নিমাই ঘোষ। ফাইল চিত্র
বিশিষ্ট আলোকচিত্রী নিমাই ঘোষ মারা গেলেন। বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় নিজের বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন নিমাই ঘোষ। বয়স হয়েছিল ৮৬। বাড়িতে তখন ছিলেন স্ত্রী আর ভাই। ডিসেম্বর থেকেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। “শরীর ক্রমশ দুর্বল হয়ে আসছিল।গত তিন দিন খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। আজ কথা ছিল রাইলস টিউব দিয়ে খাওয়ানোর। সে সময়টা দিলেন না উনি।’’ জানালেন নিমাই ঘোষের চিকিৎসক কৌশিক ঘোষ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোকবার্তায় জানিয়েছেন,“বিশিষ্ট আলোকচিত্রী নিমাই ঘোষের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। দু দশকের বেশি সময় ধরে তিনি বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের বিভিন্ন চলচ্চিত্রে আলোকচিত্রী হিসাবে অসামান্য কাজের নজির রেখেছেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ‘মানিক দা: মেমোয়ার্স অব সত্যজিৎ রে’। পদ্মশ্রী সহ বহু সম্মানে ভূষিত নিমাই ঘোষের প্রয়াণে ফটোগ্রাফি জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল।আমি নিমাই ঘোষের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি”।
বুধবার দুপুরে প্রয়াত আলোকচিত্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। দেশে লকডাউনের জন্য মুম্বইবাসী তাঁর ছেলে সাত্যকি ঘোষ বাবার কাছে শেষ সময়ে থাকতে পারলেন না।
প্রখ্যাত এই আলোকচিত্রী দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। আন্তর্জাতিক মহলে তিনি 'রে'স লেন্সম্যান' নামেও পরিচিত ছিলেন। ১৯৩৪ সালে নিমাই ঘোষের জন্ম। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা নিমাই ঘোষ স্থিরচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন গুপী গাইন বাঘা বাইন চলচ্চিত্রে। এরপর ১৯৬৯ থেকে দীর্ঘ প্রায় দু’দশক স্থিরচিত্রী হিসেবে তাঁর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৯১ সালে আগন্তুক চলচ্চিত্রেও তিনি স্থিরচিত্র সংগ্রাহক ছিলেন।
আরও পড়ুন: গতিই শেষ পর্যন্ত হাল ধরে রাখে
২০০৭ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার কমিটির জুরি সদস্যও ছিলেন তিনি। ২০১০ সালে তাঁকে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়। দীর্ঘ ২৫ বছরের চিত্রগ্রাহক জীবনে নিমাই ঘোষ ৯০ হাজারের বেশী ছবি তুলেছেন।
তাঁর মৃত্যু সংবাদে চলচ্চিত্র মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিশিষ্ট সিনে ব্যক্তিত্বদের অনেকেই ব্যক্তিগত ভাবে শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বাসভবনে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে লকডাউনের জটিল পরিস্থিতিতে সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানিয়ছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ‘যে কোনও পরিস্থিতিতে ইতিবাচক দিক খুঁজি ’