ক্যানসারে আক্রান্ত নভজোৎ সিংহ সিধুর স্ত্রী নভজোৎ কউর। — ফাইল চিত্র।
স্বামী নভজোৎ সিংহ সিধু জেলবন্দি। এ দিকে কর্কটরোগে আক্রান্ত স্ত্রী নভজোৎ কউর। দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্যানসার ধরা পড়েছে তাঁর। এই খবর সমাজমাধ্যমের পাতায় সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন নভজোৎ কউর। একটি টুইট করে তিনি লেখেন, ‘‘বিনা অপরাধে উনি জেল খাটছেন। ওঁর জন্য বাইরে আমি অপেক্ষা করছি। জেলে উনি যে কষ্টে আছেন, আমি বাইরে হয়তো তার থেকেই বেশি কষ্টে আছি।’’
২০২২ সালের মে মাস থেকে জেলে রয়েছেন প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটার নভজোৎ সিংহ সিধু। ১৯৮৮-এর ২৭ ডিসেম্বর পটিয়ালার রাস্তায় গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে গুরনাম সিংহ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন সিধু ও তাঁর বন্ধু রুপিন্দ্র সিংহ সান্ধু। অভিযোগ, গুরনামকে গাড়ি থেকে জোর করে টেনে বার করে মারধর করেন তাঁরা। ওই ঘটনার কয়েক দিন পরে মারা যান গুরনাম। ৩৪ বছরের পুরনো একটি অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় সিধুর এক বছর জেলের সাজা ঘোষণা করে শীর্ষ আদালত। তখন থেকেই জেলে তিনি। সম্প্রতি টুইটারে নিজের ক্যানসার ধরা পড়ার কথা জানান সিধুর স্ত্রী নভজোৎ কউর। এক টুইটে উনি লেখেন, ‘‘তোমার জন্য অপেক্ষা করেছি। কিন্তু তুমি ন্যায়বিচার পাওনি।
সত্য ক্ষমতাশীল, কিন্তু তা প্রমাণ করতে করতেই সময় চলে যায়। এটাই কলিযুগ।’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো, আমি আর অপেক্ষা করতে পারব না। এটা স্টেজ ২ ক্যানসার। আমাকে অস্ত্রপোচার করাতে হবে। এটাই বোধহয় ভগবানের ইচ্ছা, কাউকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।’’ কঠিন সময়ে স্বামীকে পাশে না পাওয়ায় নভজোৎ কউরের টুইটের ছত্রে ছত্রে হতাশার ছাপ।
৩৪ বছর পুরনো ওই মামলায় নিম্ন আদালতে ছাড়া পেয়ে গেলেও ২০০৬-এ পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের রায়ে অনিচ্ছাকৃত খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন সিধু। হাইকোর্টের রায়ে তাঁর তিন বছরের কারাদণ্ড হয়। পরের বছর সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সিধু। ২০১৮-র গোড়ায় সেই মামলার রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তাতে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের সেই রায় বাতিল করে সিধুর এক হাজার টাকার জরিমানা হয়। এর পর অমৃতসর কেন্দ্র থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে মন্ত্রীও হন তিনি। সেই বছরই সুপ্রিম কোর্টে ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করে গুরনামের পরিবার। সেই আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের রিভিউ বেঞ্চ পুনর্বিচারের নির্দেশ দেয়। পটিয়ালা কোর্ট প্রমাণের অভাবে মুক্তি দিলেও ১৯ মে শীর্ষ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন সিধু।