Oindrila Sen

Abhishek Chatterjee death: দোলের দিন মেসেজ করেছিলেন, সেই অভিষেকদা আজ আর নেই, মানুষের জীবন কত ঠুনকো: ঐন্দ্রিলা

ধারাবাহিকে বাবা-মেয়ের অভিনয় করতে করতে কখন যে সত্যিই আমাদের সম্পর্কটা সে রকমই হয়ে গেল বুঝতে পারিনি।

Advertisement
ঐন্দ্রিলা সেন

ঐন্দ্রিলা সেন

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২২ ১৪:৫৪
Share:
অভিষেকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা জানালেন ঐন্দ্রিলা।

অভিষেকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা জানালেন ঐন্দ্রিলা।

অভিষেকদার (চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে আমার প্রথম কাজ ‘সকাল সন্ধ্যা’ ছবিতে। তখন আর কতই বা বয়স আমার! এই ১০ বা ১১ হবে। এর পর আর দীর্ঘ দিন কোনও যোগাযোগ ছিল না ওঁর সঙ্গে। কাট টু ২০১৮। আবার দেখা হল আমাদের। এ বার ‘ফাগুন বউ’-এর সেটে। অভিষেকদাকে দেখে খুব খুশি হয়েছিলাম। এ রকম বড় মাপের অভিনেতার সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়ে কে খুশি না হয়ে থাকতে পারে! অভিষেকদাও আমার দিকে তাকাচ্ছিলেন। বোঝার চেষ্টা করছিলেন আমাকে আগে কোথাও দেখেছেন কি না। অপেক্ষা না করে আমিই তখন এগিয়ে গিয়েছিলাম। বলেছিলাম, ‘‘তোমায় একটা কথা বলব?’’ উনিও খুব আন্তরিক ভাবে বলেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ বল বল।’’ তখনই আমি শুধু ‘সকাল সন্ধ্যা’র নাম নিতেই বাকিটা মনে করে ফেলেছিলেন তিনি। হাসতে হাসতে বলেছিলেন, ‘‘সেই ছোট্ট মেয়েটা এখন নায়িকা হয়ে গেল। তার মানে আমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি!’’

এ ভাবেই শুরু হয়েছিল আমাদের দ্বিতীয় অধ্যায়। ধারাবাহিকে বাবা-মেয়ের অভিনয় করতে করতে কখন যে সত্যিই আমাদের সম্পর্কটা সে রকমই হয়ে গেল বুঝতে পারিনি। তখন আমার যত আবদার, সব অভিষেকদাকে ঘিরে। মাঝেমধ্যে ওঁর সঙ্গে এত ইয়ার্কি করতাম যে আমার মা আমাকে ধমক দিতেন। আর অভিষেকদা হেসে উঠে বলতেন, ‘‘এই বয়সের ছেলেমেয়েরা তো একটু আধটু মজা করবেই।’’ এ ভাবেই আমাকে সব সময় প্রশ্রয় দিতেন তিনি। কালিম্পংয়ে যখন আমরা ধারাবাহিকের শ্যুট করতে গেলাম, তখনও কত হইহুল্লোড়! আমি, বিক্রম, অভিষেকদা, আমার মা— সবাই মিলে ওই ঠাণ্ডায় জমিয়ে আড্ডা দিতাম। এক দিন টানা শ্যুটের পর অভিষেকদা নিজের ঘরে গিয়েছিলেন বিশ্রাম করতে। আমি জোর করে ওঁকে টেনে এনেছিলাম আমাদের আড্ডায়। উনিও বাধ্য ছেলের মতো চলে এসেছিলেন আমার সঙ্গে। ইন্ডাস্ট্রির ক’জনের থেকে এমন আন্তরিকতা পাওয়া যায়? জানা নেই। সেটে কখনও মনে হতে দেননি যে আমি জুনিয়র। হাসিখুশি স্বভাবের মানুষটা মাতিয়ে রাখতেন আমাদের।

Advertisement

ধারাবাহিক শেষ হল। কিন্তু আমাদের সম্পর্ক রয়ে গেল। অভিষেকদার বাড়ির যে কোনও অনুষ্ঠানে আমার ডাক পড়ত। মা আর অঙ্কুশকেও (হাজরা) সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার আদেশ পেতাম। দোলের দিনও আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস মেসেজ করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘ভাল থাকিস’’। আমাকে ভাল থাকতে বলে অভিষেকদা নিজে চলে গেলেন। মানুষের জীবন কত ঠুনকো! যে মানুষটা কিছু দিন আগে আমাকে মেসেজ করলেন, বুধবার শ্যুটিং করলেন, যাঁর শুক্রবারও হয়তো কল টাইম ছিল, তিনি আজ আর নেই। ভাবতে পারছি না। বিশ্বাস হচ্ছে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement