‘ওহ! মাদার’ ওয়েব সিরিজের একটি দৃশ্য।
দিয়া ও সৌরভ এই প্রজন্মের প্রতিনিধি। ড্রাগ নিতেও অভ্যস্ত। ‘ওহ! মাদার সিজন ওয়ান’-এ দর্শক দেখেছেন তাদের। প্রথম সিজনে দিয়া ও সৌরভ অপরিকল্পিতভাবে জন্ম দেয় এক বাচ্চার। এবার আসছে দ্বিতীয় সিজন। দ্বিতীয় সিজনে বাচ্চাকেনিয়ে পরিবারে কী ঘটছে সেটাই গল্পের অন্যতম ভরকেন্দ্র।সৌরভের দুই বন্ধু পাবলো এবং ইজে। ইজে ড্রাগ ডিলার। সে কে, কোথা থেকে এসেছে সেটা প্রথম সিজনে জানা যায়নি। সেকেন্ড সিজনে জানা যাবে পাবলোর অতীত।পাবলোরএকটা গল্প আছে, আছে একটা লাভ স্টোরি। লাভ স্টোরি নাকি হেট স্টোরি? বোঝা যাবে ‘ওহ! মাদার সিজন টু’-তে।
কাজটা করে কেমন লাগলো? পরিচালক সাকেত বন্দ্যোপাধ্যায় শেয়ার করলেন, “খুবই ভাল। প্রথম সিজনের থেকে দ্বিতীয় সিজনেস্কেল আপ অনেক বেশি। আমরা অনেকগুলো লোকেশনে গিয়ে শুট করেছি। আমার খুব ইচ্ছে ছিল একটা ড্রাগ ট্রিপ সিরিজ বানানোর। সেটা এবার পূরণ হল। দ্বিতীয় সিজনটা একটা ড্রাগ ট্রিপ ফিল্ম। যেমন ‘পাইনঅ্যাপেল এক্সপ্রেস’। আমাদের দেশে সেভাবে ড্রাগ ট্রিপ ফিল্ম হয়নি। ‘গোয়া গন’ বলে একটা ফিল্ম হয়েছে। যদিও সেটা জম্বি ফিল্ম। কিন্তু ড্রাগ ট্রিপ ফিল্মের মেটিরিয়ালও ছিল।”
পরিচালক সাকেত বন্দ্যোপাধ্যায়
ড্রাগ ট্রিপ ফিল্ম করার ইচ্ছে কেন হল? সাকেত বললেন, “নেটফ্লিক্স, অ্যামাজনে ড্রাগ ফিল্ম, ট্রিপ ফিল্ম দেখতে দেখতে মনে হয় বাংলায় কেন এরকম ফিল্ম করব না?কিন্তু অনেকে ভাবলেও করে না। মনে করে, অ্যাপারেন্টলি অডিয়েন্স রিসেপটিভ হবে না।”
দর্শক এরকম একটা ড্রাগ ফিল্ম সিরিজ দেখবেন বলে মনে হয়? সাকেতের উত্তর: “যদি ইংরেজিতে ড্রাগ ফিল্ম দেখতে পারি তো বাঙালি হয়ে বাংলায় ড্রাগ ফিল্ম দেখতে পারবো না কেন? তাছাড়া পুরো ফিল্মটা হাসির, পুরো ফিল্মটা একটা অদ্ভুত গল্প। তবে হ্যাঁ, ইট ইজ অ্যান এক্সপেরিমেন্ট, যেহেতু আগে কেউ বাংলায় ড্রাগ ফিল্ম করেনি।”
শিপ্রার চরিত্রে বিদীপ্তা চক্রবর্তী
বিদীপ্তা চক্রবর্তীর চরিত্রর নাম শিপ্রা, নায়কের মা। তিনি শেয়ার করলেন, “দুটো সিজনেরই স্ক্রিপ্ট খুব ভাল লিখেছে সাকেত। এখানে আমার চরিত্রটা এমন যে এরকম চরিত্রে সচরাচর আমাকে কেউ দেখে না। খুবই আধুনিকমনস্ক মহিলা। কিন্তু ছেলের নেশা করা একদম সহ্য করতে পারে না।”
