মকরন্দ দেশপাণ্ডে
অতিমারির সময়ে নিজের সবচেয়ে পছন্দের মাধ্যমটি নিয়েই চর্চা করেছেন অভিনেতা মকরন্দ দেশপাণ্ডে, তা হল নাটক। প্রথমে যে কোনও একনিষ্ঠ থিয়েটারকর্মীর মতো তিনিও মনে করতেন, নাটকের প্রকৃত মাধ্যম হল মঞ্চ। তবে ধীরে ধীরে ভার্চুয়ালের মহিমা বুঝতে পেরেছেন শিল্পী। মকরন্দের আইকনিক নাটক ‘স্যর স্যর সরলা’ সম্প্রতি টেলিভিশনের পর্দায় সম্প্রচারিত হল। অনেক বেশিসংখ্যক দর্শকের কাছে এই নাটককে পৌঁছে দিতে পেরে খুশি মকরন্দ। তা ছাড়া নাটকটির ডকুমেন্টেশনও জরুরি ছিল বলে মনে করেন অভিনেতা।
২০০১ সাল থেকে হয়ে আসা এই নাটকে প্রথম দিকে অভিনয় করতেন অনুরাগ কাশ্যপ, সোনালি কুলকার্নিরা। প্রায় ২০ বছর ধরে মঞ্চস্থ হয়ে আসা নাটকটির মুখ্য চরিত্রে এখন অহনা কুমরা এবং মকরন্দ নিজে। নাটকের পাশাপাশি ছবি এবং ওটিটি-র কাজও চুটিয়ে করছেন তিনি। আগামী ৮ জানুয়ারি মুক্তি পাবে রামগোপাল বর্মার ‘টুয়েলভ ও’ক্লক’, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন তিনি। আসছে ‘দাগড়ি চওল’-এর সিকুয়েলও। এ ছাড়া হাতে রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক প্রজেক্ট। লকডাউনেই মুক্তি পেয়েছিল ‘সড়ক টু’, যেখানে প্রধান খল চরিত্রে ছিলেন মকরন্দ, একেবারে অন্য লুকে। ‘‘প্রথম বার নিজের লুক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করলাম ওই ছবিতে,’’ স্বীকারোক্তি তাঁর। অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর পূজা ভট্ট চেয়েছিলেন বলে দাড়ি-গোঁফ কেটে ফেলে লম্বা চুলের উইগ পরতে হয়েছিল মকরন্দকে। বক্স অফিসে ‘সড়ক টু’র ভরাডুবি নিয়ে মকরন্দের বক্তব্য, ‘‘ওই সময়ে ঘৃণা এত বেশি বেড়ে গিয়েছিল যে, ছবিটার প্রতি অবিচার হল। তবে নেগেটিভ পাবলিসিটির ফলে ট্রেলারটি বহু মানুষ দেখেছিলেন! আমার তো ভট্ট সাহাবের (মহেশ ভট্ট, পরিচালক) সঙ্গে কাজ করে দারুণ লেগেছে।’’
কম বাজেটের ছবি মুক্তির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বা নতুন প্রতিভাদের সুযোগ দেওয়ার মঞ্চ হিসেবে ওটিটি-কে এগিয়ে রাখেন মকরন্দ। তবে তা বড় পর্দার পরিবর্ত হতে পারে না বলেই মত তাঁর। দেশে অস্থির রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়েও বিচলিত শিল্পী। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেড়ে চলা ঘৃণা, ধর্মের নামে ভেদাভেদের রাজনীতি, বিরোধীদের কণ্ঠরোধ ভাবিয়ে তোলে তাঁকে। ‘‘যত দিন আর্ট বেঁচে আছে, ভরসা আছে। কিন্তু শিল্পীদের উপর থেকেও এখন লোকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। বলিউড কত খারাপ, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া করতেই গোটা লকডাউন চলে গেল!’’ বললেন মকরন্দ।