সে সময় অক্ষয়কুমার ছিলেন কেরিয়ারের মধ্যগগনে। অন্য দিকে গোবিন্দ কিছুটা কঠিন সময় কাটাচ্ছিলেন। সে রকমই এক সময়ে এক বার পরিচালকের জন্য ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়েছিলেন দুই তারকা।
রাজনীতি ছেড়ে তখন বলিউডে কামব্যাক করেছেন গোবিন্দ। চাইছিলেন কোনও ভাল ছবিতে অভিনয় করে নিজের পুরনো জায়গা ফিরে পেতে। পুরনো বন্ধু ডেভিড ধওয়নের শরণাপন্ন হন গোবিন্দ।
ডেভিডের কথায় গোবিন্দকে ‘সালাম-এ-ইশক’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন সলমন খান। অন্য দিকে, সুনীল শেট্টী নিজে প্রিয়দর্শনের পরিচালনায় ‘ভাগম ভাগ’ ছবিতে যে ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন, সেটি দিয়ে দেন গোবিন্দকে।
সেটাই ছিল প্রিয়দর্শনের পরিচালনায় গোবিন্দর প্রথম কাজ। অক্ষয় তার আগে ‘হেরা ফেরি’ ও ‘গরমমশালা’ ছবিতে কাজ করেছিলেন প্রিয়দর্শনের পরিচালনায়। তাঁদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক ছিল।
ছবিতে একটি গানের দৃশ্যের শুটিং করছিলেন প্রিয়দর্শন। সেখানে হাজির ছিলেন ইউনিটের সবাই। সেটে দেরি করে পৌঁছনোর অভিযোগ গোবিন্দর বিরুদ্ধে বরাবরই ছিল। অন্য দিকে অক্ষয় খুব সময়ানুবর্তী। ফলে শট শুরুর নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ায় তিনি বার বার প্রশ্ন করছিলেন প্রিয়দর্শনকে।
প্রিয়দর্শন এ বার গোবিন্দর সেক্রেটারিকে ফোন করলেন। কিন্তু তিনিও কিছু বলতে পারলেন না। তারকার মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ করা গেল না। গোবিন্দকে খুঁজতে খুঁজতে পেরিয়ে গেল এক ঘণ্টার বেশি সময়।
এই অবস্থায় প্রিয়দর্শন ঠিক করলেন তিনি শুধু অক্ষয়কে নিয়েই শুটিং করবেন। যেই ক্যামেরা চলতে শুরু করল, সেখানে এসে হাজির হলেন গোবিন্দ। মেক আপের পরে তিনি সম্পূর্ণ রেডি তখন।
তাঁকে দেখে মেজাজ হারালেন প্রিয়দর্শন। সবার সামনেই উষ্মা প্রকাশ করে ফেললেন। উত্তরে গোবিন্দ জানান, তিনি কোথাও যাননি। শুটিং সেটেই অপেক্ষা করছিলেন নিজের ভ্যানে। হয়তো প্রিয়দর্শনের সহকারীরা সেখানে ভাল করে খুঁজে দেখেননি।
গোবিন্দ এও স্বীকার করেন, শটের দেরি আছে ভেবে তিনি একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এর পর দুই নায়ককে নিয়েই শট নেন প্রিয়দর্শন। কিন্তু তিনি গোবিন্দকে কটু ভাষায় বলেন, লেট লতিফ স্বভাব তাঁকে ছাড়তে হবে।
গোবিন্দ তাঁকে উত্তর দেন, সেটে দেরিতে আসার জন্য ইতিমধ্যেই তাঁর কেরিয়ারের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। তিনি নিজেকে অনেক শুধরেও নিয়েছেন। এ বার অক্ষয়কুমার বুঝতে পারেন গোবিন্দর উপর ওভার রিঅ্যাক্ট করছেন পরিচালক।
পরে এই ঘটনায় গোবিন্দ বলেন, তিনি অক্ষয়কুমার এবং প্রিয়দর্শনের সঙ্গে প্রথম বার কাজ করছিলেন। তাই ততটা ঘনিষ্ঠতা ছিল না শুটিং ইউনিটের সঙ্গে। ফলে সময় কাটাতেন নিজের ভ্যানেই। সুযোগ পেলেই একটু ঘুমিয়ে নিতেন।
পরে অবশ্য পরিচালক এবং সহঅভিনেতার সঙ্গে গোবিন্দর ভুল বোঝাবুঝি মিটে গিয়েছিল। এরপর তিনি ২০১৪ সালে ‘হলিডে: এ সোলজার ইজ নেভার অব ডিউটি’ ছবিতেও অভিনয় করেন অক্ষয়কুমারের সঙ্গে।