ড্রাগ সিরিজ কতটা নেবেন বাঙালি দর্শক? বিদীপ্তা আশাবাদী, “যেগুলো আমরা টেলিভিশন বা ছবিতে করতে পারতাম না সেরকম অনেক বিষয় নিয়েই কাজ হচ্ছে ওয়েব সিরিজে। সেই মার্কেটটা খুলে গেছে। ফার্স্ট সিজন দর্শকের ভাল লেগেছিল। আড্ডা টাইমস-এর সাবস্ক্রিপশনও বেড়েছিল। খুবই ভাল রেসপন্স বলেই তো সেকেন্ড সিজন হচ্ছে। আমার ধারণা সেকেন্ড সিজনও দর্শকের ভাল লাগবে।”
অভিনেতাদের বিষয়ে আপনি স্যাটিসফায়েড? সাকেত বললেন, “বিদীপ্তাদি আনবিলিভেবল। আমার কাছে শ্রেষ্ঠ অভিনেতাদের মধ্যে একজন। আগের সিজনেও করেছিলাম, এই সিজনেও শুট শুরুর আগে তিনমাস ওয়ার্কশপ করেছি। তো তিনমাস ওয়ার্কশপ করার পর শুটিং ফ্লোরে গিয়ে আর কিছু বলতে হয় না। শুটিং ফ্লোরে টাইম নেবে ডিওপি। অ্যাক্টররা নয়। আমি এটাতেই বিশ্বাস করি। শুটিং ফ্লোরে যাওয়ার আগে অ্যাক্টরদের জেনে নেওয়া উচিত ফ্লোরে গিয়ে এগজ্যাক্টলি কী করতে হবে। সেজন্য আমার স্যাটিস্ফায়েড না হওয়ার কোনও স্কোপ নেই।”
সেকেন্ড সিজনে দিয়া কতটা পাল্টালো? দিয়ার চরিত্রাভিনেতা বিবৃতিচট্টোপাধ্যায় খুব বেশি ভাঙলেন না, “সেকেন্ড সিজনে দিয়া অনেকটা ম্যাচিওর হয়েছে, নিজের কেরিয়ার নিয়ে নিজের পড়াশোনা নিয়ে। তবে বাচ্চার দায়িত্ব সে খুব একটা নেয় না। বাকিটা তো দেখলে বোঝা যাবে।”
টিম ‘ওহ! মাদার সিজন টু’
আর সৌরভ? সৌরভের চরিত্র অভিনেতা অনির্জিৎ হোর রায় জানালেন, “সিজন ওয়ানে সৌরভের ক্যারেক্টারটা অনেক সিম্পল ছিল। সিজন টু-তে অনেক বেশি কিছু হয়। এখানেও সৌরভ আগের মতোই একটু ক্যাবলা, একটু ইন্ডিসাইসিভ। বিপদে পড়লে কনফিউজড হয়ে যায়। কিন্তু ওর বন্ধুবান্ধব ওকে হেল্প করার জন্য সবসময় আছে। পাবলো আছে, ইজে আছে। ওর মেয়ে আছে, আশা। ওর এখন একটা জব আছে, একজন বস আছে।”
আপনার মা (সুদেষ্ণা রায়) ফিল্মে ইয়ং জেনারেশনের গল্প বলেন। আপনিও বলছেন এই প্রজন্মের গল্প। সাকেত বললেন, “হ্যাঁ। এই ব্যাপারটা আমাদের একরকম। ফ্রেশ অ্যাক্টর, ফ্রেশ পিপল, ওয়ার্কশপিং, এই পুরো ব্যাপারটা মায়ের কাছ থেকেই এসেছে। যদিও আমার আর মায়ের ফিল্ম মেকিং পারস্পেক্টিভ একেবারে আলাদা।”
আরও পড়ুন- কলকাতার সব্যসাচী আর ঢাকার সুবর্ণার বন্ধুতা
এই সিজনের অন্য অভিনেতারা হলেন শাম্ব মুখোপাধায়, বাবলা ভট্টাচার্য, রোশনি ভট্টাচার্য, একাভলি খান্না, অনমিতা সেন, ঈশান ভাসিন, সূর্য কর, ডিউক বসু প্রমুখ।
বাংলা ও হিন্দিতে এই ওয়েব ফিল্মসাতটি এপিসোডে দেখা যাচ্ছে শুক্রবার, ৩০ অগস্ট থেকে, আড্ডা টাইমস ওয়েব প্ল্যাটফর্মে।