪ ১৮

ওয়াডালার অক্সিলিয়াম কনভেন্ট স্কুলের পরে সাধনা ভর্তি হন জয় হিন্দ কলেজে। ছোট থেকেই সিনেমা দেখতে ভালবাসতেন তিনি। বড় হয়ে ক্রমে গাঢ় হয় নায়িকা হওয়ার ইচ্ছে। তাঁর অনুপ্রেরণা ছিলেন অভিনেত্রী নূতন।

০৫ ১৮

মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ আসে। ভারতের প্রথম সিন্ধি ছবি ‘আবানা’-তে তিনি অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী শীলা রামানির বোনের ভূমিকায়।

০৬ ১৮

রাজ কপূর-নার্গিসের ‘শ্রী ৪২০’ ছবিতে ‘মুড় মুড় কে না দেখ’ গানে সমবেত নৃত্যশিল্পী ছিলেন সাধনা। তাঁর ছবি প্রকাশিত হয় ফিল্মি পত্রিকায়। সেখানেই তিনি নজর কাড়েন পরিচালক শশধর মুখোপাধ্যায়ের।

০৭ ১৮

নায়িকা হিসেবে সাধনার প্রথম ছবি ‘লভ ইন সিমলা’ মুক্তি পায় ১৯৬০ সালে। সে বছর প্রথম দশটি বক্সঅফিস সফল ছবির মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।

০৮ ১৮

এই ছবিতে সাধনার লুক কিছুতেই পছন্দ হচ্ছিল না পরিচালক আর কে নায়ারের। কারণ সাধনার চওড়া কপাল সব সাজ মাটি করছিল বলে মনে হচ্ছিল তাঁর। তিনি বিখ্যাত হলিউড অভিনেত্রী অর্ড্রে হেপবার্নের একটিস ছবি দেন হেয়ারড্রেসারকে। তারপরই সাধনার কপালে পড়ে গুচ্ছ চুল। যে ফ্রিঞ্জের নাম লোকের মুখে পরে হয়ে যায় ‘সাধনা কাট’। পাশাপাশি, আঁটসাট চুড়িদার-ও ছিল সাধনার স্টাইল স্টেটমেন্ট।

০৯ ১৮

ছয়ের দশকে সাধনার অভিনয়ে একের পর এক ছবি হিট করেছে। ‘পরখ’, ‘হাম দোনো’, ‘আসলি নকলি’, ‘মেরে মেহেবুব’, ‘ওহ কৌন থি’, ‘মেরা সায়া’, ‘ওয়ক্ত’, ‘ইন্তেকাম’, ‘রাজকুমার’, ‘এক ফুল দো মালি’-র মতো ছবির নাম যোগ হয়েছে সাধনার নামের পাশে।

১০ ১৮

‘হাম দোনো’ ছবিতে তাঁর এবং দেব আনন্দের উপর চিত্রায়িত রফি-আশার যুগলবন্দি ‘আভি না যাও ছোড় কর…’ গানটি অনেকের মতে বলিউডের সেরা রোম্যান্টিক সুর।

১১ ১৮

ব্যক্তিগত জীবনেও সাধনার কাছে ছয়ের দশক খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৯৬৬ সালে সাধনা বিয়ে করেন পরিচালক আর কে নায়ারকে। তাঁদের বয়সের ব্যবধানের জন্য এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না সাধনার বাবা-মা। কিন্তু পরে মেয়ের জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হন তাঁরা।

১২ ১৮

বিয়ের পরেও কয়েক বছর চুটিয়ে অভিনয় করেছেন সাধনা। কিন্তু সাতের দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ক্রমশ সরে আসেন অভিনয় থেকে। কারণ নায়িকা ছাড়া পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে তিনি রাজি ছিলেন না।

১৩ ১৮

১৯৭৪ সালে সাধনার পরিচালনায় এবং তাঁর স্বামী প্রযোজনায় মুক্তি পায় ‘গীতা মেরে নাম’। সুনীল দত্তের বিপক্ষে ছবির নায়িকা ছিলেন সাধনা। এই ছবিতেই একক নৃত্য পরিচালক হিসেবে প্রথম কাজ করেন সরোজ খান। ‘পতি পরমেশ্বর’ নামে একটি ছবি প্রযোজনাও করেছিলেন সাধনা। ছবির নায়িকা ছিলেন ডিম্পল কাপাডিয়া।

১৪ ১৮

অভিনয় থেকে সরে যাওয়ার পরে প্রকাশ্যে আসতেন না সাধনা। নিভৃত জীবনে প্রবেশাধিকার ছিল না আলোকচিত্রীদেরও। ক্রমশ রোগও বাসা বাঁধতে থাকে তাঁর শরীরে। ১৯৯৫ সাল থেকে নিঃসন্তান সাধনার সঙ্গী হয় একাকিত্ব। কারণ, প্রায় তিন দশকের দাম্পত্য শেষে সে সময় প্রয়াত হন সাধনার স্বামী, আর কে নায়ার।

১৫ ১৮

অসুস্থতা, একাকিত্বের পাশাপাশি শেষ জীবনে সাধনা কষ্ট পেয়েছেন আর্থিক দিক দিয়েও। শোনা যায়, নিজের কেরিয়ারের সেরা সময়ে মহার্ঘ্যতম নায়িকা সাধনা শেষ জীবনে থাকতেন আশা ভোঁসলের সান্তাক্রুজের ফ্ল্যাটে।

১৬ ১৮

খুড়তুতো বোন ববিতার সঙ্গে কোনওদিনই সম্পর্ক নিবিড় ছিল না। শেষ জীবনেও সাধনার যোগাযোগ ছিল হেলেন, ওয়াহিদা রহমান, নন্দা-র মতো ইন্ডাস্ট্রির ঘনিষ্ঠ বান্ধবীদের সঙ্গেই।

১৭ ১৮

এইচ আই ভি পজিটিভ, ক্যানসার আক্রান্তদের সাহায্যার্থে অন্তরাল থেকে বেরিয়ে এসে ২০১৪ সালে এক ফ্যাশন শো-এ অংশ নিয়েছিলেন সাধনা। গোলাপি শাড়ির সঙ্গে কপালে ছিল আদি অকৃত্রিম ফ্রিঞ্জ। ক্ষীণদৃষ্টি, দুর্বল সাধনাকে হাত ধরে হাঁটতে সাহায্য করেছিলেন রণবীর কপূর।

১৮ ১৮

দীর্ঘ রোগভোগের পরে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর হিন্দুজা হাসপাতালে প্রয়াত সাধনা। শোনা যায়, তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement