ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির এবং বুদ্ধিমান অভিনেতারাও এমন কিছু কথা বলে ফেলেন যা অনুরাগীদের আঘাত দেয়। কখনও আবার ইচ্ছাকৃত বিতর্কিত কথা বলে প্রচারের আলোয় থাকতে চান তারকারা।
নাসিরুদ্দিন শাহ বলিউডের প্রথম সারির অভিনতা। কিন্তু এক বার তিনি এক সাক্ষাৎকারে কিছু বেফাঁস মন্তব্য করে বসেছিলেন। যা নিয়ে বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাঁকে।
ওই মন্তব্যের জন্য পরে সকলের কাছে ক্ষমাও চাইতে হয়েছিল। ঘটনাটি ২০১৬ সালের। এক সাক্ষাৎকারে সাতের দশকের ছবি এবং অভিনেতাদের নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি কী, তা জানতে চাওয়া হয়।
সাতের দশক মানেই রাজেশ খন্না। একের পর এক সুপারহিট ছবি অনুরাগীদের উপহার দিয়েছেন রাজেশ খন্না।
সাফল্যের শিখরে পৌঁছে গিয়েছিলেন ওই সময়। স্টারডম এতটাই ছিল যে তাঁকে এক ঝলক দেখার জন্য বাড়ির সামনে দিন রাত অনুরাগীদের ভিড় লেগেই থাকত। শ্যুটিং সেটেও পৌঁছে যেতেন অনুরাগীরা।
নাসিরুদ্দিন সেই তারকাকে নিয়েই বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি রাজেশকে মাঝারি মাপের অভিনেতা বলে বসেন।
নাসিরের দাবি, রাজেশের নাকি অভিনয়ে নমনীয়তার অভাব ছিল। সমস্ত রকমের অভিনয় তিনি পারতেন না এবং তাঁর ছবিগুলির মধ্যেও বৈচিত্র কম ছিল।
সাক্ষাৎকার সামনে আসার পরই ঘোর সমালোচনা শুরু হয় তাঁকে নিয়ে। রাজেশের অনুরাগীরা একের পর এক টুইটে বিদ্ধ করতে শুরু করেন নাসিরুদ্দিনকে।
এমনকি ইন্ডাস্ট্রির একাংশও নাসিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে চলে যান এবং তাঁর মন্তব্যের সমালোচনা করেন।
ওই ঘটনার পর সেলিম খান একাধিক টুইট করেছিলেন। তিনি সলমনের প্রসঙ্গ টেনে এনেও নাসিরুদ্দিনকে আক্রমণ করেন।
সেলিমের মতে, তাঁর ছেলে সলমনের স্টারডমও সাতের দশকের রাজেশের স্টারডমের কাছে নস্যি। সলমনের বাড়ির বাইরে আজ যত সংখ্যক অনুরাগী ভিড় জমান তার কয়েক গুণ বেশি ভিড় রাজেশের বাড়ির সামনে হত।
নাসিরুদ্দিনকে আক্রমণ করে টুইট করে টুইঙ্কল খন্নাও। এক জন মৃত ব্যক্তিকে সম্মান না দেওয়াটাই মাঝারি মানের মানসিকতার পরিচয়, টুইটে এটাই ছিল তাঁর বক্তব্য।
একের পর এক টুইটের খোঁচায় শেষ মুখ খুলতে বাধ্য হন নাসিরুদ্দিন। রাজেশের সমস্ত অনুরাগীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি।
তিনি নিজের মন্তব্য শুধরে নিয়ে বলেন, মাঝারি মাপের বলতে তিনি স্পষ্ট করে রাজেশ খন্নার অভিনয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি বা তুলতে চাননি।
তিনি নাকি সাতের দশকে ইন্ডাস্ট্রির কার্যকলাপকে মাঝারি মানের বলতে চেয়েছিলেন। তাঁর কথার ভুল ব্যাখ্যাও হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
অনিচ্ছাকৃত এই আঘাতের জন্য রাজেশের সমস্ত অনুরাগী বিশেষ করে টুইঙ্কল এবং ডিম্পলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি।
রাজেশ খন্না ছিলেন ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সুপারস্টার। স্টারডম আসলে কী সেটা রাজেশ খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন।
রাজেশের প্রেমে পাগল হয়েছিলেন মহিলা ভক্তেরা। তাঁকে এক ঝলক দেখার জন্য গাড়ির সামনে লাইন পড়ে যেত মহিলাদের। অনেকেই নাকি তাঁর ছবির সঙ্গে বিয়েও করে নিযেছিলেন। ২০১২ সালে মুম্বইয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।