ঘনঘন বিতর্কের কেন্দ্রেও এসেছেন নওয়াজ
‘বলিউড’ নামটাই বদলে দিতে চান তিনি। পশ্চিমে হলিউড আছে বলেই ভারতীয় সিনেমার পীঠস্থানের নাম বলিউড হবে কেন? ‘হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি’ও তো হতে পারে! ভারতীয় অর্থনৈতিক সম্মেলনে এসে এমনটাই বললেন অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী। বললেন, হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে আসা ইদানীং গ্রামগঞ্জের ছেলেমেয়েদের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁরা হয়তো ভাল অভিনয় করেন, কিন্তু কিছু যে বুঝতেই পারছেন না! অধিকাংশ সংলাপ ইংরেজিতে। পরিচালক কথাও বলছেন ইংরেজিতে। নওয়াজের সপাট উক্তি, ‘‘এ রকম করলে কী করে হবে? অর্ধেক স্ক্রিপ্ট বুঝে কী আর অভিনয় করা যায়? ভাষার সমস্যা বড্ড বেশি চোখে পড়ছে মুম্বইয়ে।’’
মুজফ্ফরনগরের এক চিলতে গ্রাম বুধানা। সেখান থেকেই অভিনয়ের জগতে এসেছিলেন সাদামাঠা চেহারার নওয়াজউদ্দিন। নাটকের প্রতি তাঁর ভালোবাসাই এক দিন তাঁকে এই পেশায় টেনে আনে। আজ বলিউডে নওয়াজের অবস্থান অন্যান্য অনেক নামী-দামি তারকার কাছেই ঈর্ষনীয়। শোনা যায়, ২০০টি স্ক্রিপ্টের প্রস্তাব এলে তার মধ্যে মোটে ৫টি বেছে নেন অভিনেতা!
‘লাঞ্চবক্স’ এর মতো ছবি কিংবা ‘সেক্রেড গেমস’-এর মতো ওয়েব সিরিজেই নিজেকে মেলে ধরতে পছন্দ করেন নওয়াজ। বিষয়বস্তুর গভীরতা খুব গুরুত্বপূর্ণ তাঁর কাছে। কাজের জায়গায় দেখনদারি কিংবা ভাসাভাসা ধারণা দেখলে বিরক্তি আসে। ‘বদলাপুর’-এর অভিনেতা জানান, কম কাজ করবেন তবু ভাল, কিন্তু স্রেফ পয়সার পিছনে ছুটে যে কোনও ছবি-সিরিজে জড়াবেন না। এমন সোজাসাপটা বক্তব্যের জন্যই তাঁকে সমীহ করে চলে টিনসেল নগরী।
ঘনঘন বিতর্কের কেন্দ্রেও এসেছেন নওয়াজ। তবু পরোয়া নেই অভিনেতার। শুক্রবার অর্থনৈতিক সম্মেলনে তাই স্পষ্টই বললেন, চিত্রনাট্য হিন্দিতে লেখা হোক, দেবনাগরী হরফে। রোমান ইংরেজিতে নয়। এতে চরিত্রগুলো স্পষ্ট হবে অভিনেতাদের কাছে। যাঁরা আজও নিজের ভাষায় কথা বলে গর্ব বোধ করেন, হঠাৎ ইন্ডাস্ট্রিতে এসে হীনমন্যতায় ভুগবেন কেন? কাজটাও ভাল হবে এতে। কারণ শিক্ষিত মানুষ মাত্রেই ইংরেজি শিক্ষিত নয়!