বলিউডের স্টার কিড মানেই কেরিয়ার অভিনয়, এমন ধারণা কিছু ক্ষেত্রে পাল্টে গিয়েছে। সে রকমই একজন ঝনক শুক্ল। প্রতিশ্রুতিমান শিশুশিল্পী হয়েও পরবর্তী কালে ফিরে আসেননি অভিনয়ে।
অথচ ঝনকের পারিবারিক পরিস্থিতি যথেষ্ট প্রস্তুত ছিল অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়ার জন্য। তাঁর বাবা হরিল শুক্ল একজন তথ্যচিত্র পরিচালক। মা সুপ্রিয়া অভিনেত্রী। হিন্দি সিরিয়াল ও সিনেমায় পরিচিত মুখ।
‘পরিণীতা’, ‘লগে রহো মুন্নাভাই’, ‘থ্রি ইডিয়াটস’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে সুপ্রিয়ার অভিনয় নজর কেড়েছে দর্শকদের। পাশাপাশি, সিরিয়াল ‘তেরে লিয়ে’, ‘কুমকুম ভাগ্য’, ‘কুণ্ডলী ভাগ্য’-এও তাঁর কাজ মনে রাখার মতো।
বাবা, মা আর বোনের সঙ্গে ঝনক থাকেন মুম্বইয়ে। তাঁর মা এখনও অভিনয় করেন। মা আর বোনের সঙ্গে ঝনকের সম্পর্ক বন্ধুর মতো। বিভিন্ন পোস্ট সে কথা তিনি জানাতেও ভোলেন না।
ঝনকের জন্ম ১৯৯৬-এর ২৪ জানুয়ারি। শাহরুখ খানের ‘কাল হো না হো’ ছবিতে তিনি ছিলেন জয়া বচ্চনের পালিত মেয়ে জিয়া কপূরের ভূমিকায়। ‘ডেডলাইন: সির্ফ ২৪ ঘণ্টে’ ছবিতে তিনি স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন রজিত কপূর, কঙ্কণা সেনশর্মা এবং ইরফান খানের সঙ্গে।
ঝনকের অভিনয় দেখে তাঁকেই ‘ব্ল্যাক’ ছবির জন্য বেছেছিলেন সঞ্জয় লীলা ভন্সালী। কিন্তু ঝনকের পক্ষে এত বেশি দিন ডেট দেওয়া সম্ভব ছিল না তখন। ফলে ছোট্ট মিশেলের চরিত্রে অভিনয় আর করা হল না। আইকনিক ছবির একটি অংশ হওয়ার সুযোগ অধরাই থেকে গেল।
তবে ঝনক সবথেকে বেশি দর্শকের বৈঠকখানায় পৌঁছে গিয়েছিলেন হিন্দি সিরিয়ালে অভিনয় করে। গত দশকের দু’টি জনপ্রিয় হিন্দি সিরিয়ালে ঝনক ছিলেন অন্যতম শিশুশিল্পী। ‘সোনপরী’ সিরিয়ালে তিনি ছিলেন প্রিন্সি। ‘করিশ্মা কা করিশ্মা’ সিরিয়ালে ঝনকই মূল চরিত্র, করিশ্মা নামের একটি যন্ত্রবালিকা বা রোবট।
কল্পবিজ্ঞানমূলক এই সিরিয়াল ছিল সময়ের থেকে এগিয়ে। সেখানে দেখানো হয়েছিল, একজন বিজ্ঞানী একটি রোবট তৈরি করেছেন। রোবটের নামই করিশ্মা। তাঁর পরিবারের আর কেউ জানে না করিশ্মা একজন রোবট। প্রতি এপিসোডে কোনও না কোনও সমস্যা সামাধান করে পরিবারকে রক্ষা করত যন্ত্রবালিকা করিশ্মা।
শেষে করিশ্মাকে নিজেদের মেয়ে হিসেবেই মেনে নেয় বিজ্ঞানী ও তাঁর স্ত্রী। দেড় বছর ধরে সম্প্রচারিত সফল টিআরপি-র প্রথম সারিতে ছিল এই সিরিয়াল। পাশাপাশি, ‘হাতিম’, ‘গুমরাহ’ নামের দু’টি হিন্দি টিভি সিরিজ এবং মালয়ালম টেলিভিশন সিরিয়াল ‘আলিপঝম’-এ অভিনয় করেছেন ঝনক।
সে দিনের ছোট্ট ঝনক আজ এখন তেইশ বছরের তরুণী। দেড় দশকের বেশি হয়ে গেল তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে নেই। ইতিমধ্যে অভিনয়ে ফেরারও ইচ্ছে নেই বিশেষ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ জনপ্রিয় ঝনক। ইনস্টাগ্রামে নিয়মিত ছবি আপলোড করেন। বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন মুহূর্ত শেয়ার করেন। ইন্টারনেটে তাঁর ফলোয়ারও অনেক। পরিচালক বাবা এবং অভিনেত্রী মায়ের মেয়ে নিজেও ইন্ডাস্ট্রিতে কেরিয়ার করবেন কিনা কিছু বলেননি এখনও। আপাতত নিজের পড়াশোনা এবং জীবন উপভোগ করছেন